• facebook
  • twitter
Sunday, 24 November, 2024

মাত্র ৩৫ জনের একটি বুথ, সকলেই এক পরিবারের

জয়পুর, ১০ নভেম্বর– রাজস্থানে বিধানসভা ভোটে জোর টক্কর হচ্ছে কংগ্রেস ও বিজেপির৷ দুই দলেরই শীর্ষ নেতারা সকাল-বিকাল দিল্লি-রাজস্থান সফরে ব্যস্ত৷ সব দলের কাছেই পাখির চোখ এই রাজস্থানে এবার পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত ‘বাদমের কা পাড়’ গ্রামে এবারই প্রথম ভোট গ্রহণের বুথ চালু করছে নির্বাচন কমিশন৷ এতদিন গ্রামের সবচেয়ে কাছের বুথটির দূরত্ব ছিল কুডি় কিলোমিটার৷ উটের পিঠে

জয়পুর, ১০ নভেম্বর– রাজস্থানে বিধানসভা ভোটে জোর টক্কর হচ্ছে কংগ্রেস ও বিজেপির৷ দুই দলেরই শীর্ষ নেতারা সকাল-বিকাল দিল্লি-রাজস্থান সফরে ব্যস্ত৷ সব দলের কাছেই পাখির চোখ এই রাজস্থানে এবার পাকিস্তান সীমান্তে অবস্থিত ‘বাদমের কা পাড়’ গ্রামে এবারই প্রথম ভোট গ্রহণের বুথ চালু করছে নির্বাচন কমিশন৷ এতদিন গ্রামের সবচেয়ে কাছের বুথটির দূরত্ব ছিল কুডি় কিলোমিটার৷ উটের পিঠে চেপে কতিপয় গ্রামবাসী ভোট দিতে যেতেন৷ মহিলা এবং বয়স্ক ভোটাররা বেশিরভাগই বুথমুখী হতেন না৷ স্বাধীনতার ৭৬ বছর পর এবার নিজের গ্রামে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন তারা৷ নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক সমীক্ষার পর দু’দিন আগে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে৷
ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থায় অনেক গলদের মধ্যে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার এমন অনেক অভিনব দৃষ্টান্তও আছে যা শুনলে চলকে উঠতে হয়৷ যেমন এখানে প্রথমবার ভোটের সুযোগ পাওয়া যেমন চমকে দেওয়ার বিষয় তেমনই আবার আরও উল্লেখযোগ্য হল, গ্রামটির বাসিন্দা মাত্র ৩৫জন এবং তারা সকলেই লতায়পাতায় একই পরিবারের সদস্য৷ কমিশনের কাছে তারা সকলে মিলে আবেদন করেছিলেন, এবার থেকে গ্রামেই বুথের ব্যবস্থা করা হোক৷ সেই আর্জি রেখেছে কমিশন৷ নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত অবশ্য নতুন নয়৷ উত্তর ভারতের পাহাডি় এলাকায় দুর্গম পথ ধরে যেতে হয় ভোটকর্মীদের৷ পাহাডে়র কোলে থাকা বুথগুলিতে ভোটার সংখ্যা কোথাও কোথাও দশ-পনেরো জন মাত্র৷ বর্তমান মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার রাজীব কুমার একজন দক্ষ পর্বতারোহী৷ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হওয়ার পর তিনি হিমাচল প্রদেশের দুর্গম পাহাডে়র মাথায় অবস্থিত একটি বুথে হেঁটে পৌঁছেছিলেন৷
প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি তাঁর ‘অ্যান আনডকুমেন্টেড ওয়ান্ডার¬: দ্য মেকিং অফ দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান ইলেকশন’ বইয়ে লিখেছেন, কেরলের দুর্গম পাহাডে়র মাথায় একটি গ্রামে মাত্র একজন ভোটারের জন্য তিনি বুথের ব্যবস্থা করেছিলেন৷ কারণ, একটি জল বিদু্যৎ প্রকল্পের জন্য সরকার গ্রামের বাসিন্দাদের অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে৷ কিন্ত্ত বেঁকে বসেন এক বৃদ্ধ৷ তিনি ঘোষণা করেন, কোনও অবস্থাতেই গ্রাম ছাড়বেন না৷ ভোটের সময় তাঁকে বলা হয়েছিল পাশের গ্রামের বুথে গিয়ে ভোট দিতে৷ তিনি সেই প্রস্তাবেও রাজি হননি৷ প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন আগের মতো গ্রামের বুথেই ভোট দিতে চান৷ কমিশন তাঁর আর্জি রক্ষা করে৷ একজন নাগরিকের ভোট গ্রহণের জন্য দুর্গম পথ পেরিয়ে আগের রাতে তিন ভোটকর্মী এবং একজন পুলিশ কনস্টেবল গ্রামে পৌঁছে গিয়ে তাবু খাটিয়ে বুথ তৈরি করেন৷