• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

পাহাড়ের প্রার্থী নিয়ে জল্পনা

ওয়াকিবহাল মহল মনে করছিল যে, পাহাড় ও সমতলের পরিচিত মুখ বিনয় তামাংকেই দার্জিলিং আসনে প্রার্থী করতে পারে কংগ্রেস৷ কিন্ত্ত দিল্লি গিয়ে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ডের নাম লেখানো ও তাঁর এক ‘সঙ্গী’ কংগ্রেসে যোগ দিতেই আপাতত সেই জল্পনায় জল পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে৷ কংগ্রেস সূত্রে খবর, অজয় চাইছেন, তাঁর ‘সঙ্গী’কেই দার্জিলিঙে

ওয়াকিবহাল মহল মনে করছিল যে, পাহাড় ও সমতলের পরিচিত মুখ বিনয় তামাংকেই দার্জিলিং আসনে প্রার্থী করতে পারে কংগ্রেস৷ কিন্ত্ত দিল্লি গিয়ে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ডের নাম লেখানো ও তাঁর এক ‘সঙ্গী’ কংগ্রেসে যোগ দিতেই আপাতত সেই জল্পনায় জল পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে৷

কংগ্রেস সূত্রে খবর, অজয় চাইছেন, তাঁর ‘সঙ্গী’কেই দার্জিলিঙে হাত শিবিরের প্রার্থী করা হোক৷ বিরোধী জোটে অজয় যেতে পারেন বলে সম্প্রতি কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল পাহাডে়৷ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ পাহাড় হয়ে যাওয়ার সময় তাতেও যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল হামরো প্রধানকে৷ এর পর আনুষ্ঠানিকভাবে দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে গিয়ে বিরোধী জোটে যোগ দেন অজয়৷ কংগ্রেস সূত্রে খবর, অজয় সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন পাহাড়েরই নেতা মুনীশ তামাংকে৷ মুনীশ কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন৷

দলীয় সূত্রে দাবি, সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি (এআইসিসি)-র কাছে অজয়ের দাবি ছিল, দিল্লিবাডি়র লড়াইয়ে মুনীশকে দার্জিলিঙের প্রার্থী করা হোক৷ বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরোধী একাধিক রাজনৈতিক দলের সদস্যদের নিয়ে পাহাডে় এক বার গোর্খাল্যান্ড টাস্ক ফোর্স (জিটিএফ) গড়া হয়েছিল৷ তার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মুনীশ৷ তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও৷ কংগ্রেস সূত্রের দাবি, অজয়ের দাবিতে আপাতত সম্মতি দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব৷ সব কিছু ঠিক থাকলেই তাঁকেই প্রার্থী করা হবে৷

যদিও এ ব্যাপারে এখনই কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ৷ পাহাডে় কংগ্রেসের একাংশ চাইছিলেন, বিনয়কে এবার প্রার্থী করা হোক৷ কংগ্রেস সূত্রে খবর, প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের বড় অংশ এআইসিসি-র কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল৷ প্রার্থী ও বাম জোট নিয়ে নানা আলোচনা এবং ‘ধোঁয়াশার’ মধ্যেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দিল্লিতে হাইকমান্ডের সঙ্গে বিনয় প্রসঙ্গে কথা বলেছেন৷ রাজ্যের একাংশ বিনয়ের নামই প্রস্তাব করেছেন৷ দলের একাংশের যুক্তি ছিল, বিনয়কে প্রার্থী করা হলে অজয়ের সমর্থন পাওয়া যেতে পারে৷ আবার বিমলকেও বিনয়ের জন্য অনুরোধ করার জায়গা তৈরি হবে৷ কারণ, পাহাডে়র বর্তমান শাসক দল অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিন জনকে গত বছর এক সঙ্গে দেখা গিয়েছে৷ তাছাড়া, কংগ্রেস গত তিন দশকে পাহাডে়র জন্য কী কী করছে, তা প্রচারের বিষয় করে গোর্খা মুখ হিসাবে বিনয়কে রাখলে কংগ্রেস দার্জিলিঙে লড়াইয়ের জায়গা তৈরি করতে পারবে বলে মনে করছিলেন তাঁরা৷ কংগ্রেস সূত্রে দাবি, বিনয় অবশ্য প্রথমে রাজি না থাকলেও, পরে তিনি মত বদলেছিলেন৷

গত কয়েক দিন ধরে নিয়মিত পাহাডে়র পুরনো কংগ্রেস নেতা, কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ বিভিন্ন দলের পরিচিতদের সঙ্গেও কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের পাহাডে়র দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিনয়৷ প্রকাশ্যেই জানিয়েছিলেন, দল চাইলে তিনি প্রার্থী হবেন৷ কংগ্রেস নেতাদের দাবি, পাহাডে় তৃণমূলের প্রতি একটা অংশের খুব একটা আস্থা নেই৷ সেখানেই অনীতদের লড়াইটা কঠিন৷ বিজেপি গত ১৫ বছরের আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি ছাড়া, পাহাডে়র জন্য আলাদা করে কিছু না দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে৷ সে জায়গা থেকে বিনয়কে সামনে রেখে লড়াইয়ে নামতে চাইছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ৷ পাহাডে়র এক কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘২০০৭ সালের পর থেকে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে প্রতিটা ভোটে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন বিনয়৷

গুরুংয়ের সঙ্গ ছেডে় এসেও বিধানসভা ভোটে লডে়ছেন৷ পাহাডে়র ভোটের হিসাব সম্পর্কে তাঁর বিশদ ধারণা রয়েছে৷ তাই বিনয়ই যোগ্য প্রার্থী হতে পারেন৷’ আচমকাই কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে মুনীশের নাম ভেসে ওঠায় বেঁকে বসেছেন সদ্যই তৃণমূল ছেডে় যাওয়া বিনয়৷ মুনীশের কংগ্রেসে যোগদান প্রসঙ্গে বিবৃতি দিয়ে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এই যোগদানে তাঁর সম্মতি নেই৷ মুনীশকে প্রার্থী করা হলে তিনি মানবেন না বলেও জানিয়েছেন বিনয়৷ যদিও এ প্রসঙ্গে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সহ-সম্পাদক জীবন মজুমদার বলেন, ‘বিনয় তামাংকে আমরা প্রার্থী হওয়ার কথা বললেও সে পরিষ্কার ভাবে কিছু জানায়নি৷ পরবর্তীতে তিনি পিছিয়ে যান৷ অজয় নিজে থেকেই ভারত জোড়ো যাত্রায় শামিল হয়েছেন৷ একাধিক বার বৈঠক হয়েছে৷ অজয় কলেজের এক প্রফেসরকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়েছে৷ অজয়ের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে পাহাডে়৷ তবে এ বার কোনও দলই খুব সহজেই পাহাডে় জয় পাবে না৷ বিজেপি ভুল বোঝাচ্ছে৷ রাজ্যের শাসকদলও তা-ই করছে৷ আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, আলাদা রাজ্য বা স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের মধ্যে আমরা নেই৷ পাহাডে়র উন্নয়নের জন্য রয়েছি৷’ এখন দেখার কংগ্রেস তাদের প্রার্থী হিসাবে কার নাম ঘোষণা করে পাহাড়ে৷