কলকাতা, ২০ ফেব্রুয়ারি – মঙ্গলবার সন্দেশখালি যান বৃন্দা কারাতের নেতৃত্বে সিপিএমের মহিলা ব্রিগেড। কলকাতা থেকে রওনা হওয়ার পর সন্দেশখালির পথে প্রথমে ধামাখালিতে আটকে দেওয়া হয় বৃন্দা কারাটের নেতৃত্বাধীনমহিলা প্রতিনিধিদলকে। এর পর প্রশাসনের অনুমতি মিলতেই সন্দেশখালির পথে রওনা হন বৃন্দা, কণীনিকা ঘোষ, জাহানারা খান প্রমুখ। এক সংবাদমাধ্যমে বৃন্দা বলেন, ‘‘প্রথমে আমাদের আটকানো হয়েছিল। তার পর আমরা প্রশাসনের কাছে জানতে চাই কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে। তার কোনও সদুত্তর ওরা দিতে পারেনি। শেষে অনুমতি দিতে বাধ্য হয়।’’
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৪ টে নাগাদ সিপিএমের মহিলা সংগঠন এআইডিডব্লিউএ-এর কলকাতার অফিসে পৌঁছন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত। সেখানে প্রাথমিক বৈঠক করে সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন কনিনীকা বোস ঘোষ সহ পাঁচজনের মহিলা ব্রিগেড।
সন্দেশখালিতে নতুন করে ১২ জায়গায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। বিরোধী নেতা-নেত্রীদের কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির আশঙ্কায় পুলিশ। বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাতের নেতৃত্বে মহিলা বিগ্রেড মঙ্গলবার সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু তাঁদের ধামাখালির অনেক আগেই আটকে দেয় পুলিশ। সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা শুরু হয়ে যায়। চার জনকে নিয়ে তিনি সন্দেশখালি যেতে চাইলেও পুলিশের তরফে অনুমতি দেওয়া হয়নি, এমনটাই জানান কারাত। তিনি বলেন, ‘‘এটা অগণতান্ত্রিক। পুলিশের যদি এত ক্ষমতা থাকে, তাহলে কেন শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না?”
এদিন কলকাতায় পৌঁছে বৃন্দা কারাত বলেন, “সারা দেশে সন্দেশখালির মতো ঘটনা প্রথম ঘটেছে। দীর্ঘ দিন ধরে মহিলাদের উপর অত্যাচার চলছে। সরকার কোনও পদক্ষেপ করছে না।” একইসঙ্গে বিরোধীরা চক্রান্ত করে সন্দেশখালিতে অপপ্রচার করছে বলে সরকারের তরফে যে অভিযোগ এসেছে তা ভিত্তিহীন বলে জানান বৃন্দা কারাত। তাঁর মতে, “মহিলারা নিজেরা এসে যখন তাঁদের দুর্দশার কথা জানাচ্ছেন তখন সেটা চক্রান্ত হয় কীভাবে? ”
এর আগে সন্দেশখালিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয় সিপিএম নেতৃত্বকে। সেই সময় সন্দেশখালি গিয়েছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, কনিনীকা বোস ঘোষরা। তাঁদের এলাকায় ঢুকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেয় পুলিশ। ব্যারিকেড ভেঙেই এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করেন তাঁরা।
বৃন্দাদের অনুমতি দেওয়ার খানিক ক্ষণ আগেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীদের সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দেয়। অনেকের মতে, সেই কারণেই হয়তো বৃন্দাদের সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি মেলে । কারণ ওই রায় কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়, সার্বিক ভাবে প্রযোজ্য।
দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে সন্দেশখালি।আদালতের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার সকালে সন্দেশখালির পথে রওনা হন শুভেন্দু। একইদিনে সন্দেশখালি যান সিপিআই নেত্রী বৃন্দা কারাত। সন্দেশখালির প্রবেশ পথগুলোতে মোতায়েন ছিল বিশাল বাহিনী।