• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বিরোধীরা ক্ষমতা পেলে রাম মন্দির ভেঙে দেবে, আশঙ্কা মোদির

দিল্লি, ১৮ মে –  সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দাবি ছিল, তিনি কখনও হিন্দু-মুসলিম করেন না। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার অনেক মুসলিম বন্ধু ছিলেন গুজরাটে, তাঁদের সঙ্গে আমি ঈদ-ও উদ্‌যাপন করতাম।’ শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের বরাবাঁকির সভায় ধর্মনিরপেক্ষ দেশের প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি অর্থাৎ ইন্ডিয়া জোট যদি কোনও ভাবে ক্ষমতায় এসে পড়ে তা হলে তারা অযোধ্যার রামলালার

দিল্লি, ১৮ মে –  সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দাবি ছিল, তিনি কখনও হিন্দু-মুসলিম করেন না। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার অনেক মুসলিম বন্ধু ছিলেন গুজরাটে, তাঁদের সঙ্গে আমি ঈদ-ও উদ্‌যাপন করতাম।’ শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের বরাবাঁকির সভায় ধর্মনিরপেক্ষ দেশের প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি অর্থাৎ ইন্ডিয়া জোট যদি কোনও ভাবে ক্ষমতায় এসে পড়ে তা হলে তারা অযোধ্যার রামলালার মন্দিরের উপর দিয়ে বুলডোজ়ার চালাতে দু’বার ভাববে না। তাঁর আবার আশ্রয় হবে তাঁবুতে। কাজেই ভোট দেওয়ার আগে ভেবে দেখুন।’ কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করে তাঁর সংযোজন, ‘ওরা ক্ষমতায় এলে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রামমন্দির-রায় পাল্টে দিতে পারে, তাই সাবধান।’ এর পরেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসা করে বলেন, ‘ওঁর থেকে বিরোধীদের শেখা উচিত বুলডোজ়ার কোথায় কখন চালাতে হবে। ওটা মন্দিরের উপর চালানোর কথা নয়। সেটা কি ওঁরা বুঝবেন?’

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা  মনে করছেন, মোদি  যে পর্যায়ে ধর্মীয় মেরুকরণকে নিয়ে গেছেন, তা ২০১৪ বা ২০১৯-এর ভোটে হয়নি। তাঁদের মতে, রামমন্দির গড়ে ও তা এ বছরের গোড়ায় উদ্বোধন করে দিয়ে হিন্দু ভোট ঝুলিতে টানা যতটা সহজ হবে বলে গেরুয়া শিবির ভেবেছিল, প্রথম চারটি পর্যায়ের ভোটে বোধহয় সেই লক্ষ্যপূরণ হয়নি। ফলে মোদি  এখন মরিয়া হয়ে ভোট চাইছেন।’ তাঁদের ব্যাখ্যা, লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে প্রথম দফার ভোটের পর থেকেই বিজেপির ন্যারেটিভ বদলে যায়। ‘৪০০ পার’ বা ‘মোদি কি গ্যারান্টির’ জায়গায় বেশি গুরুত্ব পেতে থাকে ধর্ম, সংরক্ষণ ও কিছু ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ। আর তার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোদি । আবার ক্ষেত্র বিশেষে এমন কথাও বলছেন, যাতে মুসলিমরাও তাঁকে বা তাঁর দলকে ভোট দেন।  বিশ্লেষকরা তাই  নিশ্চিত, শুধু হিন্দু ভোটে আর আস্থা রাখতে পারছেন না তিনি। তাইপরিস্থিতি বুঝে তিনি ধর্মীয় তাস খেলছেন।

যেমন একটি সাক্ষাৎকারে মোদি এদিন বলেছেন, ‘রমজান মাস চলছিল। আমার বিশেষ দূতকে ইজ়রায়েলে পাঠিয়েছিলাম। বলেছিলাম যে, ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে ওঁদের বোঝান যে অন্তত রমজান মাসে যেন গাজ়ায় হামলা চালানো বন্ধ রাখা হয়। ইজ়রায়েল সেটা যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছে। দু’তিন দিন কিছুটা আক্রমণ চলেছিল… তবে খুব বেশি নয়।’ একই সঙ্গে মোদি  দাবি করেন, প্যালেস্তাইনের সঙ্গে তাঁর আত্মিক যোগ আছে। এই সবের পরেও ভারতীয় মুসলিমদের নিয়ে তাঁকে নিশানা করা হয় বলে কিছুটা আক্ষেপ প্রকাশ করেন ।

 
কংগ্রেসের ইস্তেহার প্রকাশের পর থেকেই মোদি  ওই দলকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছেন। এমনকী অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা গিয়েছে যে, যে কথা কংগ্রেস ম্যানিফেস্টোতে উল্লেখও নেই, যেমন সকলের সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে এমনকি মা-বোনদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে নিয়ে মুসলিমদের হাতে তুলে দেবে সোনিয়া-রাহুলের দল, তেমন দাবিও করেছেন।
 
এ বারের ভোটে যোগীরাজ্যে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি লড়ছে একসঙ্গে। পর্যবেক্ষকদের বড় অংশ মনে করছেন, মায়াবতীর বিএসপি বিজেপির দিকে ঝুঁকে রয়েছে। ফলে সেই ভোট এ বার তাঁর না পাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। বিভিন্ন কারণে বিজেপিরও সে ভোট নিজেদের দিকে টানা কঠিন হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। ফলে সরাসরি ‘হিন্দু-মুসলিম’ তাস ছাড়া মোদি নিরুপায়।
 
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সভাপতি।  পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানান তিনি। উত্তরপ্রদেশের এক জনসভা থেকে মোদী দাবি করেছিলেন, বিরোধীরা যদি ক্ষমতায় আসে, তবে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি রামমন্দিরের উপর বুলডোজ়ার চালাবে! প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি প্রকাশ্যে আসার পরেই শোরগোল পড়ে যায় জাতীয় রাজনীতিতে। খাড়গের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলে মানুষকে উস্কানি দিচ্ছেন। 
 
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতিকে মোদির মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আজ পর্যন্ত বুলডোজ়ার ব্যবহার করিনি। যাঁরা উস্কানিমূলক বক্তৃতা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এমন করেছেন। উনি জনগণকে উস্কানি দিচ্ছেন। আমাদের সরকার আসার পর আমরা সংবিধান মেনেই সব কিছু রক্ষা করব।’’ মোদির মন্তব্য নিয়ে কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান কংগ্রেস সভাপতি । পাশাপাশি কমিশনের ভূমিকা নিয়েও দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি।