• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

এক চার্জেই ৫০ বছর পার, ১২০-তেও কাজে সক্ষম

ধরুন জরুরী কোনও কথা বলছেন ফোনে, বা কোন কোন করছেন ফোনেই৷ হঠাৎ ফোনের ব্যাটারি শেষ৷ বিরক্তির শেষ সীমায় পেঁৗছে যাবে তখন আপনার ধৈর্য৷ এবার ধরুন এমন এক ব্যাটারি আপনার হাতে এল যা চলবে টানা ৫০ বছর৷ কোনও চার্জিং বা রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই৷ এমনই এক ব্যাটারি নিয়ে এল চিনা প্রতিষ্ঠান বেটাভোল্ট টেকনোলজি৷ এমন একটি ব্যাটারি, যা কোনো

ধরুন জরুরী কোনও কথা বলছেন ফোনে, বা কোন কোন করছেন ফোনেই৷ হঠাৎ ফোনের ব্যাটারি শেষ৷ বিরক্তির শেষ সীমায় পেঁৗছে যাবে তখন আপনার ধৈর্য৷ এবার ধরুন এমন এক ব্যাটারি আপনার হাতে এল যা চলবে টানা ৫০ বছর৷ কোনও চার্জিং বা রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই৷ এমনই এক ব্যাটারি নিয়ে এল চিনা প্রতিষ্ঠান বেটাভোল্ট টেকনোলজি৷ এমন একটি ব্যাটারি, যা কোনো প্রকার চার্জিং বা রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন ছাড়াই ৫০ বছর ধরে বিদু্যৎ উৎপাদন করতে পারবে৷

ব্রিটেনভিত্তিক গণমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্ট বেটাভোল্টের সূত্রে জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক ব্যাটারির সাহায্যে মোবাইল ফোন একবার চার্জ করার পর ৫০ বছরেও সেই চার্জ ফুরাবে না৷ কার্যত ফোনটি আর কখনই চার্জ করতে হবে না৷ একইভাবে এর মাধ্যমে ড্রোনও সারাজীবন উড়তে পারবে৷

নতুন এই প্রযুক্তি চার্জার অথবা বহনযোগ্য পাওয়ার ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা পুরোপুরি দূর করে ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে৷ লিথিয়াম ব্যাটারির মতো এর কোনো ক্ষয়ও হয় না৷ বেটাভোল্টের দাবি, তাদের এই ব্যাটারি পারমাণবিক শক্তির সক্ষমতাকে মানুষের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার প্রথম ও কার্যকর উদ্যোগ৷ এই ব্যাটারির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে ১৫, ১৫ ও ৫ মিলিমিটার৷ আকারে এটি একটি মুদ্রার চেয়েও ছোট৷ আইসোটোপ ক্ষয় হয়ে যে শক্তি নির্গত হয়, সেটাকে বিদু্যতে রূপান্তর করে ব্যাটারিটি কাজ করে৷ যদিও গত শতক থেকেই সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন বিজ্ঞানীরা মহাকাশযান, জলের নিচের সিস্টেম এবং দূরবর্তী বৈজ্ঞানিক স্টেশনগুলোতে ব্যবহারের জন্য একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে৷ কিন্ত্ত তাদের থার্মোনিউক্লিয়ার ব্যাটারি প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে৷ পাশাপাশি এগুলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও ভারি৷

যেভাবে বিদু্যৎ উৎপাদন করে বেটাভোল্টের ব্যাটারিবেটা ভোল্টের ব্যাটারি তুলনামূলকভাবে অনেক সস্তা ও ছোট আকারের৷ এগুলো সে রকম কোনো তাপ উৎপন্ন করে না৷ এ ছাড়া বেটাভোল্টের ব্যাটারি আকারে ছোট হওয়ার কারণে অনেকগুলো ব্যাটারি একসঙ্গে ব্যবহার করা যাবে, যা আরও বেশি শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করবে৷ এই ব্যাটারি তৈরির জন্য বিজ্ঞানীরা শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করেছেন তেজস্ক্রিয় উপকরণ নিকেল-৬৩৷ শক্তি রূপান্তরের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে হীরার সেমিকন্ডাক্টর৷ সেমিকন্ডাক্টরটি মাত্র ১০ মাইক্রন পুরু ও নিকেল ৬৩-এর শিটটি কেবল ২ মাইক্রন-পুরু৷ তেজস্ক্রিয় নিকেল-৬৩ ক্ষয় হতে থাকলে সেই শক্তি বৈদু্যতিক প্রবাহে রূপান্তরিত হয়৷ছোট আকারের এই ব্যাটারির প্রথম সংস্করণ ১০০ মাইক্রোওয়াট শক্তি ও ৩ ভোল্টের বিদু্যৎ সরবরাহ করতে সক্ষম৷ তবে ২০২৫ সালের মধ্যে বাজারে আসবে এর পরবর্তী সংস্করণ, যেটি ঊর্ধ্বে ১ ওয়াট পর্যন্ত শক্তি সরবরাহ করতে পারবে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি৷

বেটাভোল্টের ব্যাটারি ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে এবং সামনে এটি ফোন ও ড্রোনের মতো বাণিজ্যিক খাতের জন্য ব্যাপক উৎপাদনে যাবে৷ প্রতিষ্ঠানটি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বেটাভোল্টের পারমাণবিক শক্তির ব্যাটারিগুলো মহাকাশ, এআই উপকরণ, চিকিৎসাসামগ্রী, মাইক্রোপ্রসেসর, উন্নত সেন্সর, ছোট ড্রোন ও মাইক্রো-রোবটের মতো একাধিক খাতে টেকসই বিদু্যৎ সরবরাহের উৎস হিসেবে চাহিদা মেটাতে পারবে৷

তবে এই পারমাণবিক ব্যাটারি ব্যবহারে বেশ ঝুঁকি রয়েছে তা অস্বীকার করা যায় না৷ কারণ স্বাভাবিকভাবেই বেশিরভাগ মানুষ পকেটে একটি পারমাণবিক ব্যাটারি সংবলিত মোবাইল ফোন বহন করবে তা ভাবলেই কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ৷ তবে বেটাভোল্টের দাবি, এই ব্যাটারি অন্যান্য ব্যাটারির তুলনায় আরও বেশি নিরাপদ৷ বলা হচ্ছে, আকস্মিক প্রচণ্ড আঘাত বা খোঁচা, এমনকি গুলির আঘাতেও এই ব্যাটারিতে আগুন লাগবে না বা এটি বিস্ফোরিতও হবে না৷ পাশাপাশি শূন্যের নিচে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে শুরু করে ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো উচ্চ তাপমাত্রায়ও এটা স্বচ্ছন্দে কাজ করতে সক্ষম৷ প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, তাদের তৈরি পারমাণবিক শক্তির ব্যাটারিটি তেজস্ক্রিয় বিকিরণের দিক দিয়েও একেবারে নিরাপদ৷ এর থেকে কোনো প্রকার বাহ্যিক বিকিরণ ঘটে না এবং কারও দেহে পেসমেকার, কৃত্রিম হূৎপিণ্ড বা ককলিয়া ইমপ্ল্যান্টের মতো উপকরণ সংযুক্ত করা থাকলেও এর ব্যবহারে কোনো ঝুঁকি নেই৷