নিজস্ব প্রতিনিধি— নিজের হাতেই তাঁর উত্তরসুরীকে বেছে নিয়েছেন বাইচুং ভুটিয়া৷ তাই নিজের হাতেই অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ডটি পরিয়ে দিয়েছিলেন সুনীল ছেত্রীর হাতে বাইচুং৷ সুনীলের অবসরের কথা জানতে পেরেই বাইচুংয়ের মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে যায়৷ তিনি বলেন, ভারতীয় ফুটবলে একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেল৷ তিনি আরও বলেন, ভারতের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে সুনীল ছেত্রীকে এগিয়ে রাখতে হবে৷ সুনীলের পাশে খেলতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেছি৷ আমি যখন খেলতে আসি, তখন আমার থেকে সিনিয়র ছিলেন আইএম বিজয়ন৷ তারপরেই আসে সুনীল৷ তাই ভারতীয় ফুটবলে এঁদের মতো ফুটবলারদের সঙ্গ পেয়ে আমি নিজেও তৃপ্ত হয়েছি৷ ১৯ বছর দেশের হয়ে সুনীল যেভাবে ভারতীয় ফুটবলকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন, তা গর্ব করার মতো এবং বলতে দ্বিধা নেই একেবারে সঠিক সময়ে এই সিদ্ধান্ত৷ সুনীলের জন্য দেশ যেমন গর্ব করে, তেমনই ফুটবল জগৎও গর্বিত৷
আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেওয়ার কথা শুনে বন্ধু ক্রিকেটার বিরাট কোহলি প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আইপিএল ক্রিকেট চলাকালীন সুনীলের সঙ্গে কথা বলার জন্য বেশ কয়েকবার বেঙ্গালুরু শিবিরে হাজির হয়েছিলাম৷ সুনীলের সঙ্গে ফুটবলও খেলেছি৷ ভাইয়ের মতো তাঁর কাছ থেকে ব্যবহারও পেয়েছি৷
ভারতীয় গোলের গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধু বলেছেন, এই দিনটা দেখতে চাইনি৷ তাঁর খেলা দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকতাম৷ তবে হঁ্যা, একদিন তো খেলা থেকে অবসর নিতেই হয়৷ কিন্ত্ত হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কখনওই মেনে নেওয়া যায় না৷ তাই আগামী ৬ মে গোটা দেশের উচিত সুনীলের অবসর উদ.াপন করা৷ তুমি আমার অধিনায়ক৷
ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমার বাড়ির জামাই সুনীল ছেত্রী৷ আমার তো মনে হয়, সুনীলের এই সিদ্ধান্ত একেবারে সঠিক সময়ে হয়েছে৷ পুরো ফর্মে থাকাকালীন যদি মাঠ ছেড়ে চলে আসা যায়, তাহলে ফুটবলপ্রেমীরা চিরদিনই তাঁকে মনে রাখবে৷ এমনই ঘটনা ঘটেছিল চুনী গোস্বামীর ক্ষেত্রে৷ তিনি আরও কিছুদিন খেলতে পারতেন৷ কিন্ত্ত চুনীদা টপ ফর্মেই খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন৷ পেলে-মারাদোনাকেও তো অবসর নিতে হয়েছে৷ এটা স্বাভাবিক ব্যাপার৷ নতুন ফুটবলাররা উঠে আসবে, তাদের পাশে থাকবে সুনীল৷ সুনীল খেলা ছেড়ে দেওয়াতে ভারতীয় ফুটবলের কী ক্ষতি হবে, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন মনে হয় না৷ তবে ভালো লাগছে কলকাতা থেকে উঠে আসা সুনীল, অবসর নিচ্ছে কলকাতা থেকেই৷ এটাই তো বাংলার ফুটবলের আবেগ!
অবসরের কথা জানতে পেরে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সুনীলের মা ও স্ত্রী৷ দু’জনেই কেঁদে ফেলেছেন৷ মা ও স্ত্রীর চোখে জল দেখে সুনীল নিজেই সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ‘আমাকে খেলতে দেখলেই তোমাদের মানসিক চাপ বাড়তো৷ তাই তোমাদের কাছে একটা ভালো বার্তা দিই৷ দেশের হয়ে খেলার পরে আমি আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নিচ্ছি৷’