• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

লোভনীয় হাতছানিতে বিপদজনক 

পবর্তারোহীদের জন্যে অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্থান হিমালয়- কিন্ত্ত এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে পৌঁছানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে ক্রমশই৷ এভারেস্টে মৃতু্য রেকর্ড বলছে এই পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে গিয়ে মৃতু্য বরণ করেছেন মাত্র ২৮০ জন৷ যদিও এই মৃতু্যর সংখ্যা বেডে়ছে, তবে মৃতু্যর হার- অর্থাৎ যারা বেস ক্যাম্পের ওপরে আরোহণের সময়ে মারা গেছেন তাদের অনুপাত ১%৷ ২০১০ সাল পর্যন্ত,

পবর্তারোহীদের জন্যে অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্থান হিমালয়- কিন্ত্ত এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে পৌঁছানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে ক্রমশই৷
এভারেস্টে মৃতু্য রেকর্ড বলছে এই পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে গিয়ে মৃতু্য বরণ করেছেন মাত্র ২৮০ জন৷ যদিও এই মৃতু্যর সংখ্যা বেডে়ছে, তবে মৃতু্যর হার- অর্থাৎ যারা বেস ক্যাম্পের ওপরে আরোহণের সময়ে মারা গেছেন তাদের অনুপাত ১%৷ ২০১০ সাল পর্যন্ত, এভারেস্টে মৃতু্যর সংখ্যা ৭২জন এবং ৭৯৫৪ জন বেস ক্যাম্পের ওপরে আরোহণ করেছেন৷ বেশিরভাগ মৃতু্য ঘটেছে তুষার ধস বা পতনের কারণে, আর এসব কারণ লাশ উদ্ধারেও বাধা সৃষ্টি করে বলে জানানো হয়৷ এছাড়া পর্বত আরোহণ সংক্রান্ত শারীরিক সমস্যার কারণেও পর্বতারোহীরা মারা যেতে পারেন৷ যাকে অ্যাকিউট মাউন্টেন সিকনেস বলা হয়, যার লক্ষণের মধ্যে রয়েছে মাথা ঘোরা, বমি এবং মাথা ব্যথা৷ অ্যালান আরনেট, একজন পেশাদার পর্বতারোহী৷ তিনি এভারেস্ট এবং কেটু (কে-২) বা মাউন্ট গুডউইন-অস্টিন এ আরোহণের তুলনা করেছেন৷

ঝুঁকিগুলো স্পষ্ট হলেও তিনি মনে করেন যে এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণ হিমালয়ের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ৷এভারেস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে মূলত ভালোভাবে ব্যবহৃত রুট মেনে চললেই হয়৷’

‘সেই পথে প্রচুর অবকাঠামো রয়েছে, আছে চা ঘর, আরও রয়েছে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধারের সুবিধা৷ পাকিস্তানে এমন কিছু পর্বত রয়েছে যেখানে আপনি সামরিক হেলিকপ্টারের ওপরও নির্ভর করতে পারবেন,” বলছিলেন তিনি৷ ঘাতক পর্বত পাকিস্তানে সম্প্রতি দুটি মৃতু্যতে পর্বত আরোহণের এই ঝুঁকি আরও বেশি আলোচনায় উঠে এসেছে৷ব্রিটিশ পর্বতারোহী টম ব্যালার্ড এবং তার ইটালীয় সঙ্গী ড্যানিয়েল নর্দি হিমালয়ের একটি শৃঙ্গ ‘নাঙ্গা পর্বতে’ ওঠার চেষ্টা চালানোর সময় মারা যান৷ এই শৃঙ্গটি ‘ঘাতক পর্বত’ নামে কথিত৷ টম-এর মা, অ্যালিসন হারগ্রেভস মারা যান এর আগে কেটু (কে-২) আরোহণের সময়ে, যেটিকে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিখর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আর এ ঘটনাও ঘটেছে পাকিস্তানে৷

পৃথিবীতে ৮ হাজার মিটার বা ২৬,০০০ ফিট উচ্চতার পর্বত শৃঙ্গের সংখ্যা মোট ১৪টি৷ তার মধ্যে ‘নাঙ্গা পর্বত’ এবং ‘কে টু’-কে সবচেয়ে কঠিন ‘আট হাজারি’ পর্বত হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ পাকিস্তানে পর্বত আরোহণের সফল প্রচেষ্টা ও মৃতু্যবরণের পরিসংখ্যান সহজে পাওয়া যায় না৷ তবে, মি. আরনেট এবং অন্যান্য পর্বতারোহীরা হিসেব করে দেখিয়েছেন, নাঙ্গা পর্বত শিখরে ৩৩৯টি সফল অভিযান করা সম্ভব হয়েছে এবং মারা গেছেন ৬৯ জন৷

হিসেবে, প্রতি পাঁচটি সফল অভিযানের বিপরীতে মৃতু্য ঘটেছে একজনের৷ কেটু, পার্শ্ববর্তী কারাকোরাম পর্বতমালারও কিছু অংশ, যেটি কিনা সবচেয়ে বিপদজনকগুলোর একটি, সেই শৃঙ্গে পৌঁছাতে ৩৫৫টি সফল অভিযান সম্পন্ন হয়েছে৷ আর মৃতু্য ঘটেছে ৮২ জনের৷ হিমালয় জুডে় কী ঘটেবেশিরভাগ হিমালয় অভিযান অবশ্য পাকিস্তান থেকে করা হয় না৷ শৃঙ্গগুলোতে অভিযান চালানো হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে নেপাল অংশ থেকে৷ এবং সে অংশেই এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান অনেক বিস্তারিত সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে৷ আর এ কাজে বিশেষভাবে ধন্যবাদ পাবার অধিকার রাখেন সাংবাদিক এলিজাবেথ হাওলি৷ তার হিমালয় ডাটাবেজে এভারেস্টসহ এই অঞ্চলের ৪৫০টির বেশি শৃঙ্গে আরোহণের সফল বা ব্যর্থ অভিযানের রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে৷

এই হিমালয় ডাটাবেজে কেবলমাত্র সফল অভিযানের হিসেবই রাখেনি৷ একইসাথে যারা বেস ক্যাম্প অতিক্রম করতে পারেননি তাদের কাছ থেকেও পর্বতের ভয়াবহতার নানা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে৷ যে ব্যাপারগুলো পাকিস্তান অংশে করা হয়নি৷ ১৯৫০ সাল থেকে বিগত এক দশকে মৃতু্যর হার ৩% থেকে কমে দাঁডি়য়েছে ০.৯% এ৷ এটি এই অঞ্চলে বেস-ক্যাম্পের ওপরে যারা উঠেছেন তাদের বিবেচনায় নিয়ে৷ প্রতিবছর অসংখ্য পর্বতারোহী এভারেস্টে আরোহণ করেন৷ আর নেপালের পেশাদার পর্বতারোহী যারা সহযোগী হিসেবে কাজ করেন- শেরপা নামে পরিচিত, তাদের মারা যাবার হারও ১.৩% থেকে কমে হয়েছে ০.৮%৷ ২০১০ সাল পর্যন্ত হিমালয় ডাটাবেজের রেকর্ডে দেখা যায়, বেস ক্যাম্প ছাডি়য়ে উঠেছেন এমন আরোহণকারীদের মধ্যে মৃতু্য ঘটেছে ১৮৩ জনের৷ এই সময়ের মধ্যে ২১,০০০ জন এই পর্বতমালায় অভিযান চালিয়েছেন৷ ২০১০ সালের পর, ইয়ালুং কাং শৃঙ্গে ওঠার সময় তিনজনের মৃতু্য ঘটে৷ এই চূড়ান্ত পর্বতারোহণের সামগ্রিক সংখ্যাটি ছোট৷ তবে যেটি দেখা যায় যেসব শৃঙ্গে আরোহণের সংখ্যা কম সেগুলো হয়তো সবচেয়ে প্রাণঘাতী৷