• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বাতিল হল জোট বৈঠক, বুধবার ঘরোয়া বৈঠকে কংগ্রেস 

দিল্লি, ৫ ডিসেম্বর – ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে বলে জানিয়ে দিল কংগ্রেস। বুধবার এই জোটের সদস্যদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে থাকতে পারবেন না জানিয়ে দেওয়ায়, আপাতত বৈঠক স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে পিছু হটেও পিছু হটল না কংগ্রেস। তবে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির সংসদীয়

দিল্লি, ৫ ডিসেম্বর – ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে বলে জানিয়ে দিল কংগ্রেস। বুধবার এই জোটের সদস্যদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে থাকতে পারবেন না জানিয়ে দেওয়ায়, আপাতত বৈঠক স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে পিছু হটেও পিছু হটল না কংগ্রেস। তবে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির সংসদীয় নেতাদের নিয়ে ঘরোয়া একটি বৈঠক করতে চায় কংগ্রেস। কিন্তু তা ‘ইন্ডিয়া’র নামে নয়।

মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ের পরপরই ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের নিয়ে বৈঠক ডাকে কংগ্রেস। দলের শোচনীয় ফলে লোকসভা নির্বাচনের রণনীতি ঠিক করতেই ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক ডেকেছিল কংগ্রেস। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ওই বৈঠকে তিনি হাজির থাকতে পারবেন না। উত্তরবঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, একই কারণে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সূত্রের খবর, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং সপা-র প্রধান অখিলেশ যাদবও ওই বৈঠকে থাকতে পারবেন না।  এমনকী, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেনও কংগ্রেসের ডাকা ওই বৈঠকে থাকতে পারবেন না বলে খড়্গেকে জানিয়ে দেন ।সূত্রের খবর, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনেরও এই বৈঠকে না থাকার  পারবেন না সম্ভাবনা তামিলনাড়ুতে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের কারণে। ফলে একের পর এক শীর্ষ নেতারা বৈঠকে না থাকার সম্ভাবনা প্রবল হওয়ায় বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক ডেকেও তা বাতিল করতে হয়। ফলে ৬ ডিসেম্বর ‘ইন্ডিয়া’র নামে ডাকা বৈঠক স্থগিত করতে একপ্রকার ‘বাধ্য’ হয় কংগ্রেস। তবে সেই বুধবারেই ঘরোয়া বৈঠকটি করতে চান কংগ্রেস নেতৃত্ব। 
এদিকে আগামী ১৭ ডিসেম্বর বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র পরবর্তী বৈঠক হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক আরজেডির প্রধান তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে জোটের বৈঠক নিয়ে তৃণমূল-সহ কয়েকটি শরিক দলের সঙ্গে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ পাওয়ার পর লালুর এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। জটিল পরিস্থিতিতে বিজেপি বিরোধী জোট রক্ষায় সক্রিয় হন লালু।

তিন রাজ্যে কংগ্রেসের হার নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে জোটের শরিকদের মধ্যে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে কী উপায়ে বিজেপিকে রুখে দেওয়া যায়,  সেই রণকৌশল নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে শরিক দলগুলির ‘মতপার্থক্য’ প্রকাশ্যে আসে। সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে চার রাজ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির অসন্তোষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিজেপি বিরোধী ছোট দল, কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হওয়া দল, বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদেরও ভোটের ময়দানে কোনও জায়গা দিতে চায়নি কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, কংগ্রেসের এই মনোভাব শরিক দলগুলির সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বাড়াচ্ছে।

যেমন, মধ্যপ্রদেশের ৬টি আসন চেয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়া’র শরিক সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ। কিন্তু সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত তা দিতে রাজি হননি রাহুল গান্ধিরা । পরে পাল্টা ৭১ আসনে প্রার্থী দেন অখিলেশ। শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, হিন্দি বলয়ের অন্য দুই রাজ্য ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানে কংগ্রেসের ভরাডুবির ‘কারণ’ হিসাবেও উঠে এসেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, সাংগঠনিক দুর্বলতা,  এবং  ‘একলা চলো’ প্রবণতা।

চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বিরোধীরা এক ছাতার তলায় আসে। বিরোধী জোটের নাম দেওয়া হয় ‘ইন্ডিয়া’। জোট তৈরি হওয়ার পর কয়েকবার বৈঠকেও বসেন বিরোধীরা। নানা ইস্যুতে বিজেপি বিরোধী সুর চড়াতে শুরু করেছিলেন তাঁরা।  কিন্তু ৩ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের পর হাত শিবিরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জোট শরিকেরা। জোট শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে লড়াই করে কংগ্রেস যে ‘একলা চলো’-র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং সেটা যে সম্পূর্ণ ভুল ছিল, তা রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট।  একইভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলার সময় কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আপ ও জেডিইউ। একই সুর শোনা যায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। আঞ্চলিক দলের সঙ্গে কংগ্রেস আসন-সমঝোতায় গেলে ফল অন্যরকম হত বলে দাবি মমতার। সবমিলিয়ে, অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। তিন রাজ্যে কংগ্রেসের শোচনীয় হারের পরে কি এবার বিরোধী-জোটে কংগ্রেসের ধার কমছে, এমন প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। তাই পরিস্থিতি বুঝেই কংগ্রেস বৈঠক স্থগিত করে  দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।