তিরুঅনন্তপুরম, ১২ ডিসেম্বর – কেরলে চরমে উঠল রাজ্য- রাজ্যপাল সংঘাত। এবার কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারায় বিজয়নের বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে আঘাত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। সম্প্রতি দিল্লি যাওয়ার জন্য তিরুঅনন্তপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন কেরলের রাজ্যপাল। সেই সময় শাসক দল সিপিআইএম-এর ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর সদস্যরা তাঁর কনভয় আটকে বিক্ষোভ দেখায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে শারীরিকভাবে আঘাত করার জন্য পরিকল্পিত প্রচেষ্টা চলছে। যার সঙ্গে জড়িত আছেন স্বয়ং পিনারাই বিজয়নও।এই মন্তব্যের পর সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
আরিফ খানের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা শুধু তাঁকে কালো পতাকাই দেখায়নি, তাঁর গাড়িতেও আঘাত করে। কিন্তু, তিনি গাড়ি থেকে নেমে রুখে দাঁড়াতেই তারা পালিয়ে যায় । কারা হামলা চালিয়েছে, তা পুলিশ ভালভাবেই জানত বলে দাবি রাজ্যপালের। তিনি বলেছেন, “কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ থাকলে, বেচারা পুলিশ কী করবে?” তিনি আরও বলেছেন, রাজনৈতিক মতবিরোধ শারীরিক হিংসায় পরিণত হওয়া উচিত নয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনটি জায়গায় রাজ্যপালের গাড়ি আটকে কালো পতাকা দেখান এসএফআই কর্মীরা। এর মধ্যে দুটি জায়গায় বিক্ষোভকারীরা রাজ্যপালের গাড়িতে চাপড়ও মারে। তবে পুলিশের দাবি, একটি জায়গাতেই রাজ্যপালের গাড়ি আটকেছিল এসএফআই। ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কেরলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল। তাঁর বক্তব্য, তিনি রাজ্য সরকারের চাপের মুখে নোটি স্বীকার না করায় তাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করে ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে, যাতে তিনি করলে রাজ্যপালের পদ থেকে সরে যান।
বাম শাসিত কেরালায় বেশ কয়েক মাস ধরেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরম আকার নেয়। আরিফ মহম্মদ খানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ বিল আটকে রেখে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিল পিনারাই বিজয়ন সরকার। সপ্তাহ দুই আগেই শীর্ষ আদালতে কড়া ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয় রাজ্যপালকে। প্রধান বিচারপতি দি ওয়াই চন্দ্রচূড় এই ব্যাপারে রাজ্যপালের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। কিন্তু এবার রাজ্যপালের শারীরিক লাঞ্ছনার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ নতুন মাত্রা যোগ করল।