নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি, ২ এপ্রিল– লোকসভা ভোটের নির্বাচনী ঘণ্টা বেজে গিয়েছে৷ আর ক’দিন মাত্র বাকি প্রথম দফার ভোটের৷ তার আগে রাজনৈতিক দলগুলির প্রস্তুতিপর্ব তুঙ্গে৷ কিন্ত্ত জলপাইগুড়ি জেলায় টর্নেডোর ধাক্কায় রবিবারের পর যেন থেমে গিয়েছে ভোটের প্রচার৷ ঝড়ে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে দু’দিন ধরে ভোট প্রচার কর্মসূচি বন্ধ রেখেছে রাজনৈতিক দলগুলি৷ পাশপাশি বিজেপি, সিপিএম, তৃণমূল প্রত্যেক দলের কর্মীরাই চেষ্টা চালাচ্ছেন দুর্গত এলাকায় পৌঁছে মানুষের জন্য খাবার, পরনের পোশাক, ওষুধপত্র জোগাড় করার৷ দুর্গতদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে ভেঙে যাওয়া ঘড়বাড়িও মেরামত করছেন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা৷
জলপাইগুড়ির বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘রবিবারের মিনি টর্নেডোর তাণ্ডবে বিধ্বস্ত জলপাইগুডি়র বহু গ্রাম৷ এখনও বাতাসে কান পাতলে ভেসে আসছে স্বজন হারানো কান্নার আওয়াজ৷ ধ্বংসস্তূপের মাঝে হাহাকার সাধারণ মানুষের৷ আজ প্রায় ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও রবিবারের সেই তিন মিনিটের বিভীষিকার দৃশ্য আজও বার বার ভেসে উঠছে ঘরবাডি়, ছাদ হারানো গ্রামীণ মানুষগুলোর চোখেমুখে৷ এমন পরিস্থিতিতে ভোট প্রচার থেকেও পিছু হটেছে আমাদের দল৷ সিপিআইএম-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিও দুর্গত মানুষের সেবায় কাজ করছেন৷ ময়নাগুড়ির বার্ণিশ এলাকায় মঙ্গলবার ঝড় বিধ্বস্ত মানুষদের জন্য একবেলা আহারের ব্যবস্থা করেছেন রেড ভলেন্টিয়াররা৷ জলপাইগুড়ির বাম প্রার্থী দেবরাজ বর্মণ বলেন, ‘যেভাবে করোনার সময় আমরা মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছি৷ সেভাবেই ঝড়ে বিপর্যস্ত জলপাইগুড়ির মানুষকে সাহায্য করটাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য৷ ভোট আসবে, যাবে৷ কিন্ত্ত মানুষের এই বিপদের দিনে তাদের পাশে থাকাটাই মূল কর্তব্য বলে মনে করে আমাদের দল৷’
দেবরাজ বর্মণের মতই জলপাইগুড়ির বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত কুমার রায়কে মঙ্গলবার দেখা গেল জলপাইগুড়ি শহর ও ময়নাগুড়ির ঝড় বিধ্বস্ত এলাকায় চষে বেড়াতে৷ ত্রাণ শিবিরে গিয়ে মানুষের খোঁজ খবর নিতে৷ জয়ন্তবাবু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন এই বিপদে মানুষের পাশে থাকার জন্য৷ তাই দু’দিন সমস্ত নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচি বাদ রেখেছি৷’ জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়ও দু’দিন ধরে ময়নাগুড়ির বার্ণিশ, পুটিমারি ইত্যাদি ঝড়-বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে ঘটনার দিনই রাতে জলপাইগুড়ি পৌঁছে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাতে আমরাও উদ্বুদ্ধ৷ আমাদের দল ভোটের জন্য মানুষের পাশে দাঁড়ায় না৷ সারা বছর আমরা এভাবেই কাজ করি৷’
তবে রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি গ্রীণভ্যালি জলপাইগুড়ি সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিও টর্নেডোয় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে৷