দিল্লি, ২৪ মে– স্বাতী মালিওয়াল হেনস্থা কান্ড এখন দিল্লির সবথেকে চর্চিত বিষয়গুলির মধ্যে একটি৷ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হেনস্থার শিকার হন আপের বিধায়ক স্বাতী মালিওয়াল৷ তাকে মারধর এবং হেনস্থায় অভিযুক্ত হন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব বিভাব কুমার৷ স্বাতীর সঙ্গে এই হেনস্থার কথা শিকার করে নেয় দিল্লির আপ সরকারও৷ এরপর স্বাতীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় বিভাবকে৷ কিন্তু এবা স্বাতীর অভিযোগ, ‘দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে তাঁকে যখন মারধর করছেন তাঁরই ব্যক্তিগত সচিব বিভাব কুমার, সেই সময়ে বাড়িতেই ছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল!’ এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করছেন স্বাতী মালিওয়াল৷ শুধু তাই নয়, তাঁর এও দাবি, নিজের লোককে বাঁচানোর চেষ্টায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী৷ স্বাতী জানিয়েছেন, তাঁর কথা কারও বিশ্বাস না হলে তিনি ‘পলিগ্রাফ’ বা ‘লাই ডিটেক্টর’ টেস্টের জন্যও প্রস্তুত৷
স্বাতী মালিওয়াল নিগ্রহের তদন্তে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ, এমন খবর মিললেও পরে তা বাদ দেয় পুলিশ৷ বিষয়টি একদমই ভাল চোখে দেখছে না আম আদমি পার্টি৷ তারা প্রথমেই স্বাতীর বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ এনে দাবি করেছিলেন যে, তিনি বিজেপি অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছেন৷ তবে স্বাতী পাল্টা দাবি করেছেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী সহ আপ-এর সকলেই তাঁকে কাঠগড়ায় তুলে আদতে বিভাবকে বাঁচাতে চাইছে৷ কাউকেই তিনি বিশ্বাস করেন না৷
যদিও এই বিষয় নিয়ে প্রথমবার মুখ খুলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, ঘটনার দুটি দিক আছে৷ তিনি চান গোটা বিষয়টির নিরপেক্ষ এবং সঠিক তদন্ত হোক৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন স্বাতী৷ তাঁর বক্তব্য, ঘটনার এতদিন হয়ে গেলেও কেজরিওয়াল তাঁকে একবারও ফোন করেননি, তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাননি৷ এদিকে বলছেন ঘটনার দুটি দিক রয়েছে৷ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে, তিনি কাউকে বাঁচাতে চাইছেন৷
স্বাতীর কথায়, ‘আমি বুঝতেই পারছি না কেন এমন হল, কেউ আমার বিরুদ্ধে কেন এমন করল৷ প্রতিদিন আমার চরিত্র হনন করা হচ্ছে৷ এডিট করা ভিডিও ফাঁস করে, আমার সম্মানহানি করা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই আমি হেনস্তার শিকার হলাম, আর আমার সঙ্গেই এইসব হচ্ছে৷ প্রয়োজন পড়লে আমি পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য তৈরি৷’ পুলিশে দায়ের করা এফআইআর-এ তিনি ভুল তথ্য দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে৷ সেই বিষয় নিয়ে মুখ খুলে স্বাতী বলেন, ‘যা যা হয়েছে ঠিক সেটাই বলেছি৷ কিছুই বাড়িয়ে বলিনি৷ আমি যে সত্যি বলছি তা প্রমাণ করার জন্য সব করতে প্রস্তুত৷’
সর্বভারতীয় এক সংবাদসংস্থাকে সাক্ষাৎকার দিয়ে স্বাতী স্পষ্ট দাবি করেছেন, বড় কারুর অঙ্গুলি হেলনেই এই কাজ করেছেন বিভব৷ তবে তিনি কে, সেই বিষয়ে স্বাতী কিছু বলেননি৷ যদিও তাঁর স্পষ্ট কথা, তিনি কাউকেই বিশ্বাস করেন না আর৷
স্বাতী আরও বলেন, ‘হেনস্থা চলাকালীন তিনি একাধিকবার সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিলেন৷ কিন্ত্ত মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাড়িতে থাকাকালীনও আসেননি৷ তিনি তো দূর, অন্য কেউও তাঁকে সাহায্য করতে আসেনি৷’
জানিয়ে রাখি, ঘটনার সূত্রপাত ১৩ মে৷ স্বাতী মুখ্যমন্ত্রীর বাডি়তে গিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে৷ বসার ঘরে তিনি যখন অপেক্ষা করছিলেন, তখন কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বিভাব কুমার তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন৷ স্বাতীকে মারধর করেন৷ স্বাতী সেই সময় নিজেই ১০০ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চান৷ পুলিশ ঘটনস্থলে পেঁৗছে স্বাতীকে উদ্ধার করেন৷