নিজস্ব প্রতিনিধি— আইপিএল ক্রিকেট এখন শেষ পর্বে পৌঁছেছে৷ মঙ্গলবার কলকাতা নাইটরাইডার্স প্লে অফ ম্যাচে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য তৈরি রয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে৷ কিন্ত্ত এই হায়দরাবাদকে কীভাবে হারানো যায়, তার জন্য অবশ্যই মেন্টর গৌতম গম্ভীর বেশকিছু পরিকল্পনা কষেছেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই৷ লিগ পর্বের খেলায় শ্রেয়স আইয়ারের কলকাতা প্রথম ম্যাচে ইডেন উদ্যানে মুখোমুখি হয়েছিল হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে৷ ওই ম্যাচটায় টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে কলকাতা লড়াই করে ৪ রানে জয় পেয়েছিল হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে৷ স্বাভাবিকভাবে কলকাতা ও হায়দরাবাদ পাল্লা দিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলেছে৷ এমনকি, পয়েন্টের খতিয়ানে দেখা গিয়েছে কলকাতা লিগ পর্বে শীর্ষে থেকে খেলা শেষ করেছে৷ আর দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নেয় হায়দরাবাদ৷ আর প্রথম প্লে অফ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে কলকাতা ও হায়দরাবাদ৷ সেই কারণে ক্রিকেটপ্রেমীরা অপেক্ষায় রয়েছেন ম্যাচের চরিত্র কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছয়, তা দেখার জন্য৷ দুই দলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ৷ কিন্ত্ত কলকাতার কাছে বাড়তি সুবিধা রয়েছে যদি এই ম্যাচে তারা জিততে পারে, তাহলে সরাসরি ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র তাদের কাছে চলে আসবে৷ প্রতিপক্ষ হায়দরাবাদের ব্যাটিং শক্তি বেশ ভালো৷ বোলিংয়ের মধ্যেও বৈচিত্র্য রয়েছে৷ বিশেষ করে তাদের স্পিনাররা যখন তখন অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারেন৷ হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ট্রেভিস হেড ও অভিষেক শর্মা দারুণ ফর্মে রয়েছেন৷ অভিষেক ও ট্রেভিস বিপক্ষ দলের বোলারদের সমীহ করলেও হালকা বলে তাঁরা যেভাবে খেলে থাকেন, তাতে ভয়ের কারণ থাকে৷ তাদের বিরুদ্ধে যদি কলকাতা স্পিনারদের দিয়ে আঘাত হানতে চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে কিন্ত্ত তাঁরা বেশ সচেতন থাকেন কীভাবে তা মোকাবিলা করা যায়৷ কেকেআরের সুনীল নারাইন ও বরুণ চক্রবর্তী বল হাতে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন৷ যাঁরা পাওয়ার প্লে’তে বল করতে পারেন, তাঁদেরও কিন্ত্ত বুঝে নিতে হবে ওপেনার হিসেবে কারা খেলছেন৷ হয়তো হায়দরাবাদের দুই ওপেনারের বিরুদ্ধে শুরুতেই কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার স্পিনারদের দিয়েই আক্রমণ শানাবেন৷
হায়দরাবাদের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই ভালো হিটার৷ সহজ বল পেলে তারা দুরন্ত ব্যাট করে ৪ বা ৬ রান করতে কোনও দ্বিধা প্রকাশ করেন না৷ বিশেষ করে রাহুল ত্রিপাঠী, নীতীশ রেড্ডি, হেনরিক ক্লাসেন ও আবদুল সামাদরা বেশ ভালো খেলা উপহার দিয়ে থাকেন৷ সেই কারণেই তাঁদের বিরুদ্ধেও গতির হেরফের করতে হবে বোলারদের৷ বলের গতি যদি হেরফের হয়, তাহলে ব্যাটসম্যানরা কিছুটা সতর্ক নিয়ে খেলার চেষ্টায় রানের অঙ্কটা কমে যায়৷ হায়দরাবাদের দুই ওপেনার পাওয়ার প্লে’তে ওস্তাদিপনা দেখান৷ চলতি মরশুমে বেশ কয়েকটি ম্যাচে হায়দরাবাদ ২০০-রও বেশি রান করেছে৷ তাই পাওয়ার প্লে’তে তারা ভালো রান উপহার দিয়ে থাকে স্কোর বোর্ডে৷ সেকারণে কেকেআর’কে পাওয়ার প্লে খেলার সময় একটু অন্য ভাবনা নিয়ে খেলতে হবে, যাতে পাওয়ার প্লে’র সময় প্রতিপক্ষ দল বেশি রান না করতে পারে৷
এদিকে কেকেআরও বেশ কয়েকটি ম্যাচে ২০০-রও বেশি রান করেছে৷ তখন কলকাতা পাওয়ার প্লে’কে কাজে লাগিয়ে রানের অঙ্কটাকে বাড়িয়ে নিয়েছে৷ বিশেষ করে সুনীল নারাইন ও ফিল সল্ট জুটি ভালো রান করেছেন গ্রুপ পর্বের খেলায়৷ তবে ফিল সল্ট প্লে-অফ ম্যাচে খেলতে পারছেন না৷ সেই জায়গায় শূন্যস্থান ভরাট করবেন রহমানুল্লা গুরবাজ৷ প্রথম ৬ ওভারে যদি কলকাতা বড় রানের অঙ্ক করতে পারেন, তাহলে ম্যাচ জেতার সুবিধা পাবে৷ এটাও মনে রাখতে হবে হায়দরাবাদের পেস আক্রমণ বেশ ভালো৷ বিশেষ করে ভুবনেশ্বর কুমার, প্যাট কামিন্স ও টি নটরাজনরা ভালো বল করে থাকেন৷ সেক্ষেত্রে স্পিনার বিজয়কান্ত বিয়াসকান্তের বল বেশ ঘুরছে৷ তাঁর অভিজ্ঞতা কম থাকতে পারে, তবুও লড়াই করার মানসিকতা আছে৷ দুই বোলারকে সেই ভাবে খেলার নির্দেশ দেবেন প্যাট কামিন্স৷