শান্তিনিকেতন, ৩১ অক্টোবর – শান্তিনিকেতন থানায় প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ দায়ের করলেন বিশ্ব ভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।তৃণমূলের অবস্থান মঞ্চ থেকে উপাচার্যকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই মর্মে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ইমেল মারফত উপাচার্য থানায় এই নালিশ জানিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও এর পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, উপাচার্য অভিযোগ জানিয়েছেন, অবস্থান মঞ্চ থেকে তাঁকে বীরভূম থেকে বার করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। কেউ আবার তাঁকে শ্মশানে পাঠানোর হুমকিও দিচ্ছেন। বিদ্যুতের দাবি, প্রাণের ভয়ে দিন কাটছে তাঁর। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আর্জি জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন উপাচার্য। যদিও একে স্রেফ শিরোনামে আসার প্রচেষ্টা বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের।
বিশ্বভারতীর পড়ুয়া তৃণমূলের ছাত্র নেতা জামশেদ আলি খান এবং বিশ্বভারতীর কর্মী সংগঠনের নেতা গগন সরকার এই নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন উপাচার্যকে। জামশেদ বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসের অনেকটা দূরে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। বাউল গান, রবীন্দ্র সংগীত, বক্তৃতা হচ্ছে। উপাচার্যের পাঁচ বছরের নানা কীর্তিকলাপও তুলে ধরছেন বক্তারা। আর তাতেই বিপদে পড়েছেন উপাচার্য। তাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে নতুন নাটক করতে চাইছেন।’’ গগন বলেন, ‘‘আশ্চর্যের ব্যাপার হল, আমাদের আন্দোলন নিয়ে তিনি চিন্তিত। কিন্তু কলঙ্কিত ফলক বদল কবে হবে, তার কোনও জবাব উপাচার্যের কাছে নেই। আসলে, খবরের শিরোনামে আসতেই তিনি এসব অভিযোগ করছেন, সেটা পরিষ্কার।’’
স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান প্রতিবাদ করছি। উনি নিজের ভুল ঢাকতে এখন অনেক কিছুই করবেন, বলবেন। ফলক বদলে দিলেই তো আর কোনও সমস্যা থাকার কথা নয়। সেটা কেন করছেন না ? এ ভাবে সহানুভূতি আদায় করা যায় না।’’
ইউনেসকোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কিছু পাথরের ফলক বসানো হয়। সেই ফলকে লেখা বয়ান নিয়ে বিতর্কের শুরু। তাতে আচার্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম থাকলেও ছিল না স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে দলকে রবীন্দ্রনাথের ছবি বুকে ঝুলিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের নির্দেশ দেন।সেই নির্দেশ মেনে বিশ্বভারতীর কবিগুরু মার্কেটের কাছে অবস্থানমঞ্চ গড়ে গত পাঁচ দিন ধরে কর্মসূচি চলছে। সেই মঞ্চ থেকেই প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উপাচার্যের ।