মঙ্গলবার রাতে দিল্লির মাটিতে পা রেখেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও । বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে বৈঠকে করেন তিনি। দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দেন পম্পেও।
ভারত ও আমেরিকা এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। ‘জি ২০ সম্মেলন’-এ ভারত ও আমেরিকার পার্শ্ববৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। আমেরিকা ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়াবার পর ভারতও আমেরিকার পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক চাপায়, তাতে দুই দেশের মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্কের উত্তাপ বাড়ায়।
কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিন বিদেশ সচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক ইতিবাচক এবং মােদি-ট্রাম্পের বৈঠক তারই প্রস্তুতি হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমার এদিন সকালে টুইট করে বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ছাড়াও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে মাইক পম্পেওর।
আলােচনায় উঠে আসার কথা সন্ত্রাসবাদ, এইচ-১ ভিসা, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অস্ত্র কেনাবেচার প্রসঙ্গ। এছাড়াও ইরান থেকে তেল আমদানির বিষয়ে কথা হতে পারে। মাইক পম্পেওর সফর উপলক্ষ্যে বুধবার দুপুরে সৌজন্য ভােজের ব্যবস্থা করেছে বিদেশমন্ত্রক। সেখানেই আলােচনা হয় দুই দেশের নেতার।
ইতিবাচক মনােভাব নিয়ে দুই দেশ আলােচনায় বসবে বলে বৈঠকের আগে জানান মাইক পম্পেও। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও এই বৈঠককে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি জানান, দুই দেশের বাণিজ্য সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে আলােচনায়। তবে দেশের স্বার্থ কোনওভাবেই যাতে ক্ষুন্ন না হয়, সেদিকে নজর রাখবে বিদেশ মন্ত্রক।
জানা গিয়েছে, ট্রাম্পের একাধিক নিষেধাজ্ঞায় প্রভাব পড়েছে ভারতে। ইরান থেকে তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরাসরি প্রভাব পড়েছে এদেশে। রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। আর রাশিয়া থেকে বরাবরই অস্ত্র আমদানি করে থাকে ভারত। তাই এই সফরে যে বৈঠক হবে, তাতে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলবে দুই দেশ।
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা যখন ভারতে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করছে সেই সময় মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে মুখ খুললেন। প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাধীন ধর্মাচরণ নিয়েও সওয়াল করলেন পম্পেও।
জি ২০ সম্মেলনে যােগ দেওয়ার কথা রয়েছে মাইক পম্পেওর। জাপানের ওসাকায় জুন মাসের ২৮-২৯ তারিখে এই সম্মেলন হবে। এই প্রথমবার জাপানে বসছে জি ২০ সম্মেলনের আসর। এই সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসতে পারেন পম্পেও।
উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলােচনা হতে পারে দুই দেশের। এক যােগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান উত্তর কোরিয়াকে এই ইস্যুতে ফের অনুরােধ জানাতে পারে। এই সম্মেলনের দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সাথে বৈঠকে বসতে পারেন পম্পেও।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ইরান, রাশিয়া বা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কোনও ধরনের অস্ত্র বা ক্ষেপনাস্ত্র কেনার বিষয়ে আলােচন থেকে বিরত থাকে ভারত। এই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। তবে সেই নিষেধাজ্ঞার ফাঁক পেরিয়ে ভারত কীভাবে নিজের স্বার্থ মেলে ধরতে পারে, সেদিকেই নজর থাকবে।