কলকাতা, ১০ মার্চ: প্রত্যাশা মতোই আজ ব্রিগেডের সমাবেশ থেকেই রাজ্যের ৪২ কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল। মঞ্চে মমতার নির্দেশ মতো এই তালিকা ঘোষণা ও প্রার্থীদের পরিচিতি দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় রয়েছে একাধিক চমক। বিভিন্ন বিধানসভার বিধায়কদের যেমন লোকসভায় প্রার্থী করা হয়েছে, ঠিক তেমনি এবারও সিনেমা ও ক্রীড়া জগতের নতুন মুখও নিয়ে আসা হয়েছে প্রার্থী হিসেবে।
বিধায়কদের মধ্যে রয়েছেন, রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, জুন মালিয়া, বিপ্লব মিত্র, বিশ্বজিৎ দাস, নির্মলচন্দ্র রায়, বিজেপি থেকে নবাগত বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী সহ একাধিক মুখ।
এছাড়া বর্ষীয়ান ও একাধিকবার নির্বাচনে জয়ী সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, শতাব্দী রায়দের মতো অভিজ্ঞ সাংসদদের তাঁদের নিজের নিজের কেন্দ্রে ফের প্রার্থী করা হয়েছে। এছাড়া তৃণমূলের নবীন সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডল, অভিনেতা দেব -এর মতো ব্যক্তিত্বরা।
নবাগতদের মধ্যে চমকপ্রদ প্রার্থীও রয়েছেন। হুগলি থেকে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয়েছে বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও দিদি নাম্বার ১ খ্যাত রচনা ব্যানার্জিকে। বহরমপুর থেকে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করা হয়েছে। তমলুক কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে দেবাংশু ভট্টাচার্যকে। যেখানে সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বিজেপি প্রার্থী করা হচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এমনকি তাঁর নামে দেওয়াল লিখনও শুরু করেছে বিজেপি।
সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হল বিষ্ণুপুরে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয়েছে তাঁরই প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা খাঁকে। যা নজিরবিহীন ঘটনা। রাজনীতিতে এই ধরণের চমক দেওয়া একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছেছে। এদিকে প্রাক্তন আইপিএস প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও প্রার্থী করেছে তৃণমূল। এছাড়া রয়েছেন কীর্তি আজাদ, শত্রুঘ্ন সিনহা, পদ্মশ্রী কালিপদ সোরেনের নামও প্রার্থী তালিকায় রাখা হয়েছে।
তবে এবারের তালিকায় নেই দুই তারকা প্রার্থী নুসরত জাহান ও মিমি চক্রবর্তী। নুসরতের জায়গায় বসিরহাট কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে এখানকার প্রাক্তন সাংসদ হাজি নুরুলকে। আর মিমির জায়গায় যাদবপুরে প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূলের যুবনেত্রী ও অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে।
এবারের প্রতিটি কেন্দ্রে এমন সব ব্যক্তিকে প্রার্থীকে করা হয়েছে, যেখানে বিজেপি যথেষ্ট চাপের মুখে। তাঁদের বিরুদ্ধে একের পর এক যোগ্য প্রার্থী দিয়ে গেরুয়া শিবিরকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে তৃণমূল।