ইম্ফল, ২৪ নভেম্বর– মায়ানমার গৃহযুদ্ধের প্রবাবে ক্ষতিগ্রস্ত ইম্ফলের হাসপাতাল৷ বৃহস্পতিবার রাতে মণিপুরের একমাত্র সুপার স্পেশ্যালিটি চিকিৎসা কেন্দ্রে স্থানীয় মানুষ হামলা চালিয়েছে৷ জওহরলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস নামে ভারত সরকারের ওই হাসপাতালটি এদিন রাতে কয়েক হাজার মানুষ হাজির হয়৷ গেটের বাইরে আটকে পডে় হাসপাতালে আসা অ্যাম্বুলেন্স, আটকে পডে়ন রোগীর পরিজন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ পরিস্থিতি এমন পর্যায় পেঁৗছায় পুলিশকে লাঠিচার্জ শুরু করতে হয়৷ টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে হয় পুলিশকে৷
পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, পুলিশ সেখানে পড়শি দেশ মায়ানমারের এক গুলিবিদ্ধ নাগরিককে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছিল৷ হাসপাতালে আনার কিছু পরেই তিনি মারা যান৷ এরপর রটে যায়, পুলিশ এক কুকি জঙ্গিকে সেখানে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছে৷ মেইতেইরা দাবি করে কুকি জঙ্গির চিকিৎসা করা যাবে না৷ আর তাই নিয়ে মেইতেই সম্প্রদায়ের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্ত্বর৷ মেইতেই সম্প্রদায়ের লোকজনের দাবি, কুকি জঙ্গির চিকিৎসা করানো যাবে না ইম্ফলের হাসপাতালে৷ প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকা মূলত মেইতেইদের দখলে৷ সেখানে কুকিরা খুবই সংখ্যালঘু৷ ৩ মে জাতিদাঙ্গা শুরুর পর থেকে মেইতেইদের হামলার মুখে কুকিরা রাজধানী শহর ছেডে় পালায়৷
আসলে মায়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধে সেনার গুলিতে ওই ব্যক্তি আহত হন৷ মায়ারমানে গত দেড় মাস যাবৎ সেনার সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর যৌথ কমান্ডের লড়াই চলছে৷ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন বিদ্রোহীদের দখলে৷ তাদের হামলার মুখে অসহায় মায়ানমার সেনার বেশ কয়েকজন মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছে৷ আশ্রয় নিয়েছে সাধারণ নাগরিকেরাও৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের খবর, মায়ানমার অন্তত চার ভাগ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ তিনটি জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব সেনা নিজ নিজ এলাকা দখল করে নিয়েছে৷ মায়ানমার সেনা বারে বারে পাল্টা আক্রমণ চালিয়েও হারানো এলাকা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি৷
বিঘ্ন ঘটে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্মে৷ ঘটনাচক্রে মায়ানমারের ওই নাগরিকের সঙ্গে মণিপুরের কুকি জো সম্প্রদায়ের জাতিগত মিল রয়েছে৷ এই কারণেও রটে যায়, আহত ব্যক্তি কুকি জঙ্গি৷