লখনউ, ২০ ফেব্রুয়ারি– সোমবারই ইন্ডিয়া থেকে অখিলেশের ভাঙণের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল৷ অখিলেশ ইন্ডিয়া জোটকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস ১৭টি আসনে সন্ত্তষ্ট থাকলে তিনি রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো যাত্রায় পা মেলাবেন৷ যদিও সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমোর মান ভাঙাতে তারপরই শুরু হয়ে যায় কংগ্রেসের তৎপরতা৷ এই ঘোষণার পর সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত লখনউতে দু দলের নেতাদের দীর্ঘ বৈঠক হয়৷ কিন্তু কংগ্রেসের সব চেষ্টাই বিফলে গেল বলেই খবর৷ মঙ্গলবার ভোর রাত পর্যন্ত চলা সেই চূড়ান্ত বৈঠকও ভেস্তে গিয়েছে বলে দুই দল সূত্রে খবর৷
ফলে ইন্ডিয়া জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া দলগুলির মধ্যে এবার নাম লেখাতে চলেছে অখিলেখের সমাজবাদী পার্টিও৷ বাংলার তৃণমূল কংগ্রেস, বিহারে নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড, উত্তর প্রদেশেই রাষ্ট্রীয় লোকদল এবং কাশ্মীরের ন্যাশনাল কনফারেন্সের পর আরও একটি শরিক দলের ইন্ডিয়া জোট ছেডে় যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে৷
অখিলেশের দলের সঙ্গে কংগ্রেসের বোঝাপড়া ভেস্তে যাওয়ার কারণ হিসাবে আসন সংখ্যা নিয়ে বিবাদ যেমন আছে, তেমনই আছে পছন্দের কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক৷ কংগ্রেস মোরাদাবাদ, বিজনৌর এবং বাটলা আসন তিনটি দাবি করেছে৷ এরমধ্যে মোরাদাবাদ আসনটি বর্তমানে সমাজবাদী পার্টির দখলে৷ জেতা আসন হাতছাড়া করতে চায় না তাঁরা৷
ইন্ডিয়া জোটের ক্ষেত্রে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছিল গোটা দেশ৷ সেই তৃণমূল নেত্রীই তিনিই বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের দরজা আগেই বন্ধ করে দিয়েছেন৷ যদিও ইন্ডিয়া জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সরাসরি ঘোষণা তিনি এখনও করেননি৷
অখিলেশের ভাঙণের সূত্রপাত সোমবার৷ এদিনই রাহুল গান্ধি ভারত জোড়ো যাত্রায় পেঁৗছান উত্তরপ্রদেশে৷ মঙ্গলবার রায়বেরেলিতে তাঁর সভা করার কথা৷ সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন অখিলেশও৷ কিন্তু সোমবারই অখিলেশ স্পষ্ট করেছিলেন, রাহুলের যাত্রায় তিনি যোগ দিচ্ছেন না৷ কংগ্রেস চেয়েছিল, সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অমেঠি ও রায়বেরলিতে রাহুলের সঙ্গী হোন৷ কিন্ত্ত হাত শিবিরকে শেষ পর্যন্ত হতাশ করেছেন এসপি সুপ্রিমো৷
ফলে উত্তর প্রদেশে ৮০টি আসনে চতুর্মুখী লড়াই হতে যাচ্ছে৷ বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী সোমবারই ঘোষণা করেছেন, তিনি কোনও জোটে নেই৷ বিএসপি একাই লড়াই করবে৷ অন্যদিকে, জয়ন্ত চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় লোকদল আগেই বিজেপির হাত ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
বলা হয়, উত্তর প্রদেশে ৮০টি আসনের উপর অনেকটাই নির্ভর করে দিল্লির কুর্সি কোন দল বা জোটের দখলে যাবে৷ ২০১৯ -এ বিজেপি ৬৫ আসন দখল করেছিল৷ বাকি পনেরো আসনের মধ্যে দশটি বিএসপি এবং পাঁচটি এসপি পেয়েছিল৷ যদিও ভোটের পরই দুই দলের বোঝাপড়া ভেস্তে যায়৷ এবার ৮০টি আসনই এনডিএ-এর দখলে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি৷
তবে ইন্ডিয়া জোট থেকে এভাবে একের পর এক দল বেরিয়ে যাওয়ায় যে বিজেপির ফায়দাই হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিজেপির লক্ষ্যপূরণ ক্রমেই সহজ হয়ে যাচ্ছে৷