দিল্লি, ১৪ মার্চ – ভারতের নির্বাচন কমিশনের পরবর্তী দুই নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ হতে চলেছেন অবসরপ্রাপ্ত দুই সরকারি আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার এবং সুখবীর সিং সান্ধু। বৃহস্পতিবার এই কথা জানিয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি। তিন সদস্যের কমিটির বৈঠকে এই দুজনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন অধীর। তিনি আরও জানিয়েছেন সুখবীর সিং সান্ধু পাঞ্জাবের এবং জ্ঞানেশ কুমার কেরলের বাসিন্দা ।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তাঁদের নাম ঘোষণা করার আগেই, দুই নির্বাচন কমিশনারের নাম জানিয়ে দেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে তিন সদস্যের এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে দুই নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের জন্য বৈঠক হয়। লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে এই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন অধীর। এছাড়া, কমিটির তৃতীয় সদস্য হিসেবে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠক থেকে বেরিয়ে অধীর জানান, দুই নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের জন্য তাঁদের সামনে ছয়টি নাম ছিল। তালিকায় জ্ঞানেশ কুমার এবং সুখবীর সিং সান্ধু ছাড়াও ছিল উৎপল কুমার সিং, প্রদীপ কুমার ত্রিপাঠি, ইন্দিবর পান্ডে এবং সুধীর কুমার গঙ্গাধরের নাম।
নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার অনুপ চন্দ্র পাণ্ডের অবসরের কারণে একটি পদ আগেই খালি হয়েছিল। কয়েক দিন আগে অন্য একজন কমিশনার অরুণ গোয়েল ইস্তফা দেন। ফলে দুই নির্বাচন কমিশনারের পদ খালি হয়ে যায়। রয়ে গিয়েছিলেন একমাত্র প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এই ঘটনায় দ্রুত শূন্যপদ পূরণে বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কমিটি।
তবে, বৈঠকের আগে বারবার চাওয়া সত্ত্বেও সম্ভাব্য নামের তালিকা তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অধীর। ফলে তাঁর দাবি , তিনি নিয়োগের আগে মূল্যায়নের সময় পাননি ।অধীর বলেছেন, “বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, আমি এবং অর্জুন রাম মেঘওয়ালের নেতৃত্বাধীন সার্চ কমিটির সদস্যরা ছিলেন। বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগেই, আমি বাছাই করা নামগুলির তালিকা চেয়েছিলাম। চূড়ান্ত নাম বাছাইয়ের আগে সম্ভাব্য অফিসারদের নামের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হয়। আমি সেই তালিকা চেয়েছিলাম। আমি যদি দিল্লি পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই তালিকাটি পেতাম, তবে আমি প্রার্থীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারতাম। কিন্তু আমাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি।”
কংগ্রেস নেতার আরও দাবি, বুধবার রাতে তিনি দিল্লিতে এসেছেন। তারপর তাঁর হাতে ২১২ জনের নামের তালিকা দেওয়া হয়। কিন্তু নিয়োগের ১০ মিনিট আগে আবার তাঁকে ৬টি নাম দেওয়া হয়। অধীর বলেছেন, “ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছেন এবং বিরোধী পক্ষ থেকে একমাত্র আমি। কাজেই, প্রথম থেকেই এই কমিটিতে সরকারের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার যা চাইবে, তাই হবে। সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ীই নির্বাচন কমিশনার বাছাই করা হবে।”
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে নির্বাচন কমিশনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনের নিয়োগের কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও দেশের প্রধান বিচারপতি থাকবেন। সেই কমিটির প্রস্তাব মতো রাষ্ট্রপতি নিয়োগের অনুমোদন দেবেন। কিন্তু পরে আইন করে সুপ্রিম কোর্টের রায় বদলে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। অধীর বলেন , ‘ সরকার এমন এক আইন করেছে যাতে প্রধান বিচারপতি হস্তক্ষেপ করতে না পারেন এবং কেম্রিয় সরকার তাদের পছন্দ মতো নাম বেঁচে নিতে পারে। এই পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ। ‘