এখন মানুষের কাছে সময়ের বড়ই অভাব৷ তাই দূর-দূরান্তে যাত্রা করতে হলে বিমান ভ্রমণকে বেছে নেন তারা৷ যদি পকেট পারমিশন দেয়৷ আসলে বিমান করে ভ্রমণ অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের৷ এতে যেমন সময় বাঁচে, তেমনই ভ্রমণ হয় আরামদায়ক৷ বিমানে ইকোনমি ক্লাস, বিজনেস ক্লাস এবং ফার্স্ট ক্লাসের সঙ্গে পরিচয়ও হয়তো অনেকের হয়েছে৷ বিমানের পরিষেবা নিয়েও প্রায় সকলেই অবগত৷ কিন্ত্ত ফ্লাইটের জটিলতা সম্পর্কে অনেকেই হয়তো অবগত নন৷ আজ বিমানের এমন কিছু কথা আপনাকে জানাই যা জানলে হয়তো বিমানে ওঠার কথাও ভাববেন না অনেকেই৷ আবার অনেকের কাছেই এটা নিছক তথ্য সংগ্রহও হতে পারে৷
এটি এমন এক বিষয় যা অনেকে আবার জেনে হেসে উডি়য়ে দেন৷ কেউ কেউ অস্বস্তিতে পডে়ন৷ কিন্ত্ত আপনি কি জানেন যে, উড়ো জাহাজের ইঞ্জিনে মুরগি নিক্ষেপ করা হত? আপনাদের মধ্যে অনেকেই এই আজব কথা হয়তো আগে শুনেছেন৷ তবে বেশিরভাগ পাঠকই হয়তো এটা জানতেন না৷ তবে এটা কিন্তু মজা পেতে বা কুসংস্কারের ছলে মোটেই করা হত না এরপেছনে কারণটা একদম বৈজ্ঞানিক৷ আসলে ইঞ্জিন পরীক্ষার জন্যই এমন কাজ করার নিয়ম ছিল৷ নিশ্চয়ই শুনেছেন যে অনেক সময় পাখিরা উডে় যাওয়া ডানার বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খায়৷ এ কারণে হাজার হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে৷ এমন পরিস্থিতিতে বিমানে পাখির হামলার বিরুদ্ধে পরীক্ষা করার জন্য মুরগি নিক্ষেপ করা হত৷ এই অবস্থায়, একটি চিকেন গানের মাধ্যমে একটি মুরগিকেও ইঞ্জিনে নিক্ষেপ করা হত৷ সবটাই হত যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে৷
দুর্ঘটনা এড়াতে করা হত এই পরীক্ষা৷ একটি পাখির কারণে ফ্লাইটে বসা প্রত্যেক যাত্রীর জীবন বিপন্ন হওয়ার ভয় থাকে৷ পাখির আঘাতের কারণে বিমানের ইঞ্জিন কাজ করা বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ সেটা পরীক্ষা করতেই মুরগি নিক্ষেপের সিদ্ধান্ত৷ এই প্রক্রিয়ার জন্য ২ থেকে ৪ কেজি ওজনের মুরগি ব্যবহার করা হত৷ এই পরীক্ষা আজ থেকে নয়, বহু বছর ধরেই করা হচ্ছে৷ এর মাধ্যমে ইঞ্জিনে আগুন লেগেছে কিনা তাও পরীক্ষা করা হত৷
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের মতে, যখনই কোনও বিমান বাতাসে ভেসে যায় বা অবতরণ করে, তখন সবসময়ই পাখির আঘাতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে৷ যা বিমান এবং বিমানযাত্রীদের ক্ষতি করতে পারে৷ সেই কারণেই উড়োজাহাজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলি মুরগি নিক্ষেপ করে পরীক্ষা করে৷ এই প্রক্রিয়াটিকে ‘বার্ড ক্যানন’ বলা হয়৷ কখনও কখনও এগুলি নকল পাখি বা এমনকি মৃত মুরগি দিয়েও করা হত৷
প্রথম ১৯৫০ সালে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়৷ ১৯৫০-এর দশকে হার্টফোর্ডশায়ারের ডি হ্যাভিল্যান্ড এয়ারক্রাফ্টে এটি প্রথমবার পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ সেই পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছিল মৃত মুরগি এবং ইঞ্জিনে আগুন লেগেছে কিনা তাও পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ সেই সময় পরীক্ষার সময় একটি মুরগিকে ইঞ্জিনে বসানোও হয়৷ পরীক্ষাটি সফল হয়েছিল এবং কোনও সমস্যা ছাড়াই সেই মুরগি ইঞ্জিন থেকে বেরিয়ে আসে৷ এই কাহিনি ছডি়য়ে যাওয়ার পরে অন্যান্য স্থানেও এই পরীক্ষা শুরু হয়৷ কিন্ত্ত আজকাল এমনটা হয় না বা খুব কমই ঘটে৷ কারণ এখন ইঞ্জিন পরীক্ষার জন্য অনেক আধুনিক পদ্ধতি এসে গেছে৷