গাজা, ২৩ জানুয়ারি– ইজরায়েলি সেনার ভয়ে গাজার উত্তর প্রান্ত থেকে ভয়ে যে সব মানুষ দক্ষিণ গাজায় আশ্রয় নিয়েছিল, এ বার সেই অংশও দখল নিতে শুরু করেছে ইজরায়েলি সেনা৷ ফলে এখান থেকেও সব ছেডে় জীবন হাতে নিয়ে পালাতে হচ্ছে তাদের৷ সপ্তাহখানেক আগেই দক্ষিণ গাজায় ঢুকে পডে়ছিল ইজরায়েল বাহিনী৷ তখন থেকেই হামাসের সঙ্গে জোর লড়াই চলছে তাদের৷
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসকে পুরোপুরি দখলে নেওয়ার জন্য সংঘর্ষ চালাচ্ছে ইজরায়েলি সেনা৷ ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)-এর দাবি, এই খান ইউনিস থেকেই গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালানো হয়েছিল৷ তাই খান ইউনিসকে হামাসমুক্ত করতেই সামরিক অভিযান আরও জোরদার করেছে তারা৷ সোমবার থেকে হামলা জোরলো হয়েছে৷ আকাশপথে হামলার পাশাপাশি, সেনাও তাদের আক্রমণের ঝাঁজ আরও বাডি়য়েছে৷ সোমবারই খান ইউনিসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল আল-খায়ের দখল করেছে আইডিএফ৷
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভূমধ্যসাগর সংলগ্ন আল-মাওয়াসি জেলায় রাতভর সংঘর্ষ হয়েছে হামাস এবং ইজ়রায়েলি বাহিনীর সঙ্গে৷ সেই সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ শুধু তা-ই নয়, গোটা হাসপাতালটিকে অবরুদ্ধ করে সমস্ত পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে ইজ়রায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে৷ প্যালেস্টাইনি রেড ক্রেসেন্ট-এর দাবি, শুধু আল-খায়েরিই নয়, খান ইউনিসের আরও একটি হাসপাতাল আল-আমালও নিজেদের দখলে নিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা৷ ওই হাসপাতালটির সঙ্গে সমস্ত রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে৷ হাসপাতালের কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছেও বলেও দাবি প্যালেস্টাইনি রেড ক্রেসেন্ট-এর৷ যদিও তা অস্বীকার করেছে ইজ়রায়েল৷
খান ইউনিস শহর ইজ়রায়েলের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষ ওই শহর ছেডে় গাজ়ার আরও দক্ষিণে আশ্রয় নিচ্ছেন৷ এই পরিস্থিতিতে বার্তা দিয়েছে আমেরিকা, এই লড়াইয়ে নিরীহ এবং সাধারণ মানুষের যেন মৃতু্য না হয়, সে দিকটাও নজর রাখতে হবে ইজ়রায়েলকে৷ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দিকটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই ইজ়রায়েলকে বার্তা দিয়েছে হোয়াইট হাউস৷ রাষ্ট্রপুঞ্জের এক তথ্য বলছে, গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই লড়াইয়ে গাজ়ার ২৩ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে ৮৫ শতাংশই গৃহহীন হয়ে পডে়ছেন৷ চার জনের মধ্যে এক জন অভুক্ত অবস্থায় থাকছেন৷
কিন্ত্ত ইজ়রায়েল প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ১০০ পণবন্দি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এবং পুরো হামাস বাহিনীকে খতম না করা পর্যন্ত এই লড়াই জারি থাকবে৷ ফলে এখনই যে লড়াই থামাবেন না নেতানিয়াহু, তাঁর কথা থেকেই তা স্পষ্ট৷