মোল্লা জসিমউদ্দিন: পুলিশের অতি সক্রিয়তা নিয়ে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ৷ মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমান পুলিশের তীব্র সমালোচনা করলো কলকাতা হাইকোর্ট৷ এদিন পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের মিছিলে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ আজ অর্থাৎ বুধবার পাণ্ডবেশ্বর রেলস্টেশন থেকে ফুলবাগান দুর্গা মন্দির পর্যন্ত মিছিল ও সভা করার কথা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের৷ অভিযোগ, তাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিল পুলিশ৷ মিছিল ও সভার জন্য পুলিশি অনুমতি মিলছিল না৷ সেই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ৷ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের অবকাশকালীন বেঞ্চ সেই মিছিল ও সভার অনুমতি দিয়েছে৷ এর পাশাপাশি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের এই মামলায় জেলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি৷ পুলিশের আচরণ প্রসঙ্গে বিচারপতি এদিন এজলাসে জানান, ‘জেলায় পুলিশ নিজেকে সর্বেসর্বা মনে করে৷’
এদিন মামলার শুনানির সময় রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছিল, ‘যেহেতু নির্বাচন চলছে, তাই বর্তমানে সভা ও মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়৷’ যদিও নির্বাচন কমিশনের থেকে জানানো হয়, ‘তাদের কোনও আপত্তি নেই৷’ যেহেতু এই মিছিলের সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই, তাই তাদের আপত্তি নেই বলে কলকাতা হাইকোর্টে জানায় নির্বাচন কমিশন৷ এরপরই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কর্মসূচিতে সবুজ সংকেত দেয় উচ্চ আদালত৷ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের অবকাশকালীন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, ‘বুধবার বেলা ১২টার সময় পাণ্ডবেশ্বর স্টেশন থেকে ফুলবাগান দুর্গা মন্দির পর্যন্ত ওই মিছিল ও সভা করতে পারবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’৷ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের মামলায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট৷ কেন কর্মসূচির অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে ‘অতি সক্রিয়তা’ দেখাল পুলিশ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট৷
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চকে মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবি এবং তাদের উপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল করার অনুমতি দিয়েছেন৷ হাইকোর্ট জানিয়েছে, ‘বুধবার দুপুর ১২টা পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর রেলস্টেশন থেকে ফুলবাগান দুর্গামন্দির পর্যন্ত মিছিল ও সেখানে সভা করতে পারবে ওই সংগঠন৷’ উল্লেখ্য, ডিএর দাবিতে এবং তাদের উপর হামলার প্রতিবাদে পাণ্ডবেশ্বরে মিছিল ও সভা করতে চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ৷ কিন্ত্ত পুলিশ অনুমতি দেয়নি৷ সংগ্রামী মঞ্চের আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘অনুমতি খারিজ করে রাজ্য জানায়, নির্বাচন চলাকালীন এমন অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়৷’ তাই বাধ্য হয়ে পুলিশের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ৷
মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানিতে নির্বাচন কমিশন জানায়, ‘নির্বাচনের সঙ্গে ওই কর্মসূচির কোনও সম্পর্ক নেই৷ ওই কর্মসূচিতে কমিশনের কোনও আপত্তি নেই৷’ কমিশনের ওই বক্তব্যের পরেই পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে আদালত৷ বিচারপতি এদিন এজলাসে এই মামলার শুনানি পর্বে জানান, ‘জেলায় পুলিশ নিজেকে সর্বেসর্বা মনে করে৷ এটা ঠিক নয়৷’ প্রসঙ্গত, আসানসোল সহ সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটপর্ব মিটে গেছে অনেক আগেই৷