চেন্নাই, ৭ ডিসেম্বর– ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের জেরে লন্ডভন্ড গোটা চেন্নাই শহর৷ একটানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির বিস্তীর্ণ এলাকা৷ তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই৷ বৃষ্টি থেমে গেলেও, জল জমে আছে চার দিকে৷ তৃতীয় দিনেও বিদু্যৎবিচ্ছিন্ন বহু এলাকা৷ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম মঙ্গলবার অন্ধ্র উপকূলে আছডে় পডে়৷ তার পর তিন ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে৷ এর পর অবশ্য শক্তি হারায় ঘূর্ণিঝড়৷ তবে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের দাপটে থমকে গিয়েছে তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের জনজীবন৷
তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, তিন দিন পেরিয়ে গেলেও বিদু্যৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে বহু এলাকা৷ ঝড় এবং বৃষ্টির দাপটে অনেক জায়গাতেই বহু গাছ এবং বিদু্যতের খুঁটি উপডে় গিয়েছে৷ সেই কারণে বিদু্যতের তার ছিঁডে় গিয়েছে৷ বেশ কিছু জায়গায় বিদু্যতের তার জলের নীচেও ডুবে আছে৷ বিপদ এড়ানোর জন্য বিদু্যৎবিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে বহু এলাকা৷ তবে পরিস্থিতি সামান্য নিয়ন্ত্রণে এলেই শীঘ্রই বিদু্যৎ ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে৷ ঘূর্ণিঝড় এবং একটানা অতিভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন ভেলাচেরি এবং তামবারামের বিভিন্ন এলাকা৷দুর্যোগ পরিস্থিতিতে চেন্নাই এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে সরকারি স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে৷ কর্মীদের বাডি় থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়ার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন৷ চেন্নাইয়ের অধিকাংশ জায়গাতেই নিচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকছে৷ অনেকের বাডি়র মধ্যেও জল ঢুকে গিয়েছে৷ জল ঢুকে যাওয়ার কারণে অনেক পরিবারকেই বাডি়ছাড়া হতে হয়েছে৷ এমনকি, পার্কিং লটে দাঁডি়য়ে থাকা গাডি়গুলিও জলের তোডে় ভেসে গিয়েছে৷
চেন্নাইয়ের কোলাথুর এলাকার মাছবিক্রেতা রাজারাম বলেন, “অতিভারী বৃষ্টির জেরে ৩০টিরও বেশি দোকানে জল ঢুকে গিয়েছে৷ দু’দিন হয়ে গেল এখনও এলাকায় বিদু্যৎ নেই৷
দুর্যোগে আরও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইতিমধ্যেই পাঁচ হাজার ত্রাণকেন্দ্র তৈরি করেছে তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন উদ্ধারকাজের বিষয়ে তদারকি করছেন৷ তামিলনাড়ুর সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে ত্রাণ তৎপরতা পুরোদমে চলছে৷ জলমগ্ন এলাকায় মানুষদের উদ্ধার করতে মধ্যরাতে নৌকাও নামানো হয়েছিল৷
এই বিপর্যয়ের সময় তামিলনাড়ু পুলিশ একটি হেল্পলাইন নম্বরও ঘোষণা করেছে৷ তামিলনাড়ুর মুখ্যসচিব শিবদাস মিনা জানান, শহরের অনেক এলাকায় জল সরিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরেয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ বেশ কিছু রাস্তা পরিষ্কার করা হয়েছে এবং পরিষ্কার পানীয় জলের ব্যবস্থাও ইতিমধ্যে করা হয়েছে৷ বহু পরিবারকে শুকনো খাবার, পাউরুটি এবং দুধের প্যাকেটও দেওয়া হয়েছে৷ তবে কাজ এখনও অনেক বাকি আছে৷