• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

সরানোর নির্দেশ মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি মুকেশ কুমারকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুর, ১৫ এপ্রিল— লোকসভা নির্বাচনের আগে ডিআইজি (মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ) মুকেশ কুমারকে অপসারণের নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন৷ সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ সেই সঙ্গে শূন্যস্থান পূরণে এদিন বিকেল ৫টার মধ্যে তিনজন আধিকারিকের নাম পাঠাতে রাজ্যকে নির্দেশ কমিশনের৷ রাজ্যের পাঠানো তিনজন আধিকারিকের মধ্য থেকেই একজনকে বেছে নেবে কমিশন৷ এদিকে এদিন সাংবাদিকদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুর, ১৫ এপ্রিল— লোকসভা নির্বাচনের আগে ডিআইজি (মুর্শিদাবাদ রেঞ্জ) মুকেশ কুমারকে অপসারণের নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন৷ সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ সেই সঙ্গে শূন্যস্থান পূরণে এদিন বিকেল ৫টার মধ্যে তিনজন আধিকারিকের নাম পাঠাতে রাজ্যকে নির্দেশ কমিশনের৷ রাজ্যের পাঠানো তিনজন আধিকারিকের মধ্য থেকেই একজনকে বেছে নেবে কমিশন৷ এদিকে এদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরি খুব পরিষ্কার ভাষায় জানান, অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলেই তাঁকে সরানো হয়েছে৷ সেই সঙ্গে তিনি এও জানান, পুলিশের ড্রেসে একজন ক্রিমিনালের নাম মুকেশ কুমার৷ তিনি আরও মারাত্মক অভিযোগ করে বলেন, বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় অপসারিত আইপিএস পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছিলেন৷

সূত্রের খবর, এই আইপিএস আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিরোধীরা প্রথম থেকেই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে আসছিল৷ ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতের একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে৷ বিশেষ করে কংগ্রেস এবং বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করা হয়৷ সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে নির্বাচন কমিশন৷ অভিযোগের সত্যতা মেলার পরেই তাঁকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ অপসারিত ডিআইজি যাতে ভোটের কোনও কাজে যুক্ত থাকতে না পারেন, সেকারণে তাঁকে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মুকেশ কুমার মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন৷ সেই সময় থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সরব হয় কংগ্রেস এবং অধীর চৌধুরি৷ পরবর্তীতে তাঁকে পুলিশ সুপারের পদ থেকে সরানো হলেও, তাঁকে মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি পদে বসানো হয়৷

এদিকে, এদিন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অধীর চৌধুরি৷ মুকেশকে অপসারণ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন অধীরবাবুকে৷ উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিযোগ সত্য, তাই তাঁকে সরিয়েছে৷ বহরমপুরের মানুষকে, মুর্শিদাবাদের মানুষকে কথা দিয়েছি, নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণভাবে, নিরাপদে এবং নির্ভয়ে৷ এই কথা আমি দিতে পারি না৷ আমি নির্বাচন কমিশনে একাধিকবার দেখা করেছি৷ নির্বাচন কমিশন আমাকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবারের লোকসভা নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে৷ তাদের কথায় ভরসা রেখে আমি মানুষকে বলেছিলাম, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে৷ এই নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য যারা চেষ্টা করছে, তাদের মধ্যে নম্বর ওয়ান পুলিশের ড্রেসে একজন ক্রিমিনাল৷ তাঁর নাম মুকেশকুমার৷

কথাটা শুনতে খারাপ লাগতে পারে৷ পুলিশের ড্রেসে বলেছি৷ মানসিকভাবে তিনি একজন ক্রিমিনাল মানসিকতার অফিসার৷ তিনি আইপিএস৷ নিশ্চয়ই শিক্ষিত৷ কিন্ত্ত পুলিশের ড্রেসে তিনি যেটা করেছেন, সেটা ক্রাইম৷ আজ বলে নয়৷ এই মুর্শিদাবাদের বহু বহু যুবককে মিথ্যা মাদক পাচার কেসে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছেন এই মুকেশকুমার৷ এই মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে যত গরু পাচার, বালি পাচার, সব টাকা খেয়েছেন এই মুকেশকুমার৷ এই মুকেশকুমার হচ্ছে তৃণমূল দলের আগমার্কা দালাল৷ আগমার্কা ক্রীতদাস৷ মুর্শিদাবাদে নির্বাচনের আগে ভয়ঙ্কর খেলা খেলছিল এই মুকেশকুমার৷ বিশেষ করে আমরা লোকসভা কেন্দ্র বহরমপুরে ভয়ঙ্কর খেলা খেলছে এই মুকেশকুমার৷ দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে৷ হঁ্যা, পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে৷ আর হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়কে কোনও না কোনওভাবে তৃণমূলের লোকজন উস্কাচ্ছে৷ বড় ভয়ঙ্কর খেলা খেলছে৷’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে নির্বাচন কমিশনের এই হস্তক্ষেপ একটাই ইঙ্গিত স্পষ্ট করে দিল, আগামী দিনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে৷ কোনও মস্তানি, জুলুমবাজি, কোনও বুথ দখল চলবে না৷ মানুষ যাকে খুশি ভোট দেবে৷ কিন্ত্ত তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে৷ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে৷ বহরমপুর থানার আইসি এবং খাগড়া পুলিশ আউটপোস্টের বড়বাবু এই দু’জনের নেতৃত্বে মানুষকে এখন থেকে ভয় দেখানো শুরু হয়ে গিয়েছে৷ ভোট দিতে বের হবেন না৷ খাগড়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সেখানকার এক মস্তান মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে, ভোট দিতে বের হলে দেখে নেব৷ এখন থেকে ভয় দেখাচ্ছে৷ সেই সমস্ত এলাকায় পুলিশ কিছু করবে না, আমি জানি৷ নিরাপত্তা বাহিনী যখন আসবে, সেখানে ইনটেনসিভ লং মার্চ হবে৷ বহরমপুরের মানুষ একটুও ঘাবড়াবেন না৷ আমি আপনাদের সঙ্গে আছি৷ একটুও ঘাবড়াবেন না৷’