• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

অসহিষুতা ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠালেন বুদ্ধিজীবীরা

সম্প্রতি দেশ জুড়ে ঘটে চলা অসহিষ্ণুতা এবং গণপিটুনি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার ঘটনা নিয়ে সরব হল বলিউডের সঙ্গে টলিউড।

নরেন্দ্র মোদি (File Photo: IANS)

সম্প্রতি দেশ জুড়ে ঘটে চলা অসহিষ্ণুতা এবং গণপিটুনি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার ঘটনা নিয়ে সরব হল বলিউডের সঙ্গে টলিউড।

বিশেষ করে জয় শ্রীরাম ধ্বনি নিয়ে যেভাবে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অত্যাচার চালানাে হচ্ছে, তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পী এবং বুদ্ধিজীবীরা বিজেপি সরকারের আমলের বিভিন্ন শান্তিভঙ্গের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ৪৯ জনের স্বাক্ষরিত চিঠি বুধবার পাঠানাে হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে।

এই চিঠির স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে মণিরত্নম, শ্যাম বেনেগাল, আদুর গােপালকৃষ্ণানের সঙ্গে রয়েছেন অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, কঙ্গনা সেনশর্মা, বিনায়ক সেন, ঋদ্ধি সেন, গৌতম ঘােষ প্রমুখ।

বিষয়টি নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে একই সুরে সুর মিলিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানিয়েছেন সঙ্গত কারণেই বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক-সমাজকর্মীরা এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন। সবাই দেখছে, দেশে এখন কী চলছে। দেশ বিপদে পড়েছে। এটাই সরব হওয়ার উপযুক্ত সময়।

প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনও নাগরিকই চিঠি দিতে পারেন। মমতা বলেন, আমি কোনও রাজনৈতিক স্লোগানকে অসম্মান করি না । কিন্তু স্লোগানের নাম করে অত্যাচার চালানাে অনুচিত।

প্রসঙ্গত লােকসভা নির্বাচনের সময় ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ায় সমালােচনা করেছিলেন রাজ্যের বুদ্ধিজীবী মহলের অনেকে। বিশেষ করে সেই সময় এই স্লোগান নিয়ে বাক স্বাধীনতার যুক্তি দিয়েছিলেন অনেকে। বিজেপি’র জয় শ্রীরাম ধ্বনি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের কবর খুঁড়ছেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, বিনায়ক সেনের মতাে বুদ্ধিজীবীরা।

কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তারাই বুধবার নরেন্দ্র মােদির কাছে প্রতিবাদ পত্র পাঠিয়েছেন। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি এখন একটা ‘ওয়্যার ক্রাই’তে পরিণত হয়েছে। এই ধ্বনিতে প্রভাবিত হওয়ার ফলে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে জয় শ্রীরাম না বলার অপরাধে মুসলিম, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে দেশের সব বুদ্ধিজীবীরা একজোট হয়ে প্রতিবাদ জানালেন।

তাঁদের মতে, ধর্মের নামে মানুষের ওপর অত্যাচার চালানাে মধ্যযুগীয় বর্বরতা। দেশের বহু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে রামচন্দ্র আরাধ্য দেবতা। তাঁকে এভাবে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে উদ্যোগী হতে অনুরােধ জানিয়েছেন এই বুদ্ধিজীবীরা।

প্রধানমন্ত্রী সংসদে গণপিটুনির নিন্দা করলেও বাস্তবে তাঁর দলের অনুগামীরাই এই ধরনের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরাে থেকে পরিসংখ্যান দিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন ২০১৬ সালের পর থেকে দলিত এবং সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার কীভাবে বেড়েই চলেছে।

বুদ্ধিজীবীদের দাবি এই ধরনের অত্যাচারের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের জামিন অযােগ্য ধারায় দণ্ড দেওয়া হােক। তাঁদের যুক্তি, যদি খুনের অপরাধীদের জামিন অযােগ্য ধারায় শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে গণপিটুনি দেওয়া অপরাধীদেরও একই শাস্তি হওয়া উচিত।

রাজনীতিতে শালীনতা থাকা উচিত। তাই ‘অ্যান্টি ন্যাশনাল’ বা ‘আরবান নকশাল’ আখ্যা দেওয়ারও ঘাের বিরােধী এই বুদ্ধিজীবীরা।

ইদানিং সরকারের সমালােচনা করলেই তাঁদের দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে। বুদ্ধিজীবীদের মতে, এতে মানুষের বাক স্বাধীনতা খণ্ডিত হচ্ছে। এটা আমাদের দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিরুদ্ধ।

 

পড়ুন । বুদ্ধিজীবীদের অহিষ্ণুতার অভিযােগ ওড়ালো কেন্দ্র