কলকাতা, ৮ মে: অবশেষে পরীক্ষার ৬৯ দিনের মাথায় প্রকাশিত হল উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এই ফল প্রকাশ করেন। তিনি আজ, বুধবার দুপুর ১টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন। এবারে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা প্রায় ১২ শতাংশ বেশি ছিল। মোট পরীক্ষার্থীর ৯০ শতাংশই পাশ করেছে।
পাশের হারের নিরিখে প্রথমে পূর্ব মেদিনীপুর, দ্বিতীয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা, তৃতীয় পঃ মেদিনীপুর, চতুর্থ কালিম্পং এবং পঞ্চমে কলকাতা রয়েছে। রাজ্যের মোট ১০টি জেলায় পাশের হার ৯০ শতাংশেরও বেশি। মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিকেও প্রথম দশে রয়েছেন ৫৮ জন পরীক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে ৩৫ জন ছাত্র এবং ২৩ জন ছাত্রী রয়েছেন। প্রথম দশে হুগলি থেকে ১৩ জন, বাঁকুড়ায় ৯ জন, দঃ ২৪ পরগনা থেকে ৭ জন, কলকাতা থেকে ৫ জন, পূঃ বর্ধমান থেকে ৪ জন ও পূঃ মেদিনীপুর থেকে ৪ জন। কোচবিহার থেকে ৩জন ও মালদহ থেকেও ৩ জন। এছাড়া আলিপুরদুয়ার থেকে ২ জন, বীরভূমে ২ জন ও উঃ দিনাজপুর থেকে ২ জন। অন্যদিকে, উঃ ২৪ পরগনা, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়া থেকে ১ জন করে মোট চারজন পরীক্ষার্থী প্রথম দশে রয়েছেন। আগামী ১০ মে থেকে স্কুলে মার্কশিট ও শংসাপত্র দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
এবার রাজ্যে প্রথম হয়েছেন অভিক দাস। তিনি আলিপুরদুয়ারের ম্যাকউইলিয়াম স্কুলের ছাত্র। অভিকের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন সৌম্যদীপ সাহা। তিনি নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৫। তৃতীয় হয়েছেন মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের অভিষেক গুপ্ত। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৪। চতুর্থ প্রতিচি রায় তালুকদার ও স্নেহা ঘোষ। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৩। পঞ্চম স্থান অধিকার করেছেন সায়ন্তন মাইতি, সুস্মাতি কুণ্ডু, শৌণক কর, সানন্দা রায়, অঙ্কিত পাল, অর্ণব কর্মকার। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২। উচ্চমাধ্যমিকে ষষ্ঠ হয়েছেন রুদ্র দত্ত, সৌরদীপ মহাপাত্র, নিলয় চট্টোপাধ্যায়, মানসী চন্দ্র, সৌম্যদীপ নন্দী, অর্ঘকিশোর ভট্টাচার্য, আফরিন মণ্ডল ও অনিমেষ রায়। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১ । সপ্তম হয়েছেন সৌমিক দাভাল, ঋতব্রত দাস, বিদিশা, অঙ্কিতা সরকার, মঃ সইফ। তাঁরা নম্বর পেয়েছেন ৪৯০ করে । অষ্টম হয়েছেন অর্ঘদীপ দত্ত, অসিত কুমার মুখোপাধ্যায়, সোমশুভ্র কর্মকার, রুমা কোলার, কৌশিক ঘোষ ও সিঞ্চন দত্ত। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৯। নবম স্থান অধিকার করেছেন অন্বেষা দত্ত, পৃথা দত্ত, প্রিতম্বর বর্মণ, অহন চক্রবর্তী, কুশল ঘোষ, আদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্পণ গোস্বামী, অর্ক সাহা, কৃষ্টি পাল, বিতান আহমেদ, উজান চক্রবর্তী, প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। এবং উচ্চমাধ্যমিকে দশম সৃজনি ঘোষ, ঋষি দত্ত, তনিশা দাস, সোমা ঘোষ, অন্তরা শেঠ, ইন্দ্রাণী সেন, সুকৃতি মণ্ডল, দেবপ্রিয়া পাল, শতপর্ণা, সোহম, সোহম মুখোপাধ্যায়, অনিষ ঘোড়াই, শুভজিৎ ঘোষ, তৌফিক মামদু, সরসপ্তা আদক ও অঙ্কিতা ঘোষ। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৭।
উল্লেখ্য, এবছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়। শেষ হয় ২৯ ফেব্রুয়ারি। ১১ দিন ধরে পরীক্ষা চলে। লোকসভা ভোটের ডামাডোলের মধ্যেও মাত্র ৬৯ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। গত ২ মে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের ৬ দিনের মাথায় উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনের সময় পর্ষদ সভাপতি বলেন, এবার পরীক্ষায় প্রশ্ন লিকের কোনও ঘটনা ঘটেনি। এবার মোট পাশ করেছে ৬ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৮৪ জন পরীক্ষার্থী। সেই হিসেবে এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার ৯০ শতাংশ। এবছর মোট পরীক্ষা দিয়েছিল ৭ লক্ষ ৯০ হাজার ছাত্রছাত্রী। ৮.৪৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী ৮০% এর বেশি নম্বর পেয়েছেন। তবে দুপুর ১টা নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশিত হলেও ছাত্র ছাত্রীরা অনলাইনে তাঁদের রেজাল্ট দেখতে পান বিকাল ৩টা থেকে। সেখানে রোল নম্বর সহ বিস্তারিত তথ্য দিয়ে পরীক্ষার রেজাল্ট ও মার্কশিট ডাউনলোড করা শুরু হয়।