দিল্লি, ২০ ডিসেম্বর – করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন ১-এর সংক্রমণ ছড়াচ্ছে অত্যন্ত দ্রুত হারে। ফলে সব রাজ্যকে করোনা সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। বুধবার কেন্দ্রের তরফে এই সতর্ক বার্তা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্যে জানা গিয়েছে, গত সাত মাসে দেশে সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে বুধবার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১৪ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন দেশে। শেষ গত ২১ মে এই সংখ্যা ছুঁয়েছিল করোনা সংক্রমণ।সম্প্রতিই কর্নাটকে করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। কেরলের পর এই প্রথম অন্য রাজ্যে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এল। তার পরেই শুধু তা-ই নয়, দেশের সাম্প্রতিক করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠকও করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয়া।
করোনার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়। বুধবার সকালে উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পাশাপাশি, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আসন্ন উৎসবের মরসুমে কেরলে কোভিড সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চিন্তিত কেন্দ্র। এদিন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ডাকা ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন দুই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এসপি সিংহ বঘেল এবং ভারতী পাওয়ার ছাড়াও স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা দফতরের সচিব, নীতি আয়োগের সদস্যও । সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই করোনার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য আগে থেকে প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন মান্ডবীয়া। সেই সঙ্গে রাজ্যগুলিকেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, মান্ডবীয়া বলেছেন, ‘‘করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্রের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে হবে রাজ্যগুলিকে। প্রয়োজনে প্রতি তিন মাস অন্তর বিভিন্ন রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার করার মহড়া দিতে হবে।’’ এ ছাড়াও সমস্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং রাজ্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে, কোনও রোগীর শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেলেই তার নমুনা পাঠাতে হবে ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ জেনোমিকস কনসর্টিয়াম বা ইনসাকোগ-এ। এতে করোনার নতুন কোনও রূপ তৈরি হয়েছে কি না তা জানা যাবে।
যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও তার উপসর্গ গুরুতর নয়। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। তবুও বছর শেষে উৎসবের মরসুমে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না সরকার।
আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যগুলিকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে নানা ব্যবস্থা নিতে হবে। জ্বর, সর্দিকাশি নিয়ে যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে, তাঁদের উপর বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাভিত্তিক রিপোর্ট চাওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে।
বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে কেরল লাগোয়া জেলাগুলিকে। রোগ নির্ণয় করতে পরীক্ষা করার উপর জোর দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ বলছে, কেরলে জেএন.১ প্রজাতির অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে।