দিল্লি, ২৭ মে – লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটের দিনই বৈঠকে বসতে চলেছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। সূত্রের খবর, আগামী শনিবার, ১ জুন সপ্তম দফা ভোটের শেষেই পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে ইন্ডিয়া জোট। রাজধানী দিল্লিতে বৈঠকে বসবে বিরোধী জোট। সেখানে ফলাফল এবং ফল পরবর্তী কর্মসূচি স্থির করা হবে। জোটের সমস্ত শরিক দলকে এই বৈঠকে অংশ নিতে বলা হয়েছে।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এই বৈঠক ডেকেছেন। সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটে জোট গড়ে লড়ার ফলে কী প্রতিক্রিয়া, ফলাফল কী হতে পারে, এবং সর্বোপরি ইন্ডিয়া জোটের ফল ভালো হলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে এসব নিয়েই আলোচনা হবে।শাসক ও বিরোধী জোটের মধ্যে এই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শেষ পর্যায়ে এসেই হঠাৎ আগামী ১ জুন, বৈঠকের ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়া জোট। আসন সংখ্যার নিরিখে দূরত্ব কমে এলে সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় ইন্ডিয়া জোটের বাইরে থাকা দলগুলির সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবও উঠতে পারে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে, সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মুখ নিয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে সূত্র মারফত খবর। ইন্ডিয়া জোট শরিকদের বিশ্বাস, এই ভোটে তাদের মিলিত শক্তি পরাজিত করবে বিজেপিকে । সরকার গঠনের অবস্থায় পৌঁছতে সক্ষম হবে বিরোধী জোট ।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক দলনেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভোট শেষ হতেই ২ জুন জেলে ফিরে যাওয়ার কথা। ভোটের ফল প্রকাশ হবে ৪ জুন। কেজরিওয়াল জামিনের মেয়াদ ৭ দিন বাড়ানোর আর্জি জানালেও আদালত কী বলবে তা জানা নেই। তাই ১ জুনের মধ্যেই আলোচনা সেরে ফেলতে চায় সব দলই।
আলোচ্যসূচির প্রধান বিষয় হতে পারে জোট সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রকগুলির দাবিদার করা হতে পারেন, তা নিয়েও কথা হতে পারে। যদিও সবকিছু নির্ভর করছে কংগ্রেসের ফলাফলের উপর। কংগ্রেস অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি চায় না। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মুখ নিয়ে আলোচনা হওয়া অনিবার্য, তা বলাই যায়। শরিক দলগুলির মধ্যে অভিজ্ঞতার নিরিখে এনসিপি-র শারদ পাওয়ার অনেক এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু, শারীরিক অবস্থার কারণে তিনি সেই দায়িত্ব নাও নিতে পারেন।
বৈন্থকে রাহুল গান্ধি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব সহ জোট শরিক সমস্ত নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে অংশ নেবেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
আবগারি দুর্নীতিতে মামলায় অভিযুক্ত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি অনেকটাই ক্ষুন্ন হয়েছে, তাই তাঁকে অনেকেই মেনে নিতে রাজি না হতে পারেন । কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা প্রবীণ হলেও আসন সংখ্যায় নগণ্য তাঁর দল ন্যাশনাল কনফারেন্স। সিপিএমসহ বাম দলগুলিও এই টালমাটাল সরকারে অংশীদার হতে চাইবে কিনা তা নিয়েও রাজনৈতিক মহল সন্দিহান । এই অবস্থায় বহু জটিল অঙ্কের সমাধান করতে শনিবার এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্যযোগ্য হল, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিয়াওলের জেলে ফেরার ঠিক আগেরদিনই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। আবগারী দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন কেজরি। সুপ্রিম কোর্টে অন্তর্বর্তী জামিন পেয়ে ভোট চলাকালীন জেল থেকে বের হন কেজরি , ইন্ডিয়া জোটের হয়ে প্রচার চালান বিভিন্ন রাজ্যে। ২ জুন তাঁর জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেরদিনই বৈঠকে বসতে চলেছে ইন্ডিয়া জোট।