দিল্লি, ১৫ ফেব্রুয়ারি: আগামীকাল, শুক্রবার ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘ভারত বনধ’-এর ডাক দিল আন্দোলনরত কৃষকরা। মূলত কৃষকদের উৎপাদিত শস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়াতেই ‘গ্রামীণ ভারত বনধ’-এর ডাক দেওয়া হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত দেশব্যাপী এই বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি গোটা দেশে গ্রামীণ বনধের সঙ্গে সঙ্গে ‘শিল্প ধর্মঘট’-ও হবে। আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কলকারখানাগুলিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা কোনও কাজ করবেন না। কিষান মোর্চা ও শ্রমিক সংগঠনের সর্বভারতীয় প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি মোদী সরকার বিরোধী লিফলেট বিলি করছেন।
ইতিমধ্যে আজ বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত কৃষকদের মধ্যে বিশেষত ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন, বিকেইউ ডাকাউন্ডা বারনালা, মানসা, রাজপুরা স্টেশন সহ পাঞ্জাবের বিভিন্ন এলাকায় ‘রেল রোকো’ আন্দোলন শুরু করেছে।
এদিকে কৃষক আন্দোলনের নেতারা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, অর্জুন মুন্ডা এবং নিত্যানন্দ রাইয়ের সঙ্গে চন্ডিগড়ে আলোচনায় বসছেন বলে জানা গিয়েছে। পাঞ্জাব কিষান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সর্বান সিং পান্ধের আশা করছেন আলোচনার পর নিশ্চয় একটি সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, দিল্লির তিন সীমানায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কৃষকরা আন্দোলন চালিয়ে যান। লাগাতার আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁরা তিন কৃষক আইনকে রদ করেন। এই তিন আইন তাঁদের কাছে ছিল কালা কানুন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেসময় ক্ষমা চাওয়ার পর কৃষকরা আন্দোলন তুলে নেন।
তবে সেসময় তাঁরা জানিয়ে দেন, তাঁদের আন্দোলন শেষ হয়নি। শুধুমাত্র স্থগিত করা হয়েছে মাত্র। এমএসপি-কে আইনি গ্যারান্টি দেওয়া না হলে তাঁদের আন্দোলন চালু থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। কৃষকদের উৎপাদিত শস্যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যকে যতদিন না আইনে পরিণত করা হচ্ছে, ততদিন লড়াই চালিয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, একাধিক দাবিতে এদিন বনধের ডাক দিয়েছে কৃষকরা। তার মধ্যে রয়েছে নূন্যতম সহায়ক মূল্য, বেকারত্ব, পেনশনের দাবি ও অগ্নিবীর প্রকল্পের বিরোধিতা। অন্যান্য সংগঠনকেও এই বনধ সমর্থনে আহ্বান জানানো হয়েছে। এব্যাপারে কৃষক নেতারা ভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, পরিবহণ সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনা করেছে। পাশাপাশি সেদিন কাজ না করতে অনুরোধ করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, দোকানদার, পরিবহণ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা নেতা রাকেশ টিকাইত জানিয়েছেন, ‘আগে প্রতি অমাবস্যায় কৃষকরা কৃষি জমিতে যেতেন না। ১৬ ফেব্রুয়ারি আমরা অমাবস্যা পালন করব। আমাদের লড়াই ততদিন থামবে না, যতদিন না ন্যূনতম সহায়ক মূল্যকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে।’