নিজস্ব প্রতিনিধি— কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় নাম উঠে আসছে সুনীল ছেত্রীর৷ সুনীল ছেত্রীর কল্লোলিনী কলকাতা থেকে ফুটবলকে বিদায় জানাবেন৷ তাই সুনীলের প্রতি আলাদা আবেগ তৈরি হয়েছে বাংলার ফুটবলে৷ তবে এটা ঠিক, কলকাতা ময়দানে সুনীল সেইভাবে নিজেকে পরিচিত করতে না পারলেও তাঁর খেলার গুণগত দক্ষতা বড় জায়গায় পৌঁছে গেছে৷ কলকাতায় বেশিদিন খেলেননি, কিন্ত্ত বড় ক্লাব বলতে ফুটবলারদের কাছে যা বোঝায়, তা সুনীল অনুভব করেছিলেন দিল্লি থেকে যখন কলকাতায় মোহনবাগানে খেলার জন্য নিজের নামটা লিখিয়েছিলেন৷ মোহনবাগানের মতো ঐতিহ্যশালী ফুটবল ক্লাবে নিজের নামটা লিখতে পারলে সব ফুটবলাররা গর্ব অনুভব করেন৷ তা থেকে ব্যতিক্রম নন সুনীল৷ খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলেও৷ তারপরে চলে গিয়েছেন ভিনরাজ্যে৷ কখনও চেন্নাই, কখনও গোয়া, না হয় বেঙ্গালুরুতে৷ তবে বেঙ্গালুরুতে ফুটবল জীবনে সবচেয়ে বেশি সময়টা কাটিয়েছিলেন সুনীল ছেত্রী৷ ক্লাব ফুটবলে তিনি সেইভাবে সফল না হলেও ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন সুনীল ছেত্রী৷ আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁর গোলের সংখ্যাকে তারিফ করতেই হবে৷ অর্থাৎ ফুটবলের প্রতি তাঁর যে আনুগত্য, ভালোবাসা, তা উজাড় করে দিতেই চাইছেন বিদায়ী ম্যাচে কলকাতাতেই৷ কলকাতা ফুটবল প্রেমীদের আবেগ এবং আন্তরিকতাকে তিনি হাতিয়ার করে বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাই পর্বের খেলায় কুয়েতের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে চান৷
আগামী ৬ মে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের এই খেলায় সুনীল ছেত্রী ভারতের জার্সি গায়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন কুয়েতের বিরুদ্ধে৷ এতদিন ভারতীয় দলের প্রশিক্ষণ শিবির চলছিল ভুবনেশ্বরে৷ কোচ ইগর স্টিম্যাক অত্যন্ত আশাবাদী ভারতীয় দলের ভালো ফল নিয়ে৷ তিনিও বিশ্বাস করেন সুনীলও চেষ্টা করবেন অধিনায়ক হিসেবে এই খেলায় বাজিমাত করতে৷ অপেক্ষায় রয়েছেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা৷ তাই বিদায়ী ম্যাচে অনেকেই বিশ্বাস করছেন কলকাতা শহরের রাজপথ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে গিয়ে মিশবে৷ বুধবার সকালে কলকাতা বিমানবন্দরে পা রেখেছেন সুনীল ছেত্রীরা৷ সঙ্গে কোচ স্টিম্যাক ও অন্যান্য ফুটবলাররাও পৌঁছে গেছেন৷ আগামী কয়েকটা দিন কলকাতাতেই প্রস্ত্ততি শিবির করবেন ভারতীয় দল৷ কুয়েতকে হারাতে পারলে তৃতীয় রাউন্ডে ওঠার একটা সম্ভাবনা রয়েছে৷ সুনীলদের অভ্যর্থনা জানাতে হাজির ছিলেন বিমানবন্দরে বেশকিছু ফুটবলপ্রেমী৷ লম্বা ব্যানারে সুনীলের প্রতি অভিনন্দন জানাতে ভুল করেননি৷ দেখা গেল কয়েকজন ফুটবলপ্রেমীর সঙ্গে সুনীল ছেত্রী নিজস্বী তুললেন৷ সুনীল হাসতে হাসতে বাসে উঠলেন৷ সামনের সিটে বসে দাঁড়িয়ে থাকা ফুটবল সমর্থকদের অভিনন্দন জানাতে তিনিও হাত নাড়লেন৷ আগামী ৬ জুন আইএফএ’র তরফ থেকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে৷ মাঠে থাকবেন সুনীল ছেত্রীর মুখোশ পরিহিত সমর্থকরা৷ সারা মাঠ ঘিরে ফেলা হবে সুনীলের ছবি ও পোস্টার দিয়ে৷ কথা আছে আকাশ থেকে পুষ্পবৃষ্টি করার এবং অন্যান্য রকমারী অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ তবে রাতে ফুটবল হওয়াতে দূরের দর্শকদের যাতায়াতে অসুবিধা হতে পারে, এই ভাবনাটাও ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না৷