• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ-বিধায়কদের নির্বাচনে লড়া নিয়ে শীর্ষ আদালতের নির্দেশিকা

দিল্লি, ৯ নভেম্বর – ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ-বিধায়কদের আজীবন নির্বাচনে লড়ার উপর নিষেধাজ্ঞার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল৷ তবে এই আর্জি নিয়ে জনস্বার্থ মামলায় কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট৷ শীর্ষ আদালতের তরফে এ দিন বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের তরফে এই বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করা সম্ভব নয়৷ তবে এই ধরনের মামলাগুলির দ্রুত

দিল্লি, ৯ নভেম্বর – ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ-বিধায়কদের আজীবন নির্বাচনে লড়ার উপর নিষেধাজ্ঞার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল৷ তবে এই আর্জি নিয়ে জনস্বার্থ মামলায় কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট৷ শীর্ষ আদালতের তরফে এ দিন বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের তরফে এই বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করা সম্ভব নয়৷ তবে এই ধরনের মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টগুলিকে নানা সুপারিশ দেওয়া হয়েছে৷
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ছিল ফৌজদারি মামলায় দোষী রাজনীতিবিদদের নির্বাচনে লড়ার অধিকার বাতিল সংক্রান্ত মামলার৷ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়৷
২০১৬ সালে অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় নামক এক ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত সাংসদ-বিধায়কদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া থেকে আজীবন লড়ার অধিকার বাতিল করার আবেদন জানিয়ে৷ তাঁর দাবি ছিল, জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ-বিধায়করা সাজা পূরণের পর ৬ বছর নির্বাচনে লড়তে পারেন না৷ এই নিষেধাজ্ঞা ৬ বছরের পরিবর্তে আজীবন করে দেওয়া হোক৷ এদিন শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ-বিধায়কদের আজীবন নির্বাচন থেকে নির্বাসিত করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া সম্ভব নয়৷
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “শীর্ষ আদালতের তরফে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করা সম্ভব নয়৷ বিষয়টি হাইকোর্ট দেখছে৷”সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, প্রয়োজনে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিরা স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করতে পারেন৷ স্পেশাল বেঞ্চে এই মামলাগুলির শুনানি হতে পারে৷ যে মামলাগুলিতে সাংসদ বা বিধায়কদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃতু্যদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে এবং যে মামলাগুলিতে দোষী সাব্যস্ত হলে সাজার মেয়াদ পাঁচ বছর বা তার বেশি হবে, সেই সমস্ত মামলাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে৷ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য স্পেশাল বেঞ্চ গঠন করতে পারে হাইকোর্ট৷ স্পেশাল বেঞ্চ এ ধরনের মামলাকে ‘রেগুলার ম্যাটার’ হিসেবে নথিভুক্ত করে দ্রুত শুনানি করতে পারে৷ পাশাপাশি যে মামলাগুলিতে স্থগিতাদেশ দেওয় হয়েছে, সেগুলির দ্রুত শুনানির জন্য নথিভুক্ত করতে পারেন৷ এক্ষেত্রে প্রিন্সিপাল জেলা জজ এ ধরনের মামলার দ্রুত শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো সুনিশ্চিত করবেন৷শীর্ষ আদালতের তরফে হাইকোর্টগুলিকে আরও বলা হয়, সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে কত কেস চলছে এবং সেই মামলাগুলির বর্তমান অবস্থা কী, এ বিষয়ে ওয়েবসাইটে আলাদা ট্যাব তৈরি করবে হাইকোর্ট৷ তবে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের অন্যান্য দিক সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীনই থাকছে৷

আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই নেতা-মন্ত্রীরা৷ তাঁরা কোনও গুরুতর অপরাধ করলে সাজা দেওয়া হয় আইনের নিয়ম মেনেই৷ কিন্ত্ত সাজা খাটার পরও রাজনৈতিক প্রভাব বা প্রতিপত্তি কমে না তাঁদের৷
জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে ১৯৫১-এর ৮(৩) ধারা অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধে কোনও বিধায়ক বা সাংসদ যদি দুই বছর বা তার  বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়, তবে ওই রাজনীতিবিদ জনপ্রতিনিধিত্ব খোয়াবেন৷ সাজা ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকার কেডে় নেওয়া হয়৷ সাজার মেয়াদ পূরণের পরও, পরবর্তী ছয় বছর পর্যন্ত কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না ওই রাজনীতিবিদ৷

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি মোদি পদবি নিয়ে মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছরের সাজা পাওয়ায়, পরেরদিনই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল৷ পরে অবশ্য শীর্ষ আদালত সাজায় স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাংসদ পদ ফিরে পান৷