কাঠমান্ডু, ৭ জানুয়ারি – চিনের প্রায় কুক্ষিগত ভুটানের জাকারলুং গ্রাম। ভুটানের ওই গ্রামে রাস্তা, বাড়িঘর শুধু নয়, সেনা চৌকিও তৈরি করছে চিন। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, উত্তর ভুটানের জাকারলুং উপত্যকার বেশ কিছু অংশে সেনাছাউনি তৈরি করে ফেলেছে চিন। চিনের লাল ফৌজের দখলে জাকারলুং বেয়ুল খেনপাজং-এর চারপাশের জমি। ইমেজে দেখা গেছে, জাকারলুং গ্রামে অন্তত ১২৯ টি বড় বিল্ডিং তৈরি করেছে চিন। পাশাপাশি আরও একটি অঞ্চলে নির্মাণ করা হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০টি বাড়ি। ওই গ্রামে সেনা চৌকিও তৈরী করেছে চিন। তৈরি হচ্ছে চওড়া রাস্তা। সেই রাস্তা ভুটান ঘুরে অরুণাচল পর্যন্ত গেছে। এমনিতেই ভারতের উত্তর-পশ্চিমের রাষ্ট্রগুলি চিনের আয়ত্তে। দক্ষিণে শ্রীলঙ্কা ও মলদ্বীপেও বেজিং-এর প্রভাব বাড়ছে । এই পরিস্থিতিতে উত্তর-পূর্বের রাষ্ট্রও চিন করায়ত্ত করলে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে বড় প্রভাব পড়তে পারে ।
জাকারলুং উপত্যকার আশপাশের অঞ্চল ২ বছর আগেও ছিল পান্ডব বর্জিত। সেখানে এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছে চিনা সেনা। জাকারলুং-সহ একাধিক বিতর্কিত এলাকা প্রসঙ্গে ১৯৯৮ সালে চিন ও ভুটানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে ভুটানের জমিতে হস্তক্ষেপ না করতে রাজি হয় বেজিং। কিন্তু সম্প্রতি সেই চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, জাকারলুং বেয়ুল খেনপাজং অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সূত্রে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে ভুটানের মানুষদের কাছে। আশঙ্কা, চিনা আগ্রাসনের জেরে সেই গুরুত্ব হারাতে পারে । অন্য দিকে, ভারতের পক্ষেও বিষয়টি উদ্বেগের । কারণ ভুটানের উপত্যকা থেকে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত কাছে ।
ভুটানের আমু চু নদী উপত্যকায় তিনটি গ্রাম নির্মাণ করেছে চিন। ওই অঞ্চলের দক্ষিণে চিনের বাড়তি কোনও আগ্রাসন উদ্বেগ বাড়াতে পারে দিল্লির। সেক্ষেত্রে শিলিগুড়ি করিডর-এর উপরে নজরদারি চালানো সহজ হবে চিনের পক্ষে। ডোকলামে চিনের সক্রিয়তা বাড়লে উত্তর পূর্বাঞ্চলে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।