• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

৪টি রুটে বাণিজ্যিকভাবে মেট্রো পরিষেবা শুরু হচ্ছে এই সপ্তাহেই

নিজস্ব প্রতিনিধি: আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি। মানুষ মেট্রোতে উঠে, অবাধে যে কোনও প্রান্তের, যে কোনও রুটে যেতে পারবেন। কারণ, কলকাতাকে এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে মেট্রো। কয়েকদিনের মধ্যেই গঙ্গার নিচে থেকে মেট্রো পরিষেবা পাবেন সাধারণ মানুষ। শুধু তা-ই নয়, শহরেরই একটি মেট্রো স্টেশন থেকে ৩২টি স্টেশনে যাতায়াত করতে পারবেন মেট্রো যাত্রীরা! শুধু সেই স্টেশনে

নিজস্ব প্রতিনিধি: আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি। মানুষ মেট্রোতে উঠে, অবাধে যে কোনও প্রান্তের, যে কোনও রুটে যেতে পারবেন। কারণ, কলকাতাকে এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে মেট্রো। কয়েকদিনের মধ্যেই গঙ্গার নিচে থেকে মেট্রো পরিষেবা পাবেন সাধারণ মানুষ। শুধু তা-ই নয়, শহরেরই একটি মেট্রো স্টেশন থেকে ৩২টি স্টেশনে যাতায়াত করতে পারবেন মেট্রো যাত্রীরা! শুধু সেই স্টেশনে নেমে গন্তব্যের মেট্রোতে চাপলেই, পৌঁছে যেতে পারবেন কাঙ্ক্ষিত জায়গায়। সেই ভাবেই শহরজুড়ে মেট্রো রুটের জাল বোনা হয়েছে।

আগামী শুক্রবার থেকে কলকাতা মেট্রোর চারটি লাইনের নয়া অংশে বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হতে চলেছে। যথাক্রমে ব্লু লাইন, অরেঞ্জ লাইন, গ্রীনলাইন এবং পার্পল লাইনে পরিষেবা শুরু হতে চলেছে। পাশাপাশি জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো রুট, মাঝেরহাট পর্যন্ত এগিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু মেট্রোর পরিষেবার সময় এবং দু’টি মেট্রোর মধ্যে ব্যবধান নিয়ে হতাশাপ্রকাশ করেছেন অনেকে।

রুবি (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়) হচ্ছে এমন একটি স্টেশন, যেখান থেকে একাধিক রুটে যেতে পারবেন যাত্রীরা।    তাহলে দেখে নেওয়া যাক, কী ভাবে একাধিক মেট্রো স্টেশনকে একটি স্টেশন জুড়ছে।

মেট্রো যে রুটম্যাপ জারি করেছে, তার মধ্যে রয়েছে। রুবি যেতে গেলে প্রথমে মেট্রো ধরে নর্থ-সাউথ করিডরের (ব্লু লাইন)–এর কবি সুভাষ স্টেশনে পৌঁছাতে হবে যাত্রীদের। সেখান থেকে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর করিডরের (অরেঞ্জ লাইন) ধরে সোজা হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অর্থাৎ (রুবি) স্টেশনে চলে আসতে পারবেন তাঁরা।
ওদিকে হাওড়া ময়দান থেকেও একইভাবে রুবিতে পৌঁছাতে পারবেন যাত্রীরা। অবশ্য এই রুটে আসতে গেলে, বেশ কিছুটা ‘ব্রেক জার্নি’ করে ঘুরপথে আসতে হবে যাত্রীদের।

কীভাবে?
হাওড়া ময়দান থেকে রুবি আসতে গেলে, যাত্রীদের প্রথমে হাওড়া থেকে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের (গ্রিন লাইন)–এর মেট্রো ধরতে হবে। তারপর এসপ্ল্যানেডে নামতে হবে। সেখান থেকে নর্থ-সাউথ করিডরের মেট্রো ধরে কবি সুভাষে নামতে হবে। ওই স্টেশন থেকে তার পর ফের রুবি যাওয়ার মেট্রো ধরতে হবে যাত্রীদের। সেক্ষেত্রে রুবি থেকে সব রুট ধরলে, ওই একটি স্টেশন থেকে মোট ৩২টি মেট্রো স্টেশনে যেতে পারবেন যাত্রীরা। ফলে, একই টিকিটে দক্ষিণেশ্বর থেকে রুবিতে চলে আসতে পারবেন মেট্রো যাত্রীরা।

তাহলে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক যে, রুবি থেকে কোন স্টেশনে যেতে গেলে, কত ভাড়া লাগবে?
মেট্রো যে ভাড়ার তালিকা প্রকাশিত করেছে, তার মধ্যে রয়েছে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে কবি সুকান্ত পর্যন্ত ভাড়া পড়বে ৫ টাকা। আবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী স্টেশন পৌঁছতে ভাড়া লাগবে ১০ টাকা।

ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে সত্যজিৎ রায় যেতে ভাড়া পড়বে ১০ টাকা। ফের হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া এলাকার জন্য) যেতে গেলে, ২০ টাকা ভাড়া লাগবে। ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম (ব্রিজি এলাকার জন্য) ভাড়া পড়বে ২৫ টাকা।

তাছাড়া হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে কবি নজরুল (গড়িয়া বাজার এলাকার জন্য) ৩০ টাকা ভাড়া পড়বে। একইভাবে  হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে গীতাঞ্জলি (নাকতলা এলাকার জন্য) ভাড়া লাগবে ৩০ টাকা। ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে মাস্টারদা সূর্য সেন (বাঁশদ্রোণী এলাকার জন্য) ভাড়া লাগবে ৩৫ টাকা।

শুধু তা–ই নয়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে নেতাজি (কুঁদঘাট এলাকার জন্য) একই ভাড়া অর্থাৎ ৩৫ টাকাই লাগবে। আবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ এলাকার জন্য) খরচ হবে ৩৫ টাকাই। তাছাড়া হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে রবীন্দ্র সরোবর পর্যন্ত খরচ পড়বে ৪০ টাকা। ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে কালীঘাট পর্যন্ত খরচ পড়বে ৪০ টাকা। একইভাবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে যতীন দাস পার্ক পর্যন্ত ৪০ টাকা ভাড়া লাগবে। আবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে নেতাজি ভবন পর্যন্ত যেতে ৪০ টাকা ভাড়া লাগবে। আর হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত পৌঁছতে ৪০ টাকা ভাড়া লাগবে। এখানেই শেষ নয়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে ময়দান স্টেশন যেতে খরচ হবে ৪০ টাকা। ফের হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে পার্কস্ট্রিট যেতে ৪০ টাকা লাগবে। ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে এসপ্ল্যানেড যেতেও ৪০ টাকা ভাড়া পড়বে। আবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে চাঁদনি চক যেতে ৪০ টাকা ভাড়া পড়বে।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত যেতেও ৪০ টাকা লাগবে। ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে মহাত্মা গান্ধী রোড যেতে ভাড়া লাগবে ৪০ টাকা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে গিরিশ পার্ক যেতে খরচ হবে ৪০ টাকা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে শোভাবাজার সুতানটি যেতে ৫ টাকা বেড়ে, ভাড়া লাগবে ৪৫ টাকা। আবার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে শ্যামবাজার যেতে ভাড়া লাগবে ৪৫ টাকা। ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে বেলগাছিয়া যেতেও ৪৫ টাকাই ভাড়া পড়বে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে দমদম যেতেও ৪৫ টাকাই ভাড়া লাগবে। ওদিকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে নোয়াপাড়া যেতে ৪৫ টাকা লাগবে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে বরানগর যেতে ৪৫ টাকা ভাড়া পড়ছে।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে দক্ষিণেশ্বর যেতেও ৪৫ টাকা ভাড়া লাগবে।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে হাওড়া যেতে ৫০ টাকা ভাড়া লাগবে। সর্বশেষ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে হাওড়া ময়দান পৌঁছতে ৫০ টাকা ভাড়া পড়ছে।  অন্যদিকে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটেছে (পার্পল লাইন) জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো করিডোরে। মাঝেরহাট পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে মেট্রো রুট। তার সত্বেও মেট্রো সংখ্যা কার্যত বাড়ানো হল না–এই রুটে।

কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার থেকেই জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত অংশে মেট্রোর বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হবে। কিন্তু দিনে মাত্র ৩৬টি মেট্রো চালানো হবে।

অনেকের ধারণা ছিল যে মাঝেরহাট পর্যন্ত জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো এগিয়ে এলে, পরিষেবার সংখ্যা অনেকটা বাড়ানো হবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত দিনে মাত্র ১২টি মেট্রো যোগ করা হল। জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত আপাতত দিনে ২৪টি মেট্রো চলছে। সেই পরিস্থিতিতে কিছুটা হতাশ হয়েছেন যাত্রীরা। পাশাপাশি মেট্রোর পরিষেবার সময় এবং দু’টি মেট্রোর মধ্যে ব্যবধান নিয়েও হতাশাপ্রকাশ করেছেন অনেকে। সকাল ৮ টা ৩০ মিনিট থেকে পরিষেবা শুরু হবে। আর বিকেল চারটের আগে পরিষেবা শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ বিকেলের অফিসফেরত যাত্রীরা মেট্রোয় চেপে ফিরতে পারবেন না। তাঁদের সেই বাস বা অটোয় করে মাঝেরহাট স্টেশনে ফিরতে হবে বা জোকার দিকে যেতে হবে। ফলে, অফিসফেরত যাত্রীদের কোনও লাভই হল না-বলে দাবি যাত্রীদের একাংশের। অন্যদিকে, আপাতত ৪০ মিনিটের ব্যবধানে জোকা থেকে তারাতলার মধ্যে মেট্রো চলাচল করে। মাঝেরহাট পর্যন্ত এগিয়ে আসায় সেই ব্যবধানটা কমিয়ে ২৫ মিনিট করা হচ্ছে। কিন্তু সকালের অফিস টাইমে সেটাও যথেষ্ট বেশি বলে মনে করছেন যাত্রীদের একাংশ। আর সেই পরিস্থিতিতে মাঝেরহাট মেট্রো চালু হওয়ার স্বপ্নপূরণ হলেও আমজনতার কতটা লাভ হচ্ছে, তা নিয়ে ধন্দ থেকেই যাচ্ছে।

মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মেট্রো চলবে। শনিবার এবং রবিবার পরিষেবা বন্ধ থাকবে। দিনে মোট ৩৬টি মেট্রো চলবে। জোকা থেকে মাঝেরহাটে আসবে ১৮টি মেট্রো। মাঝেরহাট থেকে জোকার অভিমুখে ১৮টি মেট্রো চলাচল করবে। ২৫ মিনিটের ব্যবধানে মেট্রো চলবে। জোকা-মাঝেরহাট লাইনে জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত প্রথম মেট্রো ছাড়বে সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে। উল্টোদিকে মাঝেরহাট থেকে জোকা পর্যন্ত প্রথম মেট্রো সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে ছাড়বে। ওদিকে মাঝেরহাট-জোকা লাইনে জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত শেষ মেট্রো ছাড়বে দুপুর ৩ টে ৩৫ মিনিটে।

উল্টোদিকে মাঝেরহাট থেকে জোকা পর্যন্ত শেষ মেট্রো ছাড়বে দুপুর ৩ টে ৩৫ মিনিটে।

সেক্ষেত্রে মাঝেরহাট থেকে জোকা যেতে খরচ হবে ২০ টাকা। মাঝেরহাট থেকে ঠাকুরপুকুর যেতে খরচ হবে ২০ টাকা। আবার মাঝেরহাট থেকে সখেরবাজার যেতেও খরচ হবে ২০ টাকা। ওদিকে মাঝেরহাট থেকে বেহালা চৌরাস্তা পৌঁছতে খরচ হবে ১০ টাকা। মাঝেরহাট থেকে বেহালা বাজার যেতেও খরচ পড়বে ১০ টাকা। সর্বশেষ মাঝেরহাট থেকে তারাতলা যেতে খরচ পড়বে ৫ টাকা।