দিল্লি, ১ এপ্রিল– দেশের শীর্ষ আদালত নির্বাচনী বন্ডকে নিষিদ্ধ করতেই বেরিয়ে আসে সর্ষের মধ্যে ভূত৷ এসবিআইয়ের দেওয়া তথ্যে জানা যায় নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছে দেশের শাসকদল বিজেপি৷ এরপরই বিরাট আকারের দুর্নীতি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে কার্যত তোলাবাজ দাবি করে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা৷ নির্বাচনী বন্ডকে সঠিক দাবি করে এরপর আসরে নেমে আসেন স্বয়ং মোদি৷ এবার সেই পথে হেঁটেই বিজেপির প্রবীণ নেতা নিতিন গড়কড়ী টিআরপি তত্ত্ব খাড়া করেছেন৷ তিনি বললেন, টিভিতে যাদের টিআরপি বেশি তারাই বিজ্ঞাপনে ভাল দর পায়৷ সুতরাং কেন্দ্রীয় শাসক দল হিসেবে বিজেপি যে বেশি অনুদান পেয়েছে, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই৷
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিতিন রবিবার টিভির সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘‘এমনকি টেলিভিশন মিডিয়াতেও যাদের টিআরপি বেশি তারা বিজ্ঞাপনে ভাল দর পায়৷ যাদের টিআরপি কম তারা কম দরে বিজ্ঞাপন পায়৷ আজ আমরা শাসক দল, তাই আমরা বেশি অনুদান পেয়েছি৷ কাল অন্য কোনও দল ক্ষমতায় এলে তারাও অনুদান পাবে৷” নাগপুর থেকে প্রার্থী হওয়া নিতিনের পাল্টা প্রশ্ন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই অর্থের প্রয়োজন এবং তার সংস্থান বাড়াতে একটি আইনি উপায় খুঁজে বের করা দরকার ছিল৷ নির্বাচনী বন্ড সেই কাজটাই করেছে৷
বিরোধীদের প্রতি গডকড়ীর পরামর্শ, মতাদর্শের প্রতি সৎ থেকে ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করলেই সাফল্য আসে৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি যখন জরুরি অবস্থার সময় রাজনীতিতে প্রবেশ করি এবং জয়প্রকাশজির সঙ্গে কাজ শুরু করি, তখন পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে অনুকূল ছিল না৷ কিন্ত্ত একদিন অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী হলেন৷
প্রবীণ এই বিজেপি নেতা সরকার ইডি, সিবিআই এবং আয়কর বিভাগকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, তা-ও মানতে রাজি নন৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আইন তার নিজের পথে চলছে৷ এর সঙ্গে বিজেপি বা মোদিজির কোনও সম্পর্ক নেই৷ আইন অনুযায়ী মামলা নথিভুক্ত হয়েছে৷ এজেন্সিগুলো তাদের কাজ করে যাচ্ছে৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কাউকে অস্ত্র করছি না৷ এখন কারও বাডি়তে ৩০০-৪০০ কোটি টাকা পাওয়া গেলে মানুষ দেখে৷ তার পর তদন্ত হয়৷ কেউ অন্যায় করে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ যদি কেউ এতে ক্ষুব্ধ হয়, তবে তার আদালতে যাওয়ার রাস্তা আছে৷’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৩৭০ আসন জয়ের লক্ষ্যে আস্থা রেখে গডকড়ী দাবি করেছেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ৪০০ আসন অতিক্রম করবে এবং নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই৷ দক্ষিণ ভারতে বিজেপি এ বার ভাল ফল করবে বলে আশা রাখছেন তিনি৷ তাঁর মতে, ‘আমরা তামিলনাড়ু, কেরল, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কর্নাটকে কঠোর পরিশ্রম করেছি৷ এ বার আমরা তেলঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে ভাল করব৷’ এবং সেই জোরেই বিজেপি ৩৭০-এর লক্ষ্য অর্জন করবে৷