অভিভাবকহীন কংগ্রেস। লােকসভা নির্বাচনে দলের বিপর্যয়ের দায় মাথায় নিয়ে কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল গান্ধি। এখনও পর্যন্ত সভাপতি হিসাবে কাউকে বেছে নিতে পারেনি কংগ্রেস। এই ডামাডােলের মধ্যেই চলতি সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির নাম ঘােষণা করতে চলেছে কংগ্রেস।
মঙ্গলবার সংসদে দলের নেতাদের দ্রুত সভাপতি বেছে নেওয়ার জন্য বলেন রাহুল গান্ধি। নেতাদের উদ্দেশ্যে রাহুল বলেন, ‘আর দেরি না করে পরবর্তী সভাপতি বেছে নিন। নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে দলের কোনও নেতাকে দেওয়া হােক অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির দায়িত্ব’।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির নাম ঘােষণা করা হবে। সভাপতি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবেন অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, সংসদে দলীয় নেতাদের ঘরােয়া আলােচনার সময় রাহুল গান্ধি জানিয়েছেন, তিনি চান না তাঁর পরিবার থেকে কাউকে সভাপতি পদে বসানাে হােক। এমনকি বােন প্রিয়াঙ্কাকেও নয়।
সভাপতি বাছাইয়ে দল কতটা এগিয়েছে সে বিষয়ে মঙ্গলবার খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন রাহুল গান্ধি। তারপর থেকে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা।
দলের তরফ থেকে জানান হয়, এই সপ্তাহে অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির নাম ঘােষণা করা হবে। অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত সভাপতি দলের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার পরেই সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। নির্বাচনের দিনক্ষণ জানাবে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি।
দলের এক শীর্ষ নেতা সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সভাপতি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসাবে একজনের নাম এ সপ্তাহেই ঘােষণা করা হবে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের আগে এটার প্রয়ােজন রয়েছে।
লােকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘােষণার পরেই সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধি। দলের শীর্ষনেতৃত্ব বুঝিয়েও রাহুলের মত বদলাতে পারেননি। কিন্তু রাহুল সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি তাে সভাপতি হবেন না, এমনকি পরিবার থেকেও কাউকে সভাপতি করা যাবে না বলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিং, করণ সিং এবং শশী থারুরের মতাে বেশ কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় নেতারা কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির কাছে সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য চাপ দিতে থাকেন।
গতকাল সংসদেও একই কথা বলতে শােনা যায় প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকেও। কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসাবে উঠে আসছে গােটা কয়েক নাম। এঁদের মধ্যে রয়েছেন অশােক গেহলট, সচিন পাইলট, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিং, সুশীল শিন্ডে, সেই সঙ্গে রয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগােপাল।
লােকসভা নির্বাচনের পর কংগ্রেসের অন্দরে ভাঙন প্রকট হয়ে উঠছে। আগামী বছর মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে প্রদেশে কংগ্রেসে ভাঙন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকেই পা বাড়িয়েছেন দল ছাড়ার জন্য।
দলের কাছে আর একটা ঝটকা, মঙ্গলবার রাজ্যসভার সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। বিজেপিতে যােগ দেবেন বলে জানা গেছে।