আলিগড়, ৩১ অক্টোবর – ঋণের টাকা শোধ করতে লে বিক্রি আছে। ছেলেকে বিক্রি করার জন্য রাস্তায় বসলেন বাবা। ফুটপাথে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বসে আছেন বাবা। প্ল্যাকার্ডে হিন্দিতে যা লেখা রয়েছে তার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘‘ছেলে বিক্রি আছে। আমি আমার ছেলেকে বিক্রি করতে চাই।’’ এই ছবি ভাইরাল হতেই তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। হৃদয়বিদারক এই ঘটনা ঘটে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে।
উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে ঋণের টাকা শোধ করতে ছেলেকে বিক্রি করার জন্য রাস্তায় বসলেন বাবা। এক চিলতে জমি কেনার জন্য ঋণ করেছিলেন।কিন্তু সেই ঋণের বোঝাই গলায় ফাঁস হয়ে বসেছে হতদরিদ্র বাবার। ফলে নিরুপায় হয়ে ফুটপাথে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বাবা বসেছেন ছেলেকে বিক্রি করার জন্য। আলিগড়ের ই-রিক্সা চালক রাজকুমার। দারিদ্রের সঙ্গে নিত্য সংগ্রাম করে তাঁকে বেঁচে থাকতে হয়। ই-রিক্সাই তাঁর রোজগারের একমাত্র পথ। রিক্সা চালক রাজকুমার নিজের ছেলেকে বিক্রি করতে ফুটপাথে বসেছেন। ৫ লক্ষ দাম পেলেও ছেলেকে বিক্রি করতে রাজি রাজকুমার।
সূত্রের খবর, জমি কেনার জন্য স্থানীয় মহাজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করেছিলেন রাজকুমার। কিন্তু অভিযোগ, ওই মহাজন এমন জালে তাঁকে জড়িয়ে দেন, রাজকুমার জমি কিনতে পারেননি। ঋণ করা টাকাও নষ্ট হয়। এরপর ঋণের ভারে কোণঠাসা হয়ে পড়েন রাজকুমার। অন্য দিকে, মহাজন টাকা ফেরত পেতে অত্যাচার শুরু করেন। রাজকুমারের অভিযোগ, বেশ কয়েকবার তাঁর পরিবারকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। এমনকি টাকা না পেয়ে রাজকুমারের ই-রিক্সাটিও মহাজন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সব হারিয়ে অসহায় হয়ে তিনি স্থির করেন, নিজের ছেলেকে বিক্রি করে দেবেন। সেইমতো প্ল্যাকার্ড লিখে ফুটপাথে বসেন স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ।
এক সংবাদমাধ্যমে রাজকুমার বলেন, ‘‘টাকা ফেরত চেয়ে মহাজন প্রায়ই আমার ছেলেমেয়ের সামনে আমাকে মারধর করতেন। বাড়ি থেকে আমাদের বাইরে বার করে দিয়েছেন বহুবার । আমার উপার্জনের একমাত্র সম্বল রিক্সাটিকেও তিনি হস্তগত করেছেন। থানায় গেলেও সুরাহা হয় না। আমার এফআইআর-ও নেয়নি পুলিশ।’’ রাজকুমারের দাবি, তিনি তাঁর ঋণের ছ’হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাকি টাকাও ফেরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু মহাজনের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই ছেলেকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এই দৃশ্য সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতেই রাজনীতির রং লাগে। বিষয়টিকে প্রকৃত অমৃতকালের সঙ্গে তুলনা করে নিজের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব। এর পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত মহাজনকে । সূত্রের খবর, ছেলে নিয়ে ঘরে ফিরেছেন রাজকুমার।