দিল্লি, ৩ মে – কোভিশিল্ড টিকা নেওয়ায় মেয়ের মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হলেন অভিভাবকেরা। করোনার টিকা কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছে ব্রিটেনের আদালত। ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার নাম অ্যাস্ট্রাজেনেকা। হাইকোর্টে অ্যাস্ট্রোজেনেকা স্বীকার করে নেয় যে, কোভিশিন্ড ভ্যাকসিনের কারণে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ওষুধ ভারতে তৈরির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া অর্থাৎ এসআইআই-কে। অতিমারির সময়ে দেশের বেশিরভাগ মানুষই কোভিশিল্ডের টিকা নেন।
করোনা মহামারী চলাকালীন ঋতিকা শ্রী ওমট্রি এবং করুণ্য নামের দুই তরুণীর মৃত্যু হয়। তাঁরা দুজনেই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। দ্বাদশ পাশ করার পর ১৮ বছরের ঋতিকা ২০২১ সালে স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। অভিযোগ, কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নেওয়ার একসপ্তাহ পর ঋতিকার প্রচন্ড জ্বর আসে। সেই সঙ্গে শুরু হয় বমি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে ঋতিকার হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর একটি এমআরআই স্ক্যানে ধরা পড়ে যে তাঁর মস্তিষ্কে একাধিক জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করেছে। এর দুই সপ্তাহের মধ্যেই মৃত্যু হয় ঋতিকার।
ভেনুগোপাল গোবিন্দনের মেয়ে করুণ্যারও কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার এক মাস পর ২০২১ সালের জুলাই মাসে মৃত্যু হয়। ভেনুগোপালের অভিযোগ, কোভিশিল্ডই প্রাণ কেড়েছে তাঁর মেয়ের। এক্স হ্যান্ডলে তিনি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও কোভিশিল্ডের নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ওই টিকা নেওয়ার পর রক্ত জমাট বাঁধার কারণে মৃত্যুর ঘটনায় ইউরোপের ১৫ টি দেশে সেটির ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছিল। তখনই সিরাম ইনস্টিটিউটের উচিত ছিল সংশ্লিষ্ট টিকা সরবরাহ বন্ধ রাখা। ইতিমধ্যেই মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে বহু আদালতে গেলেও কোনও শুনানিই হয়নি বলেই অভিযোগ তাঁর।
সম্প্রতি করোনার টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্ব তোলপাড় হয়। একটি মামলার প্রেক্ষিতে অ্যাস্ট্রেজেনেকা স্বীকার করে নেয় তাদের তৈরি কোভিশিল্ডে বিরল থ্রম্বোসিস বা থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।