দিল্লি, ৬ ডিসেম্বর – ২০২০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। দ্বিতীয় স্থান বিহারের । মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানেও গত তিন বছরে খুনের ঘটনার জন্য সবচেয়ে বেশি এফআইআর দায়ের হয়েছে। কেবলমাত্র ২০২২ সালেই দেশে ২৮ হাজার ৫২২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো তাদের ২০২২ সালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে , গত বছর সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ৫২২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিদিন গড়ে ৭৮টি খুনের ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ৩টির বেশি হত্যাকাণ্ড হয় দেশে।
এনসিআরবির রিপোর্ট বলছে, এর পিছনেঅনেক রকম কারণ আছে। মহিলা ও শিশুদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে, পণের জন্য খুন বেড়েছে, স্বামী-স্ত্রীয়ের ঝগড়া, পরকীয়ার ঘটনা রয়েছে। প্রেম ঘটিত বিবাদের জন্য খুনের ঘটনা বেড়েছে। এছাড়াও জাতপাত নিয়ে বিরোধ, দলিতদের উপর নির্যাতন, রাজনৈতিক কারণে খুন, ধর্ষণের পরে খুন এবং সর্বোপরি হল নরবলি। চলতি বছরেও দক্ষিণ ভারতে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। নরবলির হাত থেকে রেহাই পায়নি শিশুরাও।
কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী , ২০২১ সালে ভারতে মোট ২৯ হাজার ২৭২টি খুনের ঘটনা ঘটে। ২০২০ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ১৯৩।গত বছরের মোট অপরাধের মধ্যে রাজনৈতিক হিংসা ও বিরোধের জেরে খুন হয়েছিল ৯ হাজার ৯৬২। রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে ভারতে সামগ্রিক ভাবে অপরাধের সংখ্যা কমেছিল। কিন্তু মহিলাদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছিল। গার্হস্থ্য হিংসার বলি হয়েছিল অনেক বেশি । বিশেষ করে লকডাউনের সময় গার্হস্থ্য হিংসার কারণে খুনের ঘটনা বেড়ে যায় ।
খুনের অপরাধে রাজ্যভিত্তিক একটি রিপোর্টও প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো। । ২০২২ সালে দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে যোগী রাজ্যে। সর্বাধিক ৩ হাজার ৪৯১ জন খুন হয়। এরপরেই রয়েছে বিহার। সেখানে ২ হাজার ৯৩০ টি খুনের ঘটনা ঘটে। দিল্লিতেও খুন বেড়েছে। সেই সঙ্গেই ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনা বেড়েছে। ২০২২ সালেই ২৯৪টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে দিল্লিতে। শিশুদের অপহরণ করে খুনের ঘটনাও বেড়েছে।
উদ্বেগের বিষয় হল, শিশুদের উপর অপরাধের ঘটনাও বাড়ছে । কেন্দ্রীয় সংস্থার তথ্য বলছে, দেশে গত কয়েক বছরে শিশু ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ভয়ঙ্করভাবে বেড়েছে দেশে। এমনকী কয়েকমাসের শিশুও রেহাই পায়নি। তাছাড়া তফসিলি জাতি ও উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় শিশু নির্যাতনের বহু অভিযোগ দায়ের হয়েছে।