• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

ঋণে ডুবতে বসেছে মোদির ভারত, পথ দেখাতে পারে ঋণের পরিমাণ কমানো

দিল্লি, ১৮ জানুয়ারি– ভারতকে বিপদ সংকেত দেখিয়ে সতর্ক করল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)৷ যে গতিতে ভারতের ক্ষণের পরিমাণ বাড়ছে তাতে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি)-কেও টপকে যেতা পারে বলেই রিপোর্ট পেশ করল আইএমএফ৷ যদিও আইএমএফের এই সতর্কবাণী অদেখা করে নরেন্দ্র মোদি সরকারের যুক্তি, ঋণ নিয়ে দেশের ঝুঁকি খুব কম কারণ সার্বভৌম ঋণ মূলত দেশীয় মুদ্রায়

দিল্লি, ১৮ জানুয়ারি– ভারতকে বিপদ সংকেত দেখিয়ে সতর্ক করল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)৷ যে গতিতে ভারতের ক্ষণের পরিমাণ বাড়ছে তাতে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি)-কেও টপকে যেতা পারে বলেই রিপোর্ট পেশ করল আইএমএফ৷
যদিও আইএমএফের এই সতর্কবাণী অদেখা করে নরেন্দ্র মোদি সরকারের যুক্তি, ঋণ নিয়ে দেশের ঝুঁকি খুব কম কারণ সার্বভৌম ঋণ মূলত দেশীয় মুদ্রায় রয়েছে৷ আবার মোদি সরকারের মতোই আইএমএফে ভারতীয় এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর কেভি সুব্রক্ষ্মণ্যমও আইএমএফের অনুমানের সঙ্গে মতানৈক্য প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর দাবি, ভারতের ‘ডেট-টু-জিডিপি’ অনুপাত (কোনও দেশের ঋণ এবং জিডিপির অনুপাত) খুব সামান্যই বৃদ্ধি পেয়েছে৷ সুব্রক্ষ্মণ্যম বলেন, ‘‘দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ঝুঁকি বেশি৷ তবে ভারতের সার্বভৌম ঋণের ঝুঁকি খুবই কম কারণ, এটি প্রধানত দেশের মুদ্রায় নেওয়া ঋণ৷
(আইএমএফ)-এর রিপোর্টে বলছে, ভারতীয় সরকারের ঋণের পরিমাণ দেশের জিডিপি অর্থাৎ, ৩.১৮ লক্ষ কোটি টাকা ছাডি়য়ে যেতে পারে৷ গত বছরের ডিসেম্বরে সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে৷ সংবাদমাধ্যম ‘বিজ়নেস স্ট্যান্ডার্ড-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতকে সতর্ক করে আইএমএফ জানিয়েছে, এমনটা চলতে থাকলে ভারতের সামনে বড়সড় বিপদ অপেক্ষা করছে৷ কারণ, জলবায়ু পরিস্থিতি উন্নত করতে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত কারণে ভারতের এখন প্রচুর অর্থের প্রয়োজন৷ আর তাই যদি সরকারের ঋণ জিডিপিকে ছাডি়য়ে যায়, তা হলে অর্থনীতি সংক্রান্ত ঝুঁকি বাড়তে পারে৷ আইএমএফ তাদের এক বার্ষিক রিপোর্টে লিখেছে, ‘দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি বেশি কারণ, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছতে এবং জলবায়ু ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিস্থিতি উন্নত করতে ভারতের এখন প্রচুর অর্থ প্রয়োজন৷ পাশাপাশি বৃহত্তর বেসরকারি খাতেও বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে৷’’
তবে আইএমএফের ভবিষ্যৎবাণী না ফলতে পারে কারণ, গত দুই দশকে বিশ্ব অর্থনীতি বহু বিপদের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও ভারতের সরকারি ডেট-টু-জিডিপি অনুপাত ২০০৫-০৬ সালে ৮১ শতাংশ থেকে বেডে় ২০২১-২২ সালে ৮৪ শতাংশ হয়েছিল৷ তবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা আবার ৮১ শতাংশে নেমেছে৷’
আবার সতর্ক করলেও বার্ষিক রিপোর্টে আইএমএফ ভারতের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিও দেখিয়েছে৷ রিপোর্ট বলেছে যে, ভারত সরকার যদি অর্থনীতিতে কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন করে তা হলে বর্তমান এবং পরবর্তী অর্থবর্ষে অর্থনৈতিক উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে৷ একটি বিবৃতিতে আইএমএফ এ-ও জানিয়েছে, ভারতকে তার ঋণ কমানোর জন্য মাঝেমধ্যে রাজস্ব আদায়ে ‘উচ্চাভিলাষী’ হতে হবে৷ বিবৃতিতে আইএমএফ বলেছে, ‘‘আসন্ন অর্থবর্ষে বিশ্ব মন্দা বাণিজ্য ও অর্থনীতির মাধ্যমে ভারতের উপর প্রভাব ফেলতে পারে৷ বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার কারণে পণ্যের দামে হেরফের দেখা দিতে পারে৷ ফলে এই পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনীতিতে চাপ পড়তে পারে৷’
ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর ডি সুব্বারাও ভারতের ঋণ-জিডিপি অনুপাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানিয়েছেন, সরকারের উচিত ঋণের পরিমাণ কমানো৷ অন্যথায় তা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ এমনকি ভারতে আস্থা হারাতে পারেন অনেক বিনিয়োগকারী৷
অক্টোবর মাসে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র সরকারি ঋণ কমানোর উপায়গুলি দেখছে এবং ঋণ কমানোর কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে তা পর্যবেক্ষণ করছে৷
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের মাথাপিছু আয় বেডে়ছে৷ যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, আয়ের অসম বণ্টন ভারতের কাছে এখনও একটি চ্যালেঞ্জ৷ এই সমস্যাটি কোভিড আবহে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে৷