মালে, ৫ ফেব্রুয়ারি – পার্লামেন্ট ভাষণে ভারত-বিরোধী অবস্থানেই অটল থাকলেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। মলদ্বীপের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর ভাষণ বয়কট করেছিল প্রধান বিরোধী দল। সোমবার মাত্র ২৪ জন সাংসদের উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখেন তিনি। প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার পরে এটাই পার্লামেন্টে মুইজ্জুর প্রথম ভাষণ। তিনি বলেন, “কোনও দেশকে আমাদের সার্বভৌম ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করতে দেব না।” যদিও তাঁর ভাষণে কোনও দেশের নাম করেননি তিনি। তবে মলদ্বীপরে সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক সম্পর্কের আবহে মনে করা হচ্ছে, ভারতের উদ্দেশেই এই বার্তা দিয়েছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়াও সোমবারের বক্তৃতায় মুইজ্জু জানান, ভারতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং দুই পক্ষই মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে রাজি হয়েছে। আগামী ১০ মে-র মধ্যে ভারতীয় সেনাদের মলদ্বীপ প্রত্যাহার করতে হবে, এমনটাই দাবি মলদ্বীপের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির।
প্রসঙ্গত, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর নেতৃত্বাধীন মলদ্বীপ সরকার সে দেশ থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য সময়সীমা বেধে দিয়েছিল ভারতকে। মুইজ্জু সরকারের ‘আর্জি’ ছিল, ১৫ মার্চের মধ্যে মলদ্বীপ থেকে সেনা সরাতে হবে। গত নভেম্বরে মলদ্বীপে ক্ষমতায় আসার পরই ভারতকে সেনা সরানোর আর্জি জানিয়েছিল ‘চিনপন্থী’ হিসাবে পরিচিত মুইজ্জু। আর তা নিয়ে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় ধরেছে বলেই মত কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। প্রতিবেশী দেশ মলদ্বীপকে ২০০৯ সালে হেলিকপ্টার উপহার দিয়েছিল ভারত। পরে আরও কিছু যুদ্ধ বিমান উপহার দেয়। একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অঙ্গ হিসাবে ভারতীয় সেনার ৮০ জন সদস্য মলদ্বীপে রয়েছে। মূলত এই বিমানগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও মলদ্বীপের সেনাকে বিমান পরিচালনায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যই মোতায়েন রয়েছেন ভারতীয় সেনা। এই সেনা নিয়েই আপত্তি মলদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর। তিনি নির্বাচনী লড়াইয়েও ভারতের বিরুদ্ধেই প্রচার করেছিলেন। পাশাপাশি মলদ্বীপের অন্তর্গত প্রত্যন্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা এবং চিকিৎসার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও রয়েছে ভারতীয় সেনার কাঁধে।
সোমবার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টের ভাষণের আগেই সেটা বয়কটের ডাক দিয়েছে মলদ্বীপের দুই প্রধান বিরোধী দল মলদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও দ্য ডেমোক্র্যাটস। ভাষণ বয়কটের কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানায়নি এমডিপি। তবে ডেমোক্র্যাটদের দাবি, যে তিনজন মন্ত্রীকে ভারত বিরোধী মন্তব্যের জেরে সাসপেন্ড করা হয়েছিল, তাদের আবার পার্লামেন্টে ফিরিয়ে আনার কারণেই ভাষণ বয়কট হচ্ছে।