ইম্ফল, ১৪ জানুয়ারি: আজ রবিবার মণিপুরের থৌবালে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে “ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা”র সূচনা করা হয়। গত বছর “ভারত জোড়ো যাত্রা”য় দেশজুড়ে বিপুল মানুষের সাড়া পাওয়ার পর এটা হল তার পরিবর্তিত ও বিকল্প কর্মসূচি। “ভারত জোড়ো যাত্রা”য় মানুষের অভাব অভিযোগ শোনার পর তার সঙ্গে সংযোজিত হয়েছে নতুন শব্দ বন্ধ, “ন্যায় যাত্রা”। দুইয়ে মিলে এই দ্বিতীয় কর্মসূচির নতুন নামকরণ করা হয়েছে “ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা”। অর্থাৎ শুধুমাত্র মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ ও অভাব অভিযোগ শোনা নয়, সেই সঙ্গে কিভাবে তাঁদের সমাজ ও শাসক দলের অন্যায় ও অত্যাচার থেকে রক্ষা করে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়া যায় তার দিক নির্দেশ করা। সেই উদ্দেশ্যেই এই ন্যায় যাত্রার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দেশের একমাত্র শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দলটি।
কেন এই ন্যায় যাত্রা? সেবিষয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি সহ শীর্ষ নেতারা তাঁর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এই যাত্রা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে আমরা অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু রাহুল গান্ধী এই কর্মসূচিকে দলের কর্মসূচি বলে উল্লেখ করেন। তিনি এই ন্যায় যাত্রার সূচনা করার পর তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন,”এই প্রশ্নটি সবার কাছে এসেছে, কেন ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা? কারণ আমরা ভারতের মহান ন্যায় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এগিয়ে চলেছি। এই ন্যায় সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক। ”
এরপর তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন। বলেন,”এটা খুবই লজ্জাজনক যে, জাতিগত দাঙ্গায় বিধ্বস্ত রাজ্যের পরিস্থিতি তিনি পরিদর্শন করেননি। তিনি এখানকার মানুষের চোখের জল মোছার চেষ্টা করেননি।”
তিনি আরও বলেন,” আমি ২০০৪ সাল থেকে রাজনীতি করছি। কিন্তু ভারতের মধ্যে এটাই প্রথম দেখলাম, যেখানে সরকারি পরিকাঠামো পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। গত ২৯ জুনের পর মণিপুর এখন আর সেই মণিপুর নেই। এখানে বিভেদ আর ঘৃণা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মানুষ মানুষকে ভালবাসতে ভুলে গেছে। অথচ এখনও পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাদের চোখের জল মুছিয়ে হাত ধরলেন না।”
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, বিজেপির রাজনীতির কারণে মণিপুরের মানুষ তাঁদের মূল্যবান সম্পদ শান্তি ও সম্প্রীতির কথা ভুলে গেছে। যেটা এই রাজ্যে আগে বিরাজমান ছিল। তিনি বলেন, “আমরা এখানে এসেছি আপনাদের কথা শুনতে এবং দুঃখের সময় পাশে দাঁড়াতে। আমরা আপনাদের দুঃখের অংশীদার হতে চাই। আমরা ভারতে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত করার সংকল্প নিয়েছি। মণিপুরে মানুষের দুঃখ মোচন করে শান্তি ও সম্প্রীতির অতীত ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে চাই। অন্যদিকে মণিপুরে হিংসার মাধ্যমে বিজেপির প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায়। মণিপুরের ঘটনার মাধ্যমে বিজেপি ও আরএসএস-এর প্রতীকী পরিচয় পাওয়া যায়। এখানকার হিংসা ও ঘৃণা ছড়ানোর মাধ্যমে বিজেপি ও মোদির দৃষ্টিভঙ্গি ও আদৰ্শ প্রকাশ পায়।”