দিল্লি, ২৯ ফেব্রুয়ারি– কম দামে তেল কেনার যে সুবিধা পাচ্ছিল ভারত, তা উধাও হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ কারণ রাশিয়ার উপরে আমেরিকা নতুন করে নিষেধাজ্ঞা৷ যার ফলে দুশ্চিন্তা ঘনিয়ে এসেছে ভারতের কপালে৷ সূত্রের খবর, এর ফলে মস্কো থেকে এ দেশে তেল আমদানি ধাক্কা খেতে পারে৷ কারণ, তা বয়ে আনতে জাহাজ পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে৷ তার জেরে বাড়তে পারে পরিবহণ খরচ৷ দামে ছাড়ও কমাতে পারে রাশিয়ার সংস্থাগুলি৷ সব মিলিয়ে তার উপর বিশ্ব বাজারে এখন ফের ঊর্ধ্বমুখী অশোধিত তেলের দাম৷ এক ব্যারেল ৮২ ডলার পেরিয়েছে৷
উল্লেখ্য, ছয় মাসের জন্য পেট্রল রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া৷ আগামী সপ্তাহ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে৷ পেট্রলের স্থানীয় চাহিদা বাড়তে থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে৷
প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন এ প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন৷
২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরের মাসে অশোধিত তেল প্রায় ১৪০ ডলারে উঠেছিল৷ আগ্রাসনের বিরোধিতায় তখন মস্কোর উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপায় পশ্চিমী দুনিয়া৷ তার পরে মূলত যুদ্ধের অর্থ জোগাডে় কম দামে তেল বিক্রি শুরু করে রাশিয়া৷ সেই সুযোগ নেয় ভারত৷ কিছু পরিণত হয় মস্কোর তেলের সর্বাধিক আমদানিকারীতে৷ আগে রাশিয়ার নামমাত্র তেল ভারতে আসত৷ ২০২২-এ দিনে গডে় ৬.৫২ লক্ষ এসেছে৷ গত বছর ১৬.৬ লক্ষ৷সূত্রের খবর, ১ এপ্রিল থেকে দিনে ৪ লক্ষ ব্যারেল পর্যন্ত তেল কিনতে রাশিয়ার সরকারি সংস্থা রসনেফ্টের সঙ্গে কথা বলছে ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম৷ কিন্ত্ত ব্যারেলে ৩-৩.৫ ডলার ছাডে়র যে প্রস্তাব রসনেফ্ট দিচ্ছে, তা ইন্ডিয়ান অয়েলের বর্তমান চুক্তির (৮-৯ ডলার) থেকে কম৷
সূত্র জানাচ্ছে, একে তো ছাড় কম৷ তার উপরে দাম মেটানোয় সমস্যা হচ্ছে৷ ফলে দেশীয় সংস্থাগুলি বিশেষ মানের অশোধিত তেল কেনা বাতিল করেছে৷ সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ঘোরালো হচ্ছে৷বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কোনও পক্ষ মুখ খোলেনি৷ তবে সরকারি সূত্রের খবর, নিষেধাজ্ঞাহীন তেলের দামের তুলনায় সস্তায় রাশিয়ার তেল পেলে, তবেই তা কিনবে নয়াদিল্লি৷
পেট্রল রপ্তানি বন্ধ করার কারণে তেল শোধনাগারগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য সময় বের করা যাবে৷ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এসব শোধনাগারের অনেকগুলো হামলার শিকার হয়েছিল৷ জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে রাশিয়া কমনওয়েলথ অব ইনডিপেনডেন্ট কান্ট্রিজের সদস্য নয়, এমন দেশগুলোতে গত মাসে পেট্রল রপ্তানি কমিয়ে দিয়েছিল৷