বাঙালী যেখানে যায় সেখানেই নাকি ভাত আর মাছ খোঁজে৷ তাই নিয়ে বাঙালিদের উপহাস করতেও ছাডে় না অবাঙালিরা৷ এমন কথা বাঙালীদের ক্ষেত্রে প্রায় শোনা যায়৷ তবে ভবিষ্যতে আর শোনা যাবে কিনা সন্দেহ৷ কারণ এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এখন শুধু বাঙালী নন মৎসসুখে মজেছেন অবাঙালীরাও৷
তবে মাছ খাওয়ার ব্যাপারে বাঙালীদের নাম সবার ওপরে উঠে এলেও বেশি পরিমাণে মাছ খাওয়ার তালিকার শীর্ষে কিন্ত্ত বাংলা নেই৷ রয়েছে ত্রিপুরা৷ ত্রিপুরা দিনপ্রতি ৯৯.৩৫ শতাংশ মানুষ মাছ খান৷ সব থেকে কম খান হরিয়ানার লোক৷ সেখানে ২০.৫৫ শতাংশ মানুষ রোজ মাছ খান৷
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট বলছে, এখন শুধু বাঙালিরাই নন, দেশের অধিকাংশ মানুষ মাছ খেতে ভালোবাসেন৷ নিরামিষ ও আমিষ খাবার নিয়ে কয়েক বছর হল বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অনেক শহরেই বাঙালিদের ঘরভাড়া দিতে চান না অনেকে৷ তার কারণ বাঙালিরা মাছ-মাংস খায়৷ আদ্যন্ত নিরামিষাশীদের দাবি, প্রাণিজ প্রোটিন অনেক রকমের ক্ষতি করে৷ শরীর ছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে৷ অহেতুক প্রাণী হত্যারও বিরোধী অনেকে৷ কিন্ত্ত, সমীক্ষা বলছে, ধীরে ধীরে দেশের মানুষের মধ্যে মাছ খাওয়ার চল বাড়ছে৷ ভারতে মাছ খাওয়ার প্রবণতা তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেডে়ছে৷ এর কারণ হিসেবে রিপোর্টে রয়েছে, দ্রুত হারে জনসংখ্যা ও মানুষের রোজগার বৃদ্ধিতে বহু মানুষ মাছ খাচ্ছেন এবং কেনার সামর্থ্য অর্জন করেছেন৷
আইসিএআর ছাড়াও কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক এবং ওয়ার্ল্ড ফিশ ইন্ডিয়া এই সমীক্ষা চালিয়েছে৷ ২০০৫-২০০৬ এবং ২০১৯-২০২১ সালের খাদ্য প্রবণতার তুলনা করে এই তথ্য মিলেছে৷ রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে মৎস্যবিলাসীর সংখ্যা ২৩ কোটি বেডে়ছে৷ পরিসংখ্যানের ভাষায় ৬৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭২.১ শতাংশ হয়েছে৷ অর্থাৎ ৬.১ শতাংশ বেডে়ছে মৎস্যভোগীর সংখ্যা৷ বা ১৩৪ কোটি ভারতীয়ের মধ্যে ৯৬.৬ শতাংশ মানুষ মাছ খান৷ ২০১৯-২০ সালে মাত্র ৫.৯৫ শতাংশ মানুষ রোজ মাছ খেতেন৷ সপ্তাহে একদিন মাছ জুটত ৩৪.৮ শতাংশ মানুষের৷ আর কখনো সখনো মাছ খেতেন ৩১.৩৫ শতাংশ মানুষ৷