• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

আসামে এনআরসি ও মেঘালয়ে বাঙালি হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী আন্দোলনের লক্ষ্যে কলকাতায় বঙ্গভাষী মহাসভার আন্তর্জাতিক সেমিনার

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি সমাজ আজ আক্রান্ত। তাঁদের বিভিন্ন ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে পিছিয়ে পড়ছে বাঙালি সমাজ। এই সমস্যা শুধু ভারতে নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও বাঙালির অধিকার নিয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই আন্দোলনের প্রেরণা ‘বঙ্গভাষী মহাসভা’ নামের একটি ট্রাস্ট। যাঁরা মূলত বাঙালির অধিকার রক্ষা নিয়ে চিন্তা করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি সমাজ আজ আক্রান্ত। তাঁদের বিভিন্ন ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে পিছিয়ে পড়ছে বাঙালি সমাজ। এই সমস্যা শুধু ভারতে নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও বাঙালির অধিকার নিয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই আন্দোলনের প্রেরণা ‘বঙ্গভাষী মহাসভা’ নামের একটি ট্রাস্ট। যাঁরা মূলত বাঙালির অধিকার রক্ষা নিয়ে চিন্তা করে। এই সংগঠনের বর্তমান সর্বভারতীয় ও আন্তর্জাতিক সভাপতি ড. পরিমল কান্তি মন্ডল সেই আন্দোলনকে যথেষ্ট গতি সঞ্চার করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার কলকাতার বুকে একটি সেমিনার হয়ে গেল।

এদিন দুপুর দুটো নাগাদ গণেশ চন্দ্র এভিনিউ-এর সুবর্ণ বণিক সমাজ সভাঘরে বাঙালি সমাজের ওপর আক্রমণ, বাঙালিকে হত্যা নিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন সংগঠিত করার উদ্দেশ্যেই এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এজন্য বাঙালি সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড. শুভ্র চক্রবর্তী ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ রায়। গত ১৯ এপ্রিলের সেমিনারে ড. শুভ্র চক্রবর্তী উপস্থিত না থাকলেও তিনি বিভিন্নভাবে ভার্চুয়ালে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন ভারত ও বাংলাদেশের বাঙালি সমাজের প্রতিনিধিরা। আইনজীবী নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ রায় এদিন তাঁর দীর্ঘ বক্তৃতায় সিএএ-এর অন্তঃসারশূন্যতা ও আসামে বাঙালি সমাজের ওপর এনআরসি-র ক্ষতিকর প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি, তিনি মেঘালয়ে দিনের পর দিন খাসি সম্প্রদায়ের দ্বারা বাঙালিদের নৃশংস হত্যার বিষয়টিও তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, এদিন সেমিনারে মূল আলোচ্য বিষয় ছিল মেঘালয়ে খাসি উপজাতি সম্প্রদায়ের দ্বারা বাঙালিদের নির্মম হত্যা ও অত্যাচার বন্ধ করার জন্য আন্দোলন। আসামে এনআরসি প্রয়োগ করে বাঙালিদের বিদেশী তকমা দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো বন্ধ করা। এছাড়া জাতীয় স্তরে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবি, চাঁদসী চিকিৎসকদের আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতির দাবি নিয়ে আলোচনা ও আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। পাশাপাশি, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নমঃশূদ্র, পৌন্ড্র, ক্ষত্রিয়, মাঝি সম্প্রদায়কে এসসি স্বীকৃতি ও শংসাপত্র প্রদান করা, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় বাংলা ভাষায় বিদ্যালয় চালু অথবা বাংলা ভাষার পাঠদানের যথাযথ ব্যবস্থা করা, বাঙালিদের ইতিহাসের মূল্যায়ন। বিশেষ করে পাঠ্য পুস্তকে বাঙালি বিপ্লবীদের কাহিনী পাঠ্য পুস্তকে প্রাধান্য দেওয়া সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এদিন সেমিনারে সংগঠনের সভাপতি পরিমলকান্তি মন্ডল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ রায়, রেশমি ঘোষ, শিক্ষাবিদ তাপস মুখার্জি ও ছোটন মিত্র, বসিরহাট থেকে নিজাম আহমেদ, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট সচিব ও আইনজীবী গোবিন্দ প্রামাণিক, আসাম থেকে আসেন অমৃতলাল দাস সহ অন্যান্যরা।

সংগঠনের সভাপতি ড. পরিমল কান্তি মণ্ডল এদিন বলেন, বঙ্গভাষী মহাসভা সারা দল, মত, ধর্ম নির্বিশেষে সারা বিশ্বের বাঙালিদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। যাতে বাংলা ভাষা ও বাঙালির সংস্কৃতির মান উন্নয়ন ও বঞ্চনা, অত্যাচার থেকে সুরক্ষিত করা যায়। বিভিন্ন রাজ্য ও দেশে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। বিশ্বের মাঝে বাঙালিকে সেরা হিসেবে প্রতিপন্ন করা যায়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের সমস্যার সমাধানে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এজন্য প্রধান ভূমিকা নিতে হবে বাংলার বাঙালিকে। তাঁদের দায়িত্ব নিতে হবে দেশ ও বিশ্বের সমস্ত বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করা। যাতে বাঙালি সমাজ এগিয়ে যেতে পারে। সমস্ত বাঙালি সমাজকে একজোট হয়ে এই লড়াইয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া, নেতৃত্বদান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে এগিয়ে আসা।