আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ১৬ মার্চ– তৃণমূল কংগ্রেসের ’মঙ্গল’ করতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার লোকসভা ভোটের মুখে সিএএ লাগু করেছে৷ এমনটাই দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা ঠাকুরনগরের ঠাকুর বাড়ির সদস্য মমতাবালা ঠাকুর৷ আর এ নিয়ে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক মহলে৷ পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার জৌগ্রামে মতুয়াদের সম্মেলনে যোগ দিয়ে মমতাবালা ঠাকুর ওই মন্তব্য করেছেন৷ আর লোকসভা ভোটের আগে ওই মন্তব্য বিরোধী শিবিরের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়৷ মমতাবালা ঠাকুর ছাড়াও সম্মেলনে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেস জামালপুর ব্লক সভাপতি মেহেমুদ খান, বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি সহ অন্যান্যরা৷
মতুয়াদের সম্মেলনে যোগ দিয়ে সিএএ নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিলেন মমতাবালা ঠাকুর৷ বললেন ‘এটা লালিপপ৷’ এটা করে আমাদের তৃণমূল দলের জন্য মঙ্গল করেছে৷ তবে বিজেপি নেতারা মমতাবালা ঠাকুরের এই মন্তব্যকে কোন গুরুত্ব না দিলেও কংগ্রেস নেতৃত্ব এটিকে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে হয়ে যাওয়া ‘সেটিংয়েরই’ দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছে৷ জৌগ্রামের কলুপুকুরে শুরু হয়েছে মতুয়াদের তিন দিনের মহা সম্মেলন৷ প্রধান অতিথি তথা সংঘাধিপতি হিসাবে এদিন সেই সম্মেলনে যোগদেন মমতাবালা ঠাকুর৷
তারই মধ্যে ধর্মীয় কার্যক্রম সেরে মমতাবালা ঠাকুর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন৷ তিনি বলেন, সিএএ তে ৯টি ধারায় জন্য যে যে ’ডকুমেন্টস’ চাওয়া হয়েছে সেই ‘ডকুমেন্টস’ কারুর কাছেই নেই৷ মমতাবালা প্রশ্ন তোলেন, এই ‘ডকুমেন্টস’ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও আছে কি? এটা আসলে লালিপপ ছাড়া আর কিছুই নয় ৷ এর আগে আধার ‘লক’ করে ঘুরিয়ে এনআরসি করতে চেয়েছিল৷ বিজেপি এখন শুধু ভোটটা নেওয়ার জন্যে লোকসভা নির্বাচনের আগে সিএএ লাগু করেছে৷ ‘এটা করে ওরা বাস্তবে আমাদেরই মঙ্গল করেছে বলে মমতা বালা ঠাকুর মন্তব্য করেন৷’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, আমরা নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই৷ ওরা (বিজেপি) কোন ভাবেই আমাদের বেনাগরিক করতে পারবে না৷ যদি তা করতে যায় তবে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো৷ তার জন্য জীবন যায় যাবে৷
এদিকে বিজেপি সিএএ লাগু করায় তৃণমূলের মঙ্গল হয়েছে বলে মমতা বালা ঠাকুরের করা মন্তব্য ঘিরে এখন সরগরম রাজনৈতিক মহল৷ কংগ্রেসের এআইসিসি সদস্য গৌরব সমাদ্দার বলেন, ‘যেটা সত্য সেটাই মমতাবালা ঠাকুর ফাঁস করে দিয়েছেন৷ ‘কেন্দ্রে মোদি আর এই রাজ্যে দিদি’, এই সেটিংতো অনেকদিন ধরেই চলছে৷ মমতাবালা ঠাকুরের মন্তব্যই প্রমাণ করে দিয়েছে৷ তবে কংগ্রেসের সেটিং তত্ত্ব খারিজ করে দিয়ে জেলা বিজেপি নেতা মৃতু্যঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন কংগ্রেস নেতাদের মন্তব্যকে বাংলার মানুষ কোন গুরুত্ব দেয় না৷ কেন্দ্রের মোদি সরকার কারুর নাগরিকত্ত্ব কেড়ে নিতে চায় নি, নাগরিকত্ত্ব দিতে চেয়েছে৷ তাই কেন্দ্রের সরকার সিএএ করেছে৷ সেটা না বুঝে তৃণমূলের মতই কংগ্রেস ও সিপিএমের নেতারা বিরোধীতা করছে৷ এমনকি আজগুবি গল্পও তাঁরা ফেঁদে চলেছে৷