দিল্লি, ১৩ নভেম্বর – ভারতের জাতীয় সংহতি রক্ষা করতে মণিপুরের নয়টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বলা হয় , ভারতে জাতীয় সংহতি এবং অখণ্ডতা রক্ষার জন্য এই সংগঠনগুলির কাজকর্ম বিপজ্জনক । তাই পাঁচ বছরের জন্য এই সংগঠনগুলিকে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল।
সোমবার যে সাতটি সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় , সেই সাতটি সংগঠনই সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের তৈরি। মণিপুরের রাজনৈতিক সমীকরণ অনুযায়ী হিন্দু মেইতেইরা শাসক দল বিজেপির ঘনিষ্ঠ। মণিপুরে অশান্তির ঘটনাবলীতেও, পরিসংখ্যানের দিক থেকে মেই তেইদের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে বেশি। কুকি সম্প্রদায়ের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং নিজে মেইতেই বলে সংখ্যাগরিষ্ঠের অপরাধ সম্পর্কে নীরব। এই অভিযোগ জোরদার হয় দুই কুকি মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর। ঘটনার তিন মাস পরেও রাজ্য পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি অপরাধীদের বিরুদ্ধে। পরে দেশ জুড়ে কঠোর সমালোচনার জেরে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয় ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক উল্লিখিত এই আইনে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের হয়ে কাজ করাই শুধু অপরাধ নয়, এই সব সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগাযোগ রাখার জন্যও পুলিশ বা আধা সেনা গ্রেফতার করতে পারে। মণিপুরে বর্তমানে রাজ্য পুলিশ ছাড়াও সেনা এবং আধা সেনা মোতায়েন আছে। তারপরও গত ৩ মে থেকে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়নি।
ভারত সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলি হল, দ্য পিপলস লিবারেশন আর্মি এবং তাদের রাজনৈতিক দল দ্য রেভ্যুলিউশনারি পিপলস ফ্রন্ট, দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট এবং তাদের সমর সংগঠন মণিপুপ পিপলস আর্মি, পিপলস রেভ্যুলিউশনারি পার্টি অফ কিংলেইপাক এবং তাদের সমর সংগঠন রেড আর্মি, দ্য কিংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি প্রমুখ ।
সম্প্রতি মণিপুরে বড় ধরনের সংঘর্ষ না ঘটলেও বিক্ষিপ্ত হামলা, হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। মে মাস থেকে লাগাতার সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে রাজ্য সরকারের সুপারিশ মতো কেন্দ্র কুকি জনজাতির বেশ কিছু সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে। এবার ইম্ফল উপত্যকায় সক্রিয় মেই তেই সম্প্রদায়ের স্বার্থে লড়াই করা সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ।