মেরঠ, ১১ ডিসেম্বর – কৈশোর পার হতে না হতেই মাত্র ১৮ বছর বয়সে ২ জন কনস্টেবলকে খুন, এবং তারপর রাইফেল লুঠ করে শ্রীঘরে যেতে হয়েছিল অমিতকে। তিনি যে অপরাধী নন, তা প্রমাণ করা যায়নি আদালতে। কিন্তু যে অপরাধ তিনি করেননি, তার দায় মাথায় নিয়ে কারাবাস মন থেকে এক বিন্দুও মেনে নিতে পারেননি তরুণ অমিত চৌধুরি। এই অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে হাতে তুলে নিয়েছিলেন বই। জেলের অন্ধকার কুঠুরিতেই শুরু হয় তাঁর অন্য সাধনা। একনিষ্ঠ অমিত ১২ বছর পর প্রমাণ করলেন নিজেকে। নিজেই নিজের সওয়াল করে মুক্তি আদায় করে নিলেন তিনি। অন্ধকার জগতের কুঠুরি থেকে আলোয় ফিরলেন অমিত। তবে তাঁর আফসোস একটাই, জীবনের মূল্যবান ১২ টা বছর আর ফিরে পাবেন না কোনদিনও।
২০১১ সালে দুই কনস্টেবল কৃষ্ণপাল ও অমিত কুমার খুন হন। লুঠ হয় তাঁদের রাইফেল। খুনের অভিযোগ ওঠে কুখ্যাত কাইল গ্যাংয়ের উপর। অমিত চৌধুরিকেও সেই গ্যাংয়ের সদস্য হিসাবে অভিযুক্ত করা হয়। কারণ, তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিয়েছিলেন। অমিত ঘটনাস্থলের ধারেকাছেও ছিলেন না। উত্তরপ্রদেশের মেরঠের বাসিন্দা অমিত চৌধুরী তখন বোনের সঙ্গে শামলি জেলায় ছিলেন। কিন্তু পুলিশ সেদিন তাঁর কোনও কথাই কানে তোলেনি। আরও ১৬ জনের সঙ্গে তাঁকেও অপরাধী বলে গণ্য করা হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধি ও জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মতো কঠোর ধারা দেওয়া হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। তার পরের দুবছর কাটে দুঃস্বপ্নের মতো। মুজফফরনগর জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে তাঁর ভবিষ্যৎই অন্ধকারে ডুবে যেতে বসেছিল বাগপতের কিরথাল গ্রামের এক চাষির ছেলে অমিতের। তাঁকে নিজেদের গ্যাংয়ে শামিল করার চেষ্টা করে অনিল দুজানা, ভিকি ত্যাগীর মতো গ্যাংস্টার। কিন্তু জেলর অমিতকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দেন।
২০১৩ সালে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেলেও অপরাধের কলঙ্ক গায়ে লেগে যায়। তাঁর স্বপ্ন ছিল সেনায় যোগ দেওয়ার। কিন্তু বুঝতে পারেন তা সম্ভব নয়। পরিবার যাতে মাথা উঁচু করে সমাজে চলতে পারে, সে জন্য বেছে নেন আইনের পথ। একে একে উত্তীর্ন হন বিএ, এলএলবি, এলএলএম। উত্তীর্ণ হন বার কাউন্সিলের পরীক্ষাতেও। শুরু হয় নিজেকে কলঙ্কমুক্ত করার লড়াই। সাক্ষী পুলিশ অফিসার তাঁকে শনাক্ত করতে পারেননি। হাজির করলেন আরও সাক্ষ্যপ্রমাণ। বিচারক নিঃসন্দেহ তাঁকে এবং আরও ১২ জনকে বেকসুর ঘোষণা করলেন।
ইতিমধ্যে আসল অপরাধীদের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায় । সুমিত কাইল ২০১৩-তে এনকাউন্টারে নিহত। নীতুর যাবজ্জীবন ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা হয়। রায় ঘোষণার আগেই ক্যানসারে মারা যায় ধর্মেন্দ্র। আর অমিতের সৈনিক হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গেলেও হাল ছাড়ছেন না তিনি। “এখন আমি ফৌজদারি আইনে পিএইচডি করতে চাই। আমি মনে করি, ঈশ্বর আমাকে অন্য হতভাগ্যদের জন্য লড়াই করার জন্য বেছে নিয়েছেন,” বলেছেন অমিত।
কলঙ্ক লেগেই ছিল। স্বপ্ন ছিল সেনায় যোগ দেবেন। কিন্তু তা সম্ভব নয় বুঝে পরিবার যাতে মাথা উঁচু করে সমাজে চলতে পারে, সে জন্য বেছে নিলেন আইনের পথ। একে একে পাস করলেন বিএ, এলএলবি, এলএলএম। উত্তীর্ণ হলেন বার কাউন্সিলের পরীক্ষাতেও। নিজেকে কলঙ্কমুক্ত করার লড়াই শুরু হল। সাক্ষী পুলিশ অফিসার তাঁকে শনাক্তই করতে পারলেন না। হাজির করলেন আরও সাক্ষ্যপ্রমাণ। বিচারক নিঃসন্দেহ তাঁকে এবং আরও ১২ জনকে বেকসুর ঘোষণা করলেন। ততদিনে আসল অপরাধীদের জন্যও ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে। সুমিত কাইল ২০১৩-তে এনকাউন্টারে নিহত। নীতুর যাবজ্জীবন ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে। রায় ঘোষণার আগেই ক্যানসারে মারা গিয়েছে ধর্মেন্দ্র।
অমিতের সৈনিক হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গেছে। কিন্তু হাল ছাড়েননি । অমিত এখন ফৌজদারি আইনে পিএইচডি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন । তাঁর বিশ্বাস, ঈশ্বর এবারও তাঁর সহায় হবেন।