• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

তৃণমূলের লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, লক্ষ্য ‘ব্যবধান বৃদ্ধি’

ব্যতিক্রম বারাসত কেন্দ্র নিজস্ব প্রতিনিধি– বাংলার ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম হাইভোল্টেজ কেন্দ্র বারাসত৷ তবে এই কেন্দ্রের মানুষ রাজনৈতিকভাবে পরিবর্তন-বিমুখ৷ কেন? দীর্ঘ বছর ধরে বারাসত ‘বাম দুর্গ’ থাকলেও এই কেন্দ্রে পরিবর্তনের চাকা ঘোরে ২০০৯ সালে৷ সাংসদ হয়ে বারাসতের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার৷ তারপর থেকেই এই কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভাতেই কাকলির

ব্যতিক্রম বারাসত কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিনিধি– বাংলার ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম হাইভোল্টেজ কেন্দ্র বারাসত৷ তবে এই কেন্দ্রের মানুষ রাজনৈতিকভাবে পরিবর্তন-বিমুখ৷ কেন? দীর্ঘ বছর ধরে বারাসত ‘বাম দুর্গ’ থাকলেও এই কেন্দ্রে পরিবর্তনের চাকা ঘোরে ২০০৯ সালে৷ সাংসদ হয়ে বারাসতের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার৷ তারপর থেকেই এই কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভাতেই কাকলির হাত ধরে ছুটতে থাকে ‘উন্নয়নের অশ্বমেধের ঘোড়া’৷ এরপর কেটে গিয়ে সুদীর্ঘ পনেরো বছর৷ মানুষের যাবতীয় চাহিদা পূরণ এবং সমস্যার সমাধান করেছেন কাকলি পাশাপাশি সংসদে লড়েছেন মানুষের অধিকারের জন্য৷ সেই কারণেই এই কেন্দ্রের মানুষ আর ‘পরিবর্তন-বিমুখ’ হননি৷ সম্প্রতি অশোকনগরের নির্বাচনী সভামঞ্চ থেকে বারাসত কেন্দ্রের তিনবারের সাংসদ তথা চতুর্থবারের তৃনমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে ‘লড়াকু সাংসদ’ বলে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশংসাকে হাতিয়ার করে কাকলির হয়ে প্রচার বাডি়য়েছেন দলের নিচুতলার কর্মীরাও৷ গত তিনবারের মতোই এবারও কাকলির ওপরই ভরসা রেখেছে দল৷

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কার্যত হ্যাট্রিক করেন কাকলি৷ সেবার তিনি মোট ৬৪৮৫৫৫ ভোট পেয়ে জয়ী হন৷ ভোটের ব্যবধান ছিল প্রায় ১ লক্ষ ১৩ হাজার৷ ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনেও সাত কেন্দ্রে ব্যাপক মার্জিনে জয়ী হয় তৃণমূল৷ এবার বিধানসভা ভিত্তিক জয়ের ব্যবধানকে ধরে রেখেই চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে বাজিমাত করতে চাইছে তৃণমূল৷ ২০২১ এর নির্বাচনের চিত্রটা ছিল কিছু এরকম — সংখ্যালঘু অধু্যষিত দেগঙ্গায় তৃণমূলের জয়ের মার্জিন ছিল সবথেকে বেশি ৬২ হাজার ৫৫৯, মধ্যমগ্রামে ছিল ৪৮ হাজার ১২১, রাজারহাট – নিউটাউনে ছিল ৫৬ হাজার ৪৩২, অশোকনগরে ২৩৫৩২, বারাসতে ২৩৭৮৩ এবং বিধাননগরে ৭৯৯৭ ভোট৷ বিধানসভার এই ফলাফলকে ধরে রেখে বাজিমাৎ করতেই দলের প্রার্থীর সমর্থনে জোর কদমে প্রচারে শুরু করেছে তৃণমূল৷ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি, তৃণমূল পেয়েছিল ৪৭ শতাংশ ভোট৷ লড়াইটা হয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি৷ এরপর পরিস্থিতির অনেক বদল হয়েছে৷ এবার কাকলির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদার, যাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক পাচারের একাধিক অভিযোগ এবং মামলা৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই, মানুষের ভরসা থাকবে উচ্চশিক্ষিতা ডাক্তার প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কাকলির ওপরই, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ গত লোকসভা নির্বাচনে দেগঙ্গা বিধানসভা থেকে বিপুল পরিমাণ লিড পেয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী৷ তাই এবারেও দেগঙ্গা বিধানসভাকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বরা৷ তবে সংখ্যালঘু অধু্যষিত দেগঙ্গায় সম্প্রতি মাথাচাড়া দিয়েছে আইএসএফ৷ ভোট কাটাকুটির খেলায় দেগঙ্গায় এবার যাতে ‘অঘটন’ না ঘটে, তার জন্যই মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে তৃণমূলও৷

রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দলীয় প্রার্থীর জয় এক প্রকার নিশ্চিত৷ কিন্ত্ত লিড বাড়ানো নিয়ে আমরা ভাবছি৷ উনি তিনবারের সাংসদ এই এলাকা থেকে৷ তাই কাজের নিরিখে ভোট হবে৷’’ অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘আমরা এবার লিড বাড়ানো নিয়ে লড়ছি, জয়-পরাজয় নিয়ে নয়৷ প্রতিদিনই এলাকায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার হচ্ছে৷ তাতে মানুষের সমর্থনই প্রমাণ করে দিচ্ছে আমাদের তৃণমূল প্রার্থীর জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা৷’’