নিজস্ব প্রতিনিধি— জঙ্গিদের নিশানায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দাবি কলকাতা পুলিশের৷ তাঁর বাডি়তে হামলার ছক কষছে জঙ্গিগোষ্ঠী? যদিও এই প্রশ্ন রাজ্য রাজনীতিতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও তা নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই অভিষেকের৷ তিনি বরাবরই বলে এসেছেন, নিজের জীবনের চেয়েও জনসেবা বেশি জরুরি৷ এবার তাঁর বক্তব্যের প্রতিফলন হলো তাঁর কর্মের মধ্য দিয়েই৷ জঙ্গি হামলার জল্পনাকে সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে সোমবারের দুপুরেই অভিষেক পরিকল্পনামাফিক পৌঁছে গিয়েছিলেন খড়্গপুরে৷ সেখানেই মেদিনীপুর এবং ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী কমিটির সদস্যদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে বসেন তিনি৷
আলোচনার বিষয়বস্তু লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল নির্ধারণ৷ উল্লেখ্য, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে ঘাটালে দীপক অধিকারী ওরফে দেবের হাত ধরে জোড়াফুল ফুটলেও মেদিনীপুর কেন্দ্র হাত ছাড়া হয় তৃণমূলের৷
মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষের হাত ধরে ফুটেছিলো পদ্মফুল৷ যদিও এবার বিজেপি দিলীপ ঘোষের বদলে অগ্নিমিত্রা পলকে প্রার্থী করেছে মেদিনীপুর কেন্দ্রে৷ তাই এবার ঘাটাল জয়ের পাশাপাশি অগ্নিমিত্রা পলকে হারিয়ে মেদিনীপুর কেন্দ্রকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া তৃণমূল৷ কোন পন্থায় মেদিনীপুর এবং ঘাটালের আকাশে সবুজ আবির ওড়ানো সম্ভব, অভিষেক সেই পরামর্শই দেন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া এবং ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেবকে৷ উল্লেখ্য, চব্বিশের নির্বাচনে ঘাটাল রক্ষায় শাসকদলের তুরুপের তাস ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’৷ বহু বছরের প্রতিক্ষিত এই প্রকল্পের বাস্তবায়নকে সামনে রেখেই ভোট বৈতরণী পেরতে বদ্ধপরিকর ঘাসফুল৷ দেবের সমর্থনে প্রচারে বেরিয়ে অভিষেক ঘাটালে দাঁড়িয়েই ঘোষণা করেছিলেন, “এ বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুধু ঘোষণা নয়, হাতে কলমে শুরু করে দেবে তৃণমূল সরকার৷” সুতরাং এই ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান’কে সামনে রেখেই প্রচারে নামবে তৃণমূল৷ মানুষকে বোঝাতে হবে ২০১৪ সাল থেকেই ঘাটালের সাংসদ তথা টলিউড তারকা দেব বারংবার চেষ্টা করেও এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে পারেননি কারণ কেন্দ্র পিছপা হয়েছে৷ কিন্ত্ত এবার রাজ্য সরকারই তা করে দেখাবে৷ পাশাপাশি চলতি বছরে একশো দিনের কাজের মতোই আবাসের টাকাও মানুষ পেয়ে যাবেন, হাত পাততে হবে না কেন্দ্র সরকারের কাছে৷ এই বিষয়টিতেও গুরুত্ব আরোপ অভিষেকের৷
পাশাপাশি প্রচারে তৎপরতা বৃদ্ধির নির্দেশ অভিষেকের৷ বিশেষ করে যে সকল এলাকায় ২০১৯ এ পিছিয়ে ছিল তৃণমূল, সেখানে নিজেদের ভুলত্রুটি সংশোধন করে অধিক গুরুত্ব দানের নির্দেশ৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের অভাব, অভিযোগ শুনে তা সমাধান করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে৷ লক্ষ্মীর ভান্ডারের বরাদ্দ বৃদ্ধি থেকে রাজ্য সরকারের যুগান্তকারী প্রকল্পগুলির খতিয়ান তুলে ধরে প্রচার চালাতে হবে, পাশাপাশি মানুষকে বোঝাতে হবে যে কেন্দ্র সরকারের প্রতিশ্রুতি মানেই ‘জুমলা’, সেটি সিএএ আইন হোক বা কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করার প্রতিশ্রুতি৷