গুরুগ্রাম, ৪ জানুয়ারী – হরিয়ানার গুরুগ্রামের একটি হোটেলে মডেল দিব্যা পাহুজাকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগ, ওই পাঞ্জাবি মডেলকে খুন করেন হোটেলের মালিক অভিজিৎ সিং। এই হোটেলের মালিকের সঙ্গে দিব্যার সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। দিব্যার মৃতদেহ পাচারের জন্য তাঁর সহযোগীদের ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন অভিজিৎ, এমনটাই জানা গিয়েছে । অভিজিৎকে হোটেলের ঘর থেকে দিব্যার দেহ বের করতেও দেখা যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে দিব্যা গুরুগ্রামের বলদেব নগরের বাসিন্দা ছিলেন। কুখ্যাত গ্যাংস্টার সন্দীপ গাডোলির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরী হয় দিব্যার। ২০১৬ সালে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় সন্দীপের। এরপরই দিব্যার মা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, সন্দীপের ভাই-বোন এবং অভিজিৎ সিং-এর নামে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ষড়যন্ত্র করে তাঁদের মেয়েকে খুন করতে চাইছে। এর আগে সন্দীপের মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন দিব্যা। গতবছরই তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর অভিজিতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয় বলে জানা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, হোটেলের ঘরে গুলি করে খুন করা হয় দিব্যাকে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, খুনের পরে দিব্যার দেহ টেনে হিঁচড়ে একটি বিএমডব্লিউতে তোলা হচ্ছে ।
সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে এই হত্যার ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই প্রধান সন্দেহভাজন অভিজিৎ সিং সহ মোট ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে গুরুগ্রাম অপরাধদমন শাখা । ধৃতরা সকলেই হোটেলের কর্মচারী। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২ জানুয়ারি রাতে হোটেলের ১১ নম্বর ঘরের দিকে যাচ্ছেন অভিজিৎ। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরও ২ জন। এর পরেই ঘর থেকে গুলির শব্দ আসে।সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, টেনেহিঁচড়ে হোটেল দিব্যার দেহ হোটেল থেকে বের করা হচ্ছে। সেখানে হোটেল মালিক অভিজিৎ-সহ আরও কয়েকজন রয়েছে। দেহটি টেনে নিয়ে গিয়ে চাদরে মুড়ে একটা একটা নীল বিএমডব্লিউ গাড়িতে তোলা হয়। মৃতদেহ এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। হদিস মেলেনি তাঁর মোবাইলেরও। খুনের পর যে গাড়ি করে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই গাড়িরও কোনও হদিস পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে হরিয়ানা পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্তরা দিব্যার দেহ পাঞ্জাবে ফেলে দিয়ে আস্তে পারে। আবার আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঘর্ঘরা নদীতে দিব্যার দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে রাস্তা দিয়ে গাড়ি করে দিব্যার দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে, পুলিশ সেই সব রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অভিজিৎ তাদের কাছে দাবি করেন, দিব্যার মোবাইলে তাঁর অনেক অশ্লীল ছবি ছিল। সেই ছবি দেখিয়ে বার বার ব্ল্যাকমেল করতেন দিব্যা। তাঁর কাছে মোবাইলের পাসওয়ার্ডও চেয়েছিলেন অভিজিৎ। কিন্তু সেই পাসওয়ার্ড না দেওয়ায় দিব্যাকে গুলি করে খুন করেছেন। অভিজিতের দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। হোটেল মালিক অভিজিৎ ছাড়াও তাঁর হোটেলের দুই কর্মী ওম প্রকাশ এবং হেমরাজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।