দিল্লি, ১৯ ডিসেম্বর – আগামী লোকসভা ভোটের অঙ্ক বদলে দিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে উত্তরপ্রদেশের কোনও আসন থেকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে কংগ্রেস। তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত আসন থেকে তাঁকে প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে। এই প্রস্তাব নিয়ে ইন্ডিয়া জোটের দুই শরিক সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব এবং রাষ্ট্রীয় লোকদলের সভাপতি জয়ন্ত চৌধুরির সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। খাড়্গে প্রার্থী হলে শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, গোটা দেশেই লোকসভা ভোটের অঙ্ক বদলে যেতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে দলিত অর্থাৎ তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত। উত্তরপ্রদেশে জনসংখ্যার ২০ শতাংশও দলিত।
উত্তরপ্রদেশে দলিতরা দীর্ঘদিন কংগ্রেসের পাশে ছিল। বহুজন সমাজবাদী পার্টির উত্থানের পর দলিত ভোট এই দলের দখলে চলে যায়। এই দলিত ভোটারদের সমর্থনেই ২০০৭-এ বিএসপি নেত্রী মায়াবতী তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু বিএসপি’র ওই ভোট ব্যাঙ্ক এখন বিজেপির দখলে। কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের একাংশের ধারণা, খাড়্গের মতো পরিচ্ছন্ন ইমেজের মানুষ প্রার্থী হলে দেশে শক্ত ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত হবে দল। কংগ্রেস সূত্রের খবর, খাড়্গেকে লড়াইয়ে এগিয়ে দিয়ে দল বার্তা দিতে চায়, দল গড়ার সুযোগ পেলে এই দলিত নেতাকেই প্রধানমন্ত্রীর আসনের জন্য বাবার কাজ অনেকটাই এগিয়ে যাবে। তবে ইন্ডিয়া জোটের শর্ত, কোনও দল প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী নিয়ে ভোটের আগে কোন বাক্যব্যয় করবে না। কংগ্রেসও সেই শর্ত পালন করবে।
খাড়্গের শুধু দলিত পরিচয়ই নয়, কংগ্রেস সভাপতিকে প্রার্থী করা হলে সামগ্রিকভাবে সংখ্যালঘু ভোটও কংগ্রেসের পক্ষে থাকতে পারে বলে কংগ্রেসের আশা। কারণ, মুসলিম ভোট কংগ্রেসে ফেরার প্রবণতা কর্নাটক ও হিমাচলের ভোটে স্পষ্ট হয়েছে।
খাড়্গের রাজ্যেরই বাসিন্দা এইচডি দেবগৌড়ার পর নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি ওবিসি সম্প্রদায়ের। ৭৫ বছর পরও দেশে কোনও দলিত প্রধানমন্ত্রী হননি। দলিত কে আর নারায়ণন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। খাড়্গের বয়স এখন ৮৩ হলেও তিনি পুরোপুরি সুস্থ-সবল। তাছাড়া, ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টির নেতা মোরারজি দেশাই ৮৩ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
খাড়্গের জন্য নিরাপদ আসন কর্নাটক। খাড়্গে এর আগে কর্নাটক থেকে জিতে লোকসভার সাংসদ হয়েছেন। সদ্য সেখানে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। কিন্তু সেক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ কেন ? খাড়্গের জন্য উত্তরপ্রদেশের নিরাপদ আসন খুঁজছে দুটি কারণে। এক. প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারাণসীর সাংসদ। এছাড়া, দেশে পরিবর্তনের হাওয়া তুলতে হলে উত্তরপ্রদেশ হল সবচেয়ে উপযুক্ত রাজ্য। গো-বলয়ে ভাল ফল করতে না পারলে দিল্লির কুর্সি দখল করা কঠিন। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে জোরদার লড়াইয়ের বার্তা দিতেও কংগ্রেস সভাপতিকে দেশের সবচেয়ে বেশি লোকসভা আসনের রাজ্যে প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে।